নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেটের কানাইঘাট দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় নিহত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক আলী খান পান্নার লাশ উদ্ধারের কথা স্বীকার করেছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য সরকার।
ইতোমধ্যে লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন তার বড় ভাই জাফর আলী খান।
তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লাশ দেশে আনার জন্য মঙ্গলবার আবেদন করেছি। আবেদনে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ উপহাইকমিশনারের কার্যালয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে।’
গত ২৪ আগস্ট ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জৈন্তিয়া হিল পার্বত্য জেলার উখিয়াং থানার অভ্যন্তরে দুর্গম এলাকায় ইসহাক আলী খান পান্নার পড়ে থাকা লাশের ছবি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তার মৃত্যু নিয়ে দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। তবে মেঘালয় রাজ্যের কোন এলাকায় ইসহাক আলী পান্না ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় মারা গেছেন এ নিয়ে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
তবে কানাইঘাট উপজেলার কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে নিশ্চিত হন আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক আলী খান পান্না কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্তের মিকিরপাড়া এলাকা দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। এরপর তিনি মারা গেছেন বলে লাশের একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তিনি বিএসএফ এর গুলিতে নাকি পাহাড় থেকে পিছলে পড়ে অথবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এ নিয়ে ধোয়াসা সৃষ্টি হয়।
গত ২৬ আগস্ট মেঘালয় থেকে প্রকাশিত একটি সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, ইসহাক আলী খান পান্নার লাশ গত ২৬ আগস্ট মেঘালয় রাজ্যের বিএসএফ কানাইঘাট দনা বই (মিকিরপাড়া) সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে খাসিয়া বস্তির দুর্গম এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে উখিয়াং থানা পুলিশের হেফাজতে দেন। বর্তমানে ইসহাক আলী খান পান্নার লাশ মেঘালয় রাজ্যের কেলেরিয়া হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঐ সংবাদ মাধ্যমে আরো বলা হয়, ইসহাক আলী খান পান্না বিএসএফ এর গুলিতে অথবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন।
অপরদিকে ভারতের গৌহাটি বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহকারী কমিশনার রুহুল আমিনের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, মেঘালয় রাজ্য সরকার একটি মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে; যার পকেটে একটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। পাসপোর্টটি ইসহাক আলী খান পান্নার বলে জানান তিনি।
এছাড়া পান্নার নিকটাত্মীয় দুজন বুধবার মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়াং থানায় গেলে সেখানে পেট্রল পুলিশের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় মৃতদেহ উদ্ধারের কথা। এ সময় তার হাতে থাকা ঘড়ি ও পাসপোর্ট তাদের দেখানো হয়।
গত শুক্রবার রাতে কানাইঘাটের দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় ভারতীয় এলাকায় মারা যান ইসহাক আলী খান পান্না। পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশ। এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন মেঘালয় রাজ্যের বিএসএফ ও পুলিশ। এমনকি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পান্না ভারতে প্রবেশই করেনি বলে বিবৃতি দেন বিএসএফ কর্মকর্তারা।
১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ইসহাক আলী খান পান্না। ২০১২ সালের সম্মেলনের পর ইসহাক আলী খান পান্না আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক হন।
ইসহাক আলী পান্নার স্ত্রী আইরীন পারভীন বাঁধন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল মাসে মারা যান। আইরিন সরকারের উপ-সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হলের ভিপি ছিলেন। এই দম্পতির ইফতেশাম আফতারি আরিয়ান নামক এক ছেলে রয়েছে।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়