নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেটের কানাইঘাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৫জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার(২১ জুলাই)রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের সুরইঘাট বাজারে।
আহতদের মধ্যে মুমূর্ষু অবস্থায় একজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্য ৩জনকে সিওমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে গিয়াস উদ্দিন এক প্রবাসীকে আটক করেছে।
স্থানীয়রা জানান, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের বাউরভাগ ৩য় খন্ড গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের পুত্র প্রবাসী গিয়াস উদ্দিন ও এনাম উদ্দিনের সাথে পাশের বাড়ির আব্দুর রহিম, আতাউর রহমান গংদের মধ্যে বসত বাড়ির একখন্ড জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সুরইঘাট বাজারে একটি চা এর স্টলে প্রবাসী গিয়াস উদ্দিন ও তার প্রতিপক্ষ পাখি মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক মিমাংসা করার জন্য বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ীবৃন্দ উদ্যোগ গ্রহণ করে উভয় পক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য শনিবার(২২ জুলাই) সালিশের দিন ধার্য্য করা হয়। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টার দিকে আবারো এক পক্ষের আতাউর রহমান অপর পক্ষ গিয়াস উদ্দিনের মধ্যে বাজারের ত্রিমোহনী পয়েন্টে বাক-বিতন্ডা শুরু হয়।
এসময় গিয়াস উদ্দিন ও তার ভাই এনাম উদ্দিন এবং অপর পক্ষের আতাউর রহমান,আব্দুর রহিম, আব্দুল হান্নান, পাখি মিয়া, সাইফুর রহমান গংরা দেশীয় লাঠি-সোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে গিয়াস উদ্দিন ও এনাম
উদ্দিনের ধারালো চাকু ও রডের এলোপাতাড়ি আঘাতে অপর পক্ষের আতাউর রহমান,আব্দুর রহিম, আব্দুল হান্নান, পাখি মিয়া গুরুতর রক্তাক্ত আহত হন।
অপরপক্ষের হামলায় প্রবাসী গিয়াস উদ্দিন আহত হন। স্থানীয় জনতা ও বাজারের ব্যবসায়ীরা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে জখম গুরুতর হওয়ায় আতাউর রহমান, আব্দুর রহিম, আব্দুল হান্নান ও পাখি মিয়াকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন আতাউর রহমানের অবস্থার অবনতি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে কানাইঘাট সার্কেলের নবাগত এএসপি অলক কান্তি শর্মা ও থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমেদ আহতদের দেখতে উপজেলা হাসপাতালে যান এবং তাদেরকে সিলেট দ্রুত পাঠান। হাসপাতাল থেকে পুলিশ আহত অবস্থায় প্রবাসী গিয়াস উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। মারামারির ঘটনায় আহত আব্দুর রহিমের পুত্র সাইফুর রহমান বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় আটক প্রবাসী গিয়াস উদ্দিন ও তার ভাই এনাম উদ্দিন সহ ১৬জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। থানার মামলা নং- ১৩, তারিখ-২২/০৭/২০২৩ইং।
থানার ওসি গোলাম দস্তগীর জানিয়েছেন, সুরইঘাট বাজারে দুই পক্ষের মধ্যে সর্ঘষের ঘটনায় একপক্ষের ১৬জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
সুরইঘাট বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাজারের যে স্থানে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে সেখানে সি সি ক্যামেরা রয়েছে। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করলে ঘটনার সাথে কারা কারা জড়িত তা চিহ্নিত করা যাবে। তবে
ব্যবসায়ীরা বলেছেন অযথা নিরীহ কাউকে মামলায় আসামী করে হয়রানী না করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন বাজারের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সময় গ্রামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাজারে সংঘর্ষের ঘটে থাকে। শুক্রবার রাতে এনাম উদ্দিন, তার ভাই গিয়াস উদ্দিনদের সাথে অপরপক্ষ আতাউর রহমান গংদের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সুরইঘাট বাজারে সংঘর্ষ হয়েছে।
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়