নিজস্ব প্রতিবেদক :
আহত অবস্থায় ৬দিন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর কানাইঘাটের এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় স্বামী-শ্বাশুড়ীর ও শ্বশুর মিলে সাজিদা বেগমকে অমানসিক নির্যাতন করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে ভিকটিমের পরিবার, আত্মীয়-স্বজনরা জানিয়েছেন।
শনিবার ময়না তদন্তের পর লাশ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিহালপুর গ্রামের রইছ উদ্দিনের মেয়ে সাজিদা বেগমের ৪ বছর আগে পৌরসভার বিষ্ণুপুর করচটি গ্রামে বসবাসরত ইসলাম উদ্দিনের ছেলে রেজোয়ান আহমদের (২৮) সাথে বিয়ে হয়। সাজিদার দুই বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের বছর যাওয়ার পরই যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময়ে স্বামী রেজোয়ান ও তার মা আমিরুন নেছা, ইসলাম উদ্দিন প্রায়ই সাজিদাকে নির্যাতন করত। এ নিয়ে সব-সময় সংসারে অশান্তি বিরাজ করত বলে সাজিদার আত্মীয়-স্বজনরা জানান। একবার যৌতুক বাবদ লক্ষাধিক টাকা সাজিদার পরিবার প্রদান করেন তারা।
সর্বশেষ পুণরায় মোটা অংকের যৌতুকের জন্য গত ১ মে রাত ১১টার দিকে সাজিদাকে তার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ী মিলে মারপিটসহ গলায় রশি দিয়ে ফাস লাগিয়ে হত্যারও চেষ্টা করা হয়। একপর্যায়ে স্বামীর বাড়ির লোকজনদের অমানসিক নির্যাতনের কারনে সাজিদা বেগম অচেতন হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন। পরবর্তীতে সাজিদার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকগণ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিওমেক হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন।
সাজিদা বেগমের মা ও বাবা সহ পরিবারের লোকজন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, হাসপাতালে সাজিদা বেগম মারা যাওয়ার পর তার লাশ সেখানে রেখে তার স্বামী রেজোয়ান আহমদ তার দুই বছরের শিশু ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত সাজিদা বেগমের শিশু ছেলেরও কোন সন্ধান পাচ্ছেন না তারা। এমনকি তার স্বামীর বাড়ির লোকজন বিবাহের সময় উপহার বাবদ দেওয়া ফানির্চার, আসবাবপত্র প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মালামাল বসত ঘর থেকে সরিয়ে ফেলেছে।
ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ যৌতুকের দাবী মেটাতে না পেরে তিলে তিলে স্বামীর বাড়ির লোকজন সাজিদাকে সব-সময় অমানুষিক, শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
ঘটনার পর পরই বিষয়টি থানা পুলিশকে সাজিদা বেগমের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ ঘটনায় সাজিদার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়