ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে বঙ্গোপসাগরসহ দেশের সকল নদনদীতে ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। আজ শনিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা।
মা ইলিশ রক্ষায় ইলিশের বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা নিয়ে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে কেউ ইলিশ মাছ ধরতে পারবেন না। এ সময়ে সাগর ও নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার, মজুত ও পরিবহন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে। আইন অমান্যকারীকে অন্তত সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময় জেলেদের মাছধরা থেকে বিরত রাখতে জেলেদের জন্য ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্ধ করেছে সরকার। এসব চাল ইতিমধ্যে ইউনিয়নে ও পৌরসভায় পৌঁছে গেছে। শিগগিরই এ চাল যথাযথভাবে জেলেদের মাঝে বন্টন করা হবে।
এরআগে গত ২২ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় নিষেধাজ্ঞার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
এসময় ফরিদা আক্তার বলেন, ‘বাংলাদেশে ইলিশ মাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈজ্ঞানিকভাবে এ মাছ সংরক্ষণের দিন নির্ধারণ করা হয়। ইলিশ মাছ সুরক্ষায় বিজ্ঞানীরা পূর্ণিমা ও আমবস্যার সঙ্গে মিল রেখে করে থাকেন। আজকের বৈঠকে যে তারিখটা নির্ধারণে সবাই একমত হয়েছি সেটা হলো ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সব ধরনের ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুদ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যারা আছে- নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, র্যাবসহ যারা জড়িত তারা সবাই নজর রাখবে কোথাও থেকে ইলিশ যেন কেউ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন ও বিপণন করতে না পারে।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ২০০৩ সাল থেকেই জাটকা রক্ষায় কর্মসূচি শুরু হয়। পরে ২০০৮ সাল থেকে প্রথম আশ্বিন মাসে পূর্ণিমার আগে ও পরে মোট ২২ দিন মা-ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তখন থেকেই এর সুফল পাওয়া যায়।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়