Saturday, September 21

রাজ-পরীর ডিভোর্সের এক বছর: জানুন তাদের পরিচয় থেকে প্রেম-বিয়ের গল্প

 

তিনটি সংসার এবং একটি বিয়ে ভাঙার পর চিত্রনায়ক শরীফুল ইসলাম রাজের হাত ধরেছিলেন আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। ভেবেছিলেন, সারাজীবন একসঙ্গে কাটাবেন। কিন্তু বিয়ের বছর দেড়েকের মাথায় আলাদা হয়ে যায় তাদের পথ।

চরম দাম্পত্য কলহের জেরে গত বছরের মার্চ থেকে আলাদা থাকছিলেন পরীমনি ও রাজ। সে সময় তিন অভিনেত্রী নাজিফা তুষি, তানজিন তিশা ও সুনেরাহ বিনতে কামালের সঙ্গে রাজের একটি ভিডিও ফাঁস হয়। সেখানে তাদের মাতাল অবস্থায় দেখা যায় এবং আপত্তিকর কথাবার্তা বলতে শোনা যায়।

ওই ঘটনাই চিড় ধরিয়ে দেয় পরীমনির সংসারে। দাম্পত্য কলহের জেরে নায়িকার ফ্ল্যাট ছেড়ে সব জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে যান রাজ। আর ফেরেননি।

কয়েক মাস আলাদা থাকার পর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজকে ডিভোর্স লেটার পাঠান পরীমনি। দুদিন পর ২০ সেপ্টেম্বর সে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন তিনি। সেই হিসেবে প্রাক্তন তারকা জুটির সংসার ভাঙার এক বছর পূর্ণ হলো।

ডিভোর্স লেটার পাঠানোর পর পরীমনি ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে রাজের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তোলেন। জানান, এক পাতানো বোনকে সঙ্গে নিয়ে রাজ তার গায়ে হাত তুলেছিলেন। যদিও সেই পাতানো বোনের নাম উল্লেখ করেননি নায়িকা।

পরীমনি প্রশ্ন রেখে পোস্টে লিখেছিলেন, ‘রাজ কার সাথে থাকে? সুগার মমি নাকি কোনো অনৈতিক ব্যবসায়িক চক্র? কী চলে মহানগর প্রজেক্টে তাদের ওই বাসা নামক অপকর্মের আস্তানায়? প্রশাসন, মিডিয়া যারা আছেন বের করেন এবার! অনেক কথা বলার বাকি! এত চুপ থাকা যায় না।’

যদিও এই পোস্টটি কিছুক্ষণ পরই মুছে ফেলেন পরীমনি। সে সময় রাজকে ডিভোর্স দেওয়ার চারটি কারণ উল্লেখ করেন তিনি। প্রথমত, মতের মিল হচ্ছিল না। দ্বিতীয়ত, কোনো কিছু নিয়েই বনিবনা হচ্ছিল না। তৃতীয়ত, রাজ তার এবং সন্তানের খোঁজখবর নিচ্ছিলেন না এবং চতুর্থত, নায়িকা মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলেন।

রাজ-পরীর পরিচয়, প্রেম-বিয়ে-সন্তান

২০২১ সালের আগস্টের শুরুতে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় এক মাস কারাগারে ছিলেন পরীমনি। জামিনে ছাড়া পান ওই মাসের ৩১ তারিখে। এরপর নায়িকা ‘গুণীন’ নামে একটি সিনেমার কাজ শুরু করেন, যেটি পরিচালনা করেন গিয়াসউদ্দিন সেলিম।

এই সিনেমায় পরীমনির বিপরীতে ছিলেন শরীফুল রাজ। তার আগ পর্যন্ত এই নায়কের সঙ্গে তার পরিচয় ছিল না। ‘গুণীন’-এ একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে কাছাকাছি আসেন। শুটিং চলাকালীনই রাজকে তার ভালোলাগার কথা বলেন পরীমনি। রাজও তাতে সায় দেন।

সে সময় শুটিংয়ের ফাঁকেই চলতো রাজ-পরীর প্রেমলীলা। যেটা জানতেন সিনেমার পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিমসহ আরও অনেকে। মাত্র এক সপ্তাহ প্রেম করার পর রাজকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন পরীমনি। চার হাত এক হয়েও যায় তাদের।

পরীমনির দেওয়া তথ্যমতে, ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর রাজের আফতাবনগরের বাসায় তাকে গোপনে বিয়ে করেন পরীমনি। সেই খবর তারা ফেসবুকে প্রকাশ করেন ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি। একইসঙ্গে জানান, তারা সন্তানের অভিভাবক হতে যাচ্ছেন। সেই মতো ওই বছরের ১০ আগস্ট পৃথিবীতে আসে রাজ-পরীর সন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য।

সন্তানের জন্মের আগে অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফের একবার বিয়ে সারেন রাজ ও পরীমনি। সেখানে দাওয়াত করেন তারকা থেকে সাংবাদিক অনেককেই। শুরুর দিকে ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্য। কিন্তু ছেলের রাজ্যর জন্মের কয়েক মাস পার হতেই প্রকট হয়ে ওঠে তাদের কলহ। ফলাফল পরীমনির আরও একটি ডিভোর্স।

জানা যায়, রাজ ছিলেন পরীমনির চতুর্থ স্বামী। অর্থাৎ এর আগে নায়িকা আরও তিনটি বিয়ে করেন। তার মধ্যে দুটি বিয়ে করেন চলচ্চিত্রে আসার আগে। নায়িকা বনে যাওয়া পর ২০২০ সালের মার্চে কামরুজ্জামান রনি নামে সহকারী পরিচালককে বিয়ে করেন পরীমনি। সেই সংসার ভাঙে মাত্র তিন মাসে।

এরপর তামিম নামে এক বিনোদন সাংবাদিকের সঙ্গে আংটি বদল করেছিলেন পরীমনি। তবে সেটি আর বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। তার আগেই ভেঙে যায় তামিমের সঙ্গে পরীমনির সম্পর্ক। এর পরের বছরই নায়িকা ভালোবেসে বিয়ে করেন রাজকে। কিন্তু…।


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়