Sunday, January 5

কানাইঘাটে ৬০ বছরের বৃদ্ধ ৬ দিন ধরে নিখোঁজ

 


নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার খাসারিপাড়া খাইরুন নেছা টাইটেল মহিলা মাদ্রাসার পরিচ্ছন্নকর্মী কানাইঘাট সাতবাঁক ইউপির পশ্চিম জুলাই (দলইমাটি) গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল খালিক (৬০) ৬ দিন ধরে নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারে চলছে কান্নার আহাজারি। নিখোঁজ আব্দুল খালিকের স্বজনরা জানিয়েছেন মাদ্রাসার শিক্ষকদের অভ্যন্তরীন বিরোধের কারনে তাকে নিখোঁজ অথবা গুম করে রাখা হয়েছে।

 

বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য সাতবাঁক ইউপির চেয়ারম্যান আবু তায়্যিব শামীম সহ স্থানীয় লোকজন সিলেটের উর্ধ্বতন পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

নিখোঁজের স্বজনরা জানান, বছর খানেক থেকে আব্দুল খালিক বিয়ানীবাজারের খাসারিপাড়া খাইরুন নেছা টাইটেল মহিলা মাদ্রাসায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ সহ মাদ্রাসার শিক্ষকদের দৈনন্দিন অকে কাজ করতেন এবং মাদ্রাসায় থাকতেন। আব্দুল খালিকের স্ত্র গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে তার মেয়ে আসমা বেগম মাদ্রাসার একজন শিক্ষকের কাছে ফোন দিয়ে তার পিতাকে বাড়িতে আসতে বলেন।

 

তখন ঐ শিক্ষক জানান, বিকেলে তাকে আদ্রাসা থেকে ছুটি দেয়া হয়েছে। কিন্তু ৩১ ডিসেম্ব রাতে আব্দুল খালিক বাড়িতে ফিরে না আসলে তার মেয়ে পুণরায় ১ জানুয়ারী মাদরাসার আরো একজন শিক্ষককে ফোন দিয়ে তার পিতা বাড়িতে ফিরেননি বলে জানানলে ঐ শিক্ষক বলেন, ৩১ ডিসেম্বর আব্দুল খালিক মাদ্রাসা থেকে ছুটি নিয়ে চলে গেছেন। বৃদ্ধ আব্দুল খালিক বাড়িতে ফিরে না আসায় তার পরিবারের লোকজন বিয়ানীবাজার উপজেলা সহ সকল আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করলে মাদ্রাসার মুহতমিম সহ শিক্ষকরা একেক সময় একেক কথা বলেন। এতে তাদের সন্দেহ হলে ৩১ জানুয়ারী রাতে আব্দুল খালিকের নিখোঁজের বিষয়টি তার পরিবারের লোকজন বিয়ানীবাজার থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে থানা পুলিশ মাদ্রাসা পরিদর্শন করে শিক্ষক সহ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন এবং থানায় নিখোঁজ ডায়রী করা হলেও নিখোঁজের ৬দিন পেরিয়ে গেলেও আব্দুল খালিকের কোন সন্ধান অদ্যবধি পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

 

সরেজমিনে রোববার (০৫ জানুয়ারি) নিখোঁজ হত দরিদ্র আব্দুল খালিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করছেন। আব্দুল খালিকের ৫ মেয়ে ও ১ ছেলে ও অসুস্থ স্ত্রী তার স্বামীকে ফিরে পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।

 

নিখোঁজের ছেলে আব্দুল লতিফ, শ্যালক আলী আহমদ, মেয়ে আসমা বেগম সহ আরো অনেকে বলেন, মাদ্রাসার মুহতমিম এর সাথে বিরোধের কারনে মধ্যখানে আব্দুল খালিক বাড়িতে চলে আসেন। পরে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষ আবারো তাকে মাদ্রাসায় ফিরিয়ে নিয়ে যান। মাদ্রাসার কিছু অভ্যন্তরীন ঘটনা জানার কারনে আব্দুল খালিককে নিখোঁজের কয়েকদিন আগে মাদ্রাসার মুহতমিম এর রুমে ডেকে নিয়ে নানা ধরনের জেরা তর্ক হয় এমন একটি ভিডিও তাদের কাছে রয়েছে বলে তার ছেলে আব্দুল লতিফ জানান। মাদ্রাসার শিক্ষকদের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বের কারনে তার পিতাকে কোন পক্ষ লুকিয়ে রেখেছে অথবা নিখোঁজ করে ঘুম করা হয়েছে। এমনকি মাদ্রাসার দু’জন শিক্ষকের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। পিতাকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পেতে সিলেটের পুলিশ সুপার সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত এগিয়ে আসার দাবী জানিয়েছেন।

 

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার মুহতামিম ও শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যে দু’টি মোবাইল ফোন নাম্বারে নিখোঁজ আব্দুল খালিকের মেয়ে কথা বলছিলেন সেই দু’জন শিক্ষকের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়