Saturday, September 21

শাবিপ্রবির উপ উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন সমন্বয়করা

 


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেনকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-২ এর কনফারেন্স রুমে এ শপথ বাক্য পাঠ করান তারা।

জানা গেছে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরীকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিমকে প্রো-ভিসি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. ইসমাইল হোসেনকে কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ইসমাইল হোসেন যোগ দেন। বিকেলে নবনিযুক্ত প্রো-ভিসি ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু শিক্ষার্থী সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যায়। এ সময় তারা নবনিযুক্ত প্রো-ভিসি ও কোষাধ্যক্ষকে ‘শপথ বাক্য’ পাঠ করায় বলে আলোচনা-সমালোচনার চলছে।

নবনিযুক্ত প্রো-ভিসি ও‌ কোষাধ্যক্ষের যোগদান উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিকেল ৪টায় তাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের অনুমতি গ্রহণ করে এবং বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের তাতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানায়।

নির্দিষ্ট সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কিরণ হাওলাদার ও থিয়েটার সাস্টের সভাপতি পলাশ বখতিয়ারের নেতৃত্বে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিক্ষার্থীদের ফুল নিয়ে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। এ সময় প্রো-ভিসি ও‌ কোষাধ্যক্ষ উপস্থিত সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মো. আব্দুল কাদির, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সালেহ মো. নাসিম, দেলোয়ার হোসেন শিশির, মাহবুবুল ইসলাম পবন, রিয়াজ হোসেন রিমন, জহিরুল ইসলাম, হাফিজুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি।

সৌজন্য সাক্ষাতের এক পর্যায়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ও থিয়েটার সাস্টের সভাপতি পলাশ বখতিয়ার সম্মেলন কক্ষে দাঁড়িয়ে শপথবাক্য পাঠ করায়। ঐ সময় প্রো-ভিসি ও কোষাধ্যক্ষও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শপথ বাক্য পাঠ করেন।

এ সময় শপথে  “শুকরিয়া যে, আমরা ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের করাল গ্রাস থেকে মুক্তি লাভ করেছি। আজ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদে যোগদানের মুহূর্তে ২৪ শে জুলাইয়ের সব শহিদদের স-স্বত্বচিত্তে স্বরণ করছি, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। মহান জুলাই বিপ্লবের মূল লক্ষ্য ও আদর্শকে সমুন্নত রাখতে আমরা শপথ করছি যে, বিপ্লবী সরকার কর্তৃক যে দিক নির্দেশনা আমরা পেয়েছি এবং জুলাইয়ের ছাত্র জনতার বিপ্লবের স্পিরিট ধারণ করে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষা এবং গবেষণা উন্নয়নে সর্বোচ্চ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সচেষ্ট থাকবো। দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ও শিক্ষার্থী বান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলার জন্য আপসহীনভাবে নিয়োজিত থাকবো। আমাদের বিদ্যা, গবেষণা সৎ কাজের মাধ্যমে দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাবিপ্রবি দেশের জনগণের এবং বিশ্ববাসীকে আলোর পথ দেখাতে যেন অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, তা নিশ্চিত করবো।” এসব বাক্য বলতে শোনা যায়।

শপথ পাঠের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয়টি আলোচনা/সমালোচনার জন্ম দেয়।

শপথ পাঠকারী থিয়েটার সাস্টের সভাপতি পলাশ বখতিয়ার সহ-সমন্বয়ক হিসেবে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যায়নি। সে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিনিধি হিসেবে গেছিল। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোটের কিরণ হাওলাদারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিরোধ রয়েছে। সমন্বয়কদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে তাদের পরিকল্পনা মাফিক শপথ পাঠ করানোর ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।

সাক্ষাতের জন্য আসা শিক্ষার্থী কর্তৃক শপথ পাঠ করানো হবে - এই বিষয়টি প্রো-ভিসি, কোষাধ্যক্ষ এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আগে থেকেই জানতেন না বলে জানা যায়। 

শপথ পাঠের বিষয়বস্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কল্যাণের জন্য ইতিবাচক হলেও সমালোচনা ও নেতিবাচক প্রচারণার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান কিছু ছাত্রলীগ নেতা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের কতিপয় সদস্য জড়িত বলে জানা গেছে।

বিষয়টিকে কেন্দ্র করে নেতিবাচক প্রচারণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ উদ্দিনের ইন্ধন রয়েছে। উল্লেখ্য, তিনি ভিসি প্রার্থী ছিলেন বলে জানা যায়।

সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়