অন্তর্বর্তীকালীন সরকাররের রোডম্যাপ নির্দিষ্ট করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে স্বৈরাচার পতনের পর শূন্যতা পূরণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোন বিকল্প ছিল না। বাংলাদেশ সমগ্র মানুষের সমর্থনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে। সঙ্গত কারণে তাদের প্রতি সেদিনও আমাদের সমর্থন ছিল, আজও আমাদের সমর্থন থাকবে। তবে এখানে একটি কিন্তু রয়েছে। তাদের প্রতি আমাদের আস্থাকে প্রশ্নহীন রাখার চ্যালেঞ্জ তাদেরকেই নিতে হবে। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য যে রোডম্যাপ, সেটি নির্দিষ্ট করতে হবে।
শনিবার ঝিনাইদহ পায়রা চত্বরে বিএনপির গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ রাকিব ও শহীদ সাব্বীর হত্যার বিচারের দাবিতে এ সমাবেশ করে বিএনপি। বিকেল সোয়া ৪টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়ার মধ্যে দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। বৃষ্টির কারণে সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করা হয়।
নেতাকর্মীদেরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আসুন আজ আমরা ঐক্যবদ্ধ হই শপথ নেই, গত ১৭ বছর বিশেষ করে জুলাই ও অগাস্টের যে মানুষগুলো আত্মহতি দিয়েছেন, যে মানুষগুলো সব কিছু উজাড় করে দিয়ে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছেন, যারা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। যেদিন মানুষ তার রাজনৈতিকভাবে অধিকার ফিরিয়ে পাবে এবং সেই সাথে তাদের অর্থনীতি মুক্তি মিলবে সেই দিনই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ত্যাগ সফল হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার মহাজাগরণ আমাদের সামনে আরেক স্বাধীনতা আর বিজয়ের বার্তা নিয়ে এসেছে। স্বৈরাচার পতনের এই মহাসমরে দেশের সর্বস্তরের মানুষ, রাজনৈতিক দল, ছাত্র-জনতা, গৃহিণী, শ্রমিক সবার অবদানকে আমরা যদি মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হই কিম্বা গত সতের বছর ধরে অবিরাম আন্দোলনে গুম, খুন, মামলা, হামলা আর নির্যাতনে পিষ্ট লক্ষ লক্ষ রাজনৈতিক কর্মীর অবদানকে যথাযথ মূল্যায়নে অসমর্থ হই তাহলে ইতিহাস আমাদের কাউকে ক্ষমা করবে না। অবশ্যই এই বিষয়গুলো আমাদেরকে বিবেচনায় রাখতে হবে।
'স্বৈরাচারের ফেলে যাওয়া দলবাজ উচ্ছিষ্ট প্রশাসনের চলমান ষড়যন্ত্রের কাছে আমরা মাঝে মাঝেই তাদের অসহায় ও বিপর্যস্ত হতে দেখছি। এর অবসান না হলে এদের বেড়াজালে আবদ্ধ সরকার ছোট ছোট বিপর্যয়কে এক সময় মহাবিপদ হিসেবে নিজেদের সামনে দেখতে পাবে। তখন প্রতিকারের পথ হয়ে পড়বে অতি সংকীর্ণ।'
তিনি বলেন, আজ আমাদেরকে সেই প্রতিজ্ঞায় নিতে হবে সেই শপথে নিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ যা প্রত্যাশা করে সেটি ফিরে নিয়ে আসতে হবে দলমত নির্বিশেষে। জীবনে নিরাপত্তা ও প্রত্যেকটি শিশু কর্মে যে নিরাপত্তা চায়, কৃষক যে নিরাপত্তা চায় আমাদেরকে সেগুলো ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে আবার বলেন, আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে স্বৈরাচার ঘটিয়েছি বিজয় অর্জন করেছি আসুন আমাদেরকে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশকে গঠন করতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশের ভবিষ্যৎকে তুলে ধরতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপত্তা ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার কাজ আমাদেরকে হাতে নিতে হবে। সেই শপথ ও প্রত্যাশা রেখে তিনি তার বক্তব্য সমাপ্তি করেন।
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এম.এ. মজিদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খাঁন শিমুল প্রমুখ।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়