নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটের কানাইঘাটে গত সোমবার জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আপন চাচা ও চাচাতো ভাইদের হাতে নির্মমভাবে নিহত কামিল আহমদের লাশ ময়না তদন্তের পর দাফন করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) ময়না তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর নিহত কামিল আহমদের লাশ বিকেলে তার নিজ বাড়ী উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের নিজ বাণীগ্রাম গ্রামে নিয়ে আসার পর তার পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বাদ আসর ব্রাহ্মণগ্রাম বড় মসজিদ মাঠে তার জানাজার নামাজ সম্পন্ন হওয়ার পর গ্রামের গুরুস্থানে দাফন করা হয়।
জানাজার নামাজে এলাকার বিপুল সংখ্যক লোকজন শরীক হন। এ সময় অনেকে এই নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কামিল আহমদের হত্যাকারী তার চাচা আলা উদ্দিন সহ খুনীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
তবে হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং এলাকায় অনেক ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কারনে ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না কেউ।
নিহত কামিল আহমদের বাড়িতে গেলে তার ফুফাতো ভাই ও পরিবারের লোকজন এবং থানায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার বাদী নিহতের বোন শারমীন বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, কামিল আহমদকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে খুনীরা উল্লাশ করেছে।
শারমীন বেগম বলেন, আপন চাচা আলা উদ্দিন সহ অপর চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা তাদের পৈত্রিক বেশ কিছু জমিজমা দীর্ঘদিন থেকে জোরপূর্বক ভাবে দখল করে রেখেছে। এর প্রতিবাদ সহ জমিজমা ফিরে পেতে এলাকায় বিচারপ্রার্থী হওয়ার কারনেই গত সোমবার রাত ১০টার দিকে গাছবাড়ী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির পাশের্^ কামিল আহমদকে চাচা আলা উদ্দিন ও চাচাতো ভাইয়েরা পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে পৈশাচিক কায়দায় পিটিয়ে তার ভাইয়ের হাত-পা ভেঙে এবং পুরো শরীর থেতলে হত্যার পর খুনীরা উল্লাশ করেছে।
কামিল আহমদ জীবিত থাকা অবস্থায় খুনীদের নাম বলে গিয়েছেন, তাদের ৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে শারমিন বেগম জানান। এছাড়াও শারমিন বেগমের অভিযোগ এ হত্যাকান্ডের সাথে আরো কয়েকজন রয়েছে, তাদের নামও তারা জানতে পেরেছেন। খুনীরা প্রভাবশালী ও এলাকায় অনেক দাঁঙ্গা-হাঙ্গামার সাথে জড়িত থাকার কারনে ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ তাদের পাশে দাড়াচ্ছেন না বলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান। বর্তমানে তারা আতংকের মধ্যে দিন পার করছেন। তারা দ্রুত মামলার আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তবে কামিল আহমদ হত্যাকান্ডের ৩দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানিয়েছেন, কামিল আহমদের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি নিহতের পরিবারের সদস্যদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়