Wednesday, February 12

কানাইঘাটে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবিতে ইউএনও বরাবর স্বারকলিপি প্রদান


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:

কানাইঘাটের গাছবাড়ি বাজারের সরকারি পুকুরপার দখল করে বসবাসরত বাবুলাল ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অসামাজিক কর্মকাণ্ডসহ মাদক ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। তাদের উচ্ছেদ করে এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব করার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং জনপ্রতিনিধিগণ।


মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।


স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গাছবাড়ি বাজারের পরিত্যাক্ত সরকারি পুকুরের পাড় দখল করে অবৈধভাবে বসোবাস করছে বাবুলাল, সাবিয়া ও লেটু নামক তিন ব্যাক্তি। তারা সেখানে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা, মদ গাজা ও হেরোইনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। জায়গাটিকে তারা মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। তাছাড়া বাবুলাল তার পরিবারের মহিলা সদস্যদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করাচ্ছে বলেও অবগত এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ। বিষয়টি অনেকটা অপেন সিক্রেট। এদিকে এই পুকুরের আশপাশে দেড়শ' বছরের পুরানো জামিউল উলুম কামিল মাদরাসা, গাছবাড়ি আইডিয়াল কলেজ, পাবলিক স্কুল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ অন্তত ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্টানের অনেক শিক্ষার্থী নেশাসক্ত হয়ে পড়েছে। তারা দিনদিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। এসব অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আগে দুইবার উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে সবাইকে উচ্ছেদ করে। এরমধ্যে বাবুলালের ছেলে কৃঞ্ষ দাসকে এক মাসের কারাদণ্ডও দেয়া হয়েছিল। কারাবাস শেষে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগীতায় আবারও তারা পুকুর পাড় দখল করে বসোবাস শুরু করে। সেই সাথে মাদক ও পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। গাছবাড়ি বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ প্রতিবেশী ঝিঙ্গাবাড়ি ও দক্ষিন বাণীগ্রাম ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা বারবার চেষ্টা করেও তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ অবস্থায় তারা বাবুলালসহ অবৈধ দখলদার, মাদক ও পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িত সবাইকে উচ্ছেদ করে এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সার্বিক পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান।


স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন, ঝিঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর, দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুকমান উদ্দিন, গাছবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হামিদ উদ্দিন সালিক ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাসির, গাছবাড়ি বাজার জামিউল উলুম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. তাহির উদ্দিন, দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ২নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সোলেমান আহমদ, গাছবাড়ি বাজার মডার্ন একাডেমির প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুর রহমান, গাছবাড়ি আইডিয়াল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মঈন উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।


এদিকে গাছবাড়ি বাজারের অপর একটি সূত্র জানায়, বাবুলালের ছেলে কৃঞ্ষ দাস এসব অপকর্মের মূল হোতা। তুচ্ছ কারণে মামলাবাজীতে সে সিদ্ধহস্ত। তার সাজানো মামলায় এলাকার অনেকেই দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। একসময় সে গ্রাম পুলিশের সদস্য ছিল। এই পরিচিতি ও সংখ্যালঘু ইস্যু কাজে লাগিয়ে সে মানুষকে নানাভাবে নাজেহাল করে।


এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে বাবুলালের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কৃঞ্ষ দাস তার পরিচয় গোপন করে বাবুলাল সেজে প্রথমে অভিযোগ শোনে।


এরপর সে জানতে চায়, নম্বর কোথায় পেলেন? এসব বিষয় সামলাতে পারবেন? এরপর জানায় সে বাবুলাল নয়, তার ছেলে। তার আরও অনেক উপরওয়ালা আছেন।


বাবুলালকে ফোন দিতে বললে সে আরও নানা কেচ্ছা- কাহিনী অবতারনার চেষ্টা করে। এরপর একাধিকবার কল দিয়ে এই প্রতিবেদকের সাথে দেখা করারও প্রস্তাব দেয়। রাজি না হলে সে ব্যাঙ বিদ্রুপ অশ্লিল ও আজেবাজে শব্দ ব্যবহার করে।


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়