স্পেনে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১১ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। খবর বিবিসির।
ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশে নিখোঁজদের অনুসন্ধান এবং জীবিতদের সহায়তা করার জন্য প্রায় ৫০০ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। এছাড়া অন্য দু’টি অঞ্চলে আরও তিনজন মারা গেছে।
গত মঙ্গলবার ভ্যালেন্সিয়ায় আট ঘণ্টার প্রবল বৃষ্টির ফলে বন্যা শুরু হয়। প্রবল বর্ষণ এবং আকস্মিক বন্যার পরপরই বুধবার ৯০টিরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যা ভ্যালেন্সিয়া, সেইসঙ্গে আন্দালুসিয়ার কাস্টিলা-লা মাঞ্চা এবং মালাগা পর্যন্ত দক্ষিণে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।
স্প্যানিশ আবহাওয়া সংস্থার মতে ভ্যালেন্সিয়ার নিকটবর্তী চিভা শহরে মাত্র আট ঘণ্টায় এক বছরের সমান বৃষ্টিপাত হয়েছে।
স্পেনে বৃহস্পতিবার সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রেখে এবং কয়েক মিনিট নীরবতার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন শুরু হয়।
কীভাবে একটি উন্নত ইউরোপীয় দেশ সময়মতো বন্যার বিপদ সম্পর্কে অনেক সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে ব্যর্থ হয়েছে তা নিয়ে জনগণের ক্ষোভ বাড়ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষেবাগুলো খুব দেরিতে সতর্কতা জারি করেছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে।
জাতীয় দুর্যোগের সময় নিয়োজিত নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত কোনো সতর্কতা জারি করেনি। এই সময়ে ভ্যালেন্সিয়ার বেশ কয়েকটি জায়গা কয়েক ঘণ্টার জন্য প্লাবিত হয়েছিল।
কর্তৃপক্ষ মুষলধারে বৃষ্টি ও বন্যাকে ‘অভূতপূর্ব’ বলে অভিহিত করেছে। অনেক কারণে বন্যা হয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনে উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে চরম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
আবহাওয়া গবেষকরা তীব্র বৃষ্টিপাতের সম্ভাব্য প্রধান কারণটিকে ‘গোটা ফ্রিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ‘গোটা ফ্রিয়া’ একটি প্রাকৃতিক আবহাওয়াজনিত ঘটনা যা স্পেনে শরৎ এবং শীতকালে আঘাত করে যখন ঠাণ্টা বাতাস ভূমধ্যসাগরের উষ্ণ জলে নেমে আসে।
তবে বিজ্ঞানীরা বিবিসিকে বলেছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
১৯৭৩ সালের পর থেকে স্পেনে এবার বন্যায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে খারাপ। ৭৩ সালে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ গ্রানাডা, মুরসিয়া এবং আলমেরিয়ায় কমপক্ষে ১৫০ জন মারা গেছে বলে অনুমান করা হয়েছিল।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়