Wednesday, September 27

ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক ‘কিশোর কানাইঘাট’


◈ মাহবুবুর রশিদ  ◈

তিহাস বলতে আমরা বুঝি কোন কিছুর সত্যানুসন্ধান বা গবেষণা। অথবা সহজ ভাষায় অতীতের ঘটে যাওয়া কাহিনী হলো ইতিহাস। একইভাবে ইতিহাসের জনক হেরোডোটাস বলেছেন, 'ইতিহাস হলো অতীতের ঘটনাবলি অনুসন্ধান করে তা লেখা'। আমাদের টিকে থাকার লড়াইয়ে দেশের সঠিক ইতিহাস জানার পাশাপাশি আঞ্চলিক ইতিহাস জানাটাও জরুরি বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অসংখ্য ছোট বড় নদী বিধৌত অপূর্ব শোভায় শোভিত প্রাচীন জনপদটির নাম কানাইঘাট।  প্রাচীণকালে জৈন্তা রাজ্যের অধীনে থাকা এ উপজেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে রয়েছে গৌরবময় এবং মজাদার কিছু ইতিহাস। এখানকার ইতিহাসে রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ঘটনা,যা ইতিহাসকে করেছে সমৃদ্ধ। আর এসবের পুরো বিষয় ফুটে উঠেছে ‘কিশোর কানাইঘাট’ নামক বইটিতে। বইটি এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে লেখা। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, এর পূর্বে কি কানাইঘাট উপজেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যে নিয়ে কোনো বই ছিল না ? হ্যাঁ! ছিল। তবে কিশোর-বয়সী পাঠকদের পড়ার উপযোগী ভাষায় প্রথম বই -কিশোর কানাইঘাট।

তাইতো লেখক সরওয়ার ফারুকী বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন,'জৈন্তা-কানাইঘাটের ইতিহাসবিষয়ক বইগুলো অনেকটা দুষ্পাঠ্য-পাঠ করলে মনে হয় এ ইতিহাস আমাদের নয়,দূর দেশের! অথচ,কিশোরমন দুর্বোধ্য ভাষার পাঠোদ্ধারে ক্লান্ত হতে চায়না। তাদের জন্য প্রয়োজন সহজ-সরল বই-কিশোর কানাইঘাট এ প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্য রচিত।'

লোকচক্ষুর অন্তরালে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম, জৈন্তা রাজ্যের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে পরম যত্নে লেখক  বইয়ের মধ্যে তুলে ধরেছেন। গল্পের ছলে লেখক অত্যন্ত সুন্দর,সাবলীল এবং সহজভাবে নিজ উপজেলাকে ফুটিয়ে তুলেছেন কিশোর কানাইঘাট প্রকাশের মাধ্যমে। 

১১২ পৃষ্ঠার হার্ড কভারের চমৎকার বইটির মুদ্রক ও প্রকাশক ছিলেন তরুণ কবি ও লেখক লুৎফুর রহমান তোফায়েল। প্রচ্ছদ নিয়ে ভেবেছেন তরুণ ক্যালিগ্রাফার জাহেদ হোসাইন রাহীন । ইতিহাসের বইয়ে প্রচ্ছদ নিয়ে লেখক সরওয়ার ফারুকী যেন আরেক ইতিহাস তৈরি করেছেন। লেখকের বড় ফুফু ছিলেন রওশন আরা বেগম। ১৯৬৮ সালে তাঁর ইন্তেকাল হয়। মৃত্যুর আগে তিনি এঁকে যান 'নকশিকাঁথার ফুলের খাতা'। মৃত্যুর ৫৫ বছর পর সে ফুলের খাতা থেকে একটি ফুল ওঠে এলো 'কিশোর কানাইঘাট'-এর প্রচ্ছদপটে। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না,হয়তো এ দায়বদ্ধতা থেকেই সরওয়ার ফারুকী লিখেছেন ইতিহাসের বই-কিশোর কানাইঘাট। 

কিশোর কানাইঘাট বইটি এ উপজেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সকল শ্রেণির পাঠকের মনের খোরাক মিটাতে বিশেষ অবদান রাখবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বইটি 

কানাইঘাটের ঘরে ঘরে পৌঁছালে লেখকের শ্রম সার্থক হবে। পরিশেষে বইটির সাফল্য কামনা করে শেষ করছি।




শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়