Sunday, September 1

আগস্ট মাস শেষ হওয়ায় মন খারাপ নির্মাতা আশফাক নিপুনের


শেষ হয়ে গেল ঘটনাবহুল আগস্ট। হাজারের বেশি প্রাণ নিয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এ মাসের ৫ তারিখে পদত্যাগ করে ভারত পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই যুদ্ধে শুরু থেকেই রাজপথে ছিলেন নির্মাতা আশফাক নিপুন। সামাজিক মাধ্যমেও তৈরি করেছেন জনমত।

সেই আগস্ট মাস শেষ হয়ে যাওয়ায় মন খারাপ আশফাক নিপুনের। কেন মন খারাপ, দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়ে সেই কারণ তিনি তুলে ধরেছেন ফেসবুকের পাতায়।

আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘অনেকেই আগস্ট মাস শেষ হওয়ায় হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন। আমার বরং খারাপই লাগল মাসটা শেষ হয়ে যাওয়ায়। আমার জন্মদিন এই মাসে শুধুমাত্র সেই কারণে না। আগস্টের প্রথম পাঁচ দিনেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল নতুন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।’

তিনি লিখেছেন, ‘জুলাই ১৭ থেকে ছাত্র-জনতার ওপর হাসিনা সরকারের নারকীয় আক্রমণের যে ধারা অব্যাহত ছিল, তার যে করুণ পরিণতি হতে যাচ্ছে সেটা ২ আগস্ট প্রেসক্লাব থেকে শহীদ মিনারের যে লক্ষ জনতার দ্রোহ যাত্রাতেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। সেই জনতার কাতারে আমিও ছিলাম। দেখেছিলাম মানুষের প্রতিবাদী, শেষ না দেখে ঘরে না ফেরার প্রত্যয়।’

নির্মাতা আরও লিখেছেন, ‘শোনা যায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও নাকি বলাবলি করছেন আগস্ট মাস পার করতে পারলেই তারা বেঁচে যাবেন লম্বা সময়ের জন্য। আগস্ট তাদের সেই পার আর হতে দেয় নাই। হাসিনা সরকারের পতন ঘটল। প্রবল ক্ষমতাশালী স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ সবাই এখন পলাতক। আগস্ট তাদের শেষ রক্ষা করেনি।’

ভয়াবহ বন্যার কথা স্মরণ করে এই নির্মাতা লিখেছেন, ‘জালিম সরকারের পতনের পর আমরা যখন আনন্দের জোয়ারে ভাসছিলাম তখনই প্রকৃতি আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। সরকার পতনের দুই সপ্তাহেই দেশে নেমে এল স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা। সাড়ে ৪ লাখ পরিবার, ৫৫ লাখ মানুষ আর লক্ষাধিক গবাদি পশু আক্রান্ত হল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুছিয়ে উঠারও সময় পাননি।’

তিনি লিখেছেন, ‘কিন্তু আগস্টের স্পিরিট চেনালো নতুন বাংলাদেশকে। সারা বাংলাদেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ল বন্যার ত্রাণ কাজে। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে শিশু, ভিক্ষুক পর্যন্ত যার যা আছে সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এল বন্যাদুর্গতদের বাঁচাতে। এত বড় স্কেলের দৈব দুর্বিপাকে ভয় না পেয়ে আগস্ট মাস দেখল আরও অনেক অনেক বড় মানবতার বন্ধন। যে বন্ধন বুঝিয়ে দিয়েছিল বিপদে বাংলাদেশির পরিচয়।’

সবশেষে ‘মহানগর’ নির্মাতা লিখেছেন, ‘মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পুরো বাংলাদেশ যে প্রতিরোধের সংকল্প নিয়ে দুইবার রাস্তায় নেমে এসেছে, সেই কারণে আগস্ট ২০২৪ আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জুলাই যদি হয় রক্তাক্তের, আগস্ট ৪ তাহলে বিজয়ের, ভাতৃত্বের, সহমর্মিতার, মানবতার। আমরা ক্যালেন্ডারে জুলাই মাসকে আটকে দিয়েছিলাম। আগস্ট যেন আমাদের মুক্ত করে দিল। আগস্ট ২০২৪ তাই প্রতিবছর আমার কাছে আনন্দের, স্মরণীয় আর ভেঙে না পড়ার মাস হয়ে ফিরে ফিরে আসবে।’


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়