Wednesday, December 1

কানাইঘাটে কমিউনিটি সেন্টারে জোড়া লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য



নিজস্ব প্রতিবেদক :

আনন্দ কমিউনিটি সেন্টার। কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের গাছবাড়ী বাজারে সেন্টারটির অবস্থান। বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় স্বাভাবিকভাবেই আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারে বর ও কনেপক্ষের হৈ-হুল্লোড় থাকার কথা, কিন্তু বুধবার ছিলো এর ব্যতিক্রম। সেন্টারটিতে বিয়ের আয়োাজন ছিলো, ঠিকই কিন্তু একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে উড়ে যায় আনন্দ সেন্টারের সকল আনন্দ।


বুধবার (১ ডিসেম্বর) এই কমিউনিটি সেন্টার থেকে এক মহিলা ও পুরুষ বাবুর্চির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আরও এক বাবুর্চিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৭টার দিকে তাদের উদ্ধার করা হয়। পরে ময়না তদন্তের জন্য নিহত দুজনের লাশ ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেছে কানাইঘাট থানাপুলিশ।

 

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রহস্য বাড়ছে জোড়া লাশ উদ্ধার নিয়ে।

 

নিহত বাবুর্চিরা হলেন- কানাইঘাট উপজেলার নয়াগ্রামের মৃত রহমত উল্লাহ’র ছেলে সুহেল আহমদ (২৮) ও ওসমানীনগর উপজেলার তাহিরপুর গ্রামের মৃত আক্কাছ আলীর মেয়ে সালমা বেগম (৪০) এবং অসুস্থ বাবুর্চি হলেন কানাইঘাট উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রামের নাজিম উদ্দিন।


লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি আব্দুল করিম ও কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) জাহিদুল হক।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের রান্না করার জন্য আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারে যান সুহেল আহমদ, সালমা বেগম ও নাজিম উদ্দিন। রাতে তারা কমিউনিটি সেন্টারের ২য় তলার একটি কক্ষে শুয়ে পড়েন। বুধবার সকাল ৭টার দিকে ঘুম থেকে এ ৩জন না উঠলে বিয়ের আয়োজনকারী জসিম উদ্দিন তাদের ডাকতে রুমে যান। ডাকাডাকির পরও তারা ঘুম থেকে না উঠলে একপর্যায়ে কক্ষের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন দেখতে পান- বাবুর্চি সুহেল আহমদ, নাজমা বেগম ও নাজিম এলোমেলো অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এবং কক্ষের ভেতর ধুয়ায় আচন্ন রয়েছে। এক পর্যায়ে এ তিনজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ সুহেল ও সালমা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আশংকাজনক অবস্থায় নাজিম উদ্দিনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

 

এদিকে, নিহত সুহেলের স্বজনরা দাবি করছেন- মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হতে পারে।


অপরদিকে, পুলিশ ধারণা করছে- ছোট একটি রুমে তিনজন লাকড়ি ও মশার কয়েল জ্বালিয়ে শুয়ে থাকার কারণে ধুয়ায় অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে ঘুমের মধ্যে মারা যেতে পারেন।

কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) জাহিদুল হক সিলেটভিউ-কে বলেন, কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা যাচ্ছে- যে রুমে তারা শুয়েছিলেন রুমটি ছোট ছিল। যার কারণে ধুয়া বের হতে পারেনি ঠিকমতো। তাই অক্সিজেনের অভাবে সুহেল আহমদ ও সালমা বেগমের মৃত্যু হতে পারে।


তিনি বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত দু’জনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়