মাহবুবুর রশিদ ::
সুধীর বাবুর কথা নিশ্চই মনে আছে? বন্ধু আমীর হোসেন সওদাগরের জানাজার নামাজের সময় সবার পেছনে বসে ডুকরে ডুকরে কাঁদছিলেন সেই সুধীর বাবু। হিন্দু ধর্মের হয়েও জানাজার নামাজে বন্ধুর বিদায় লগ্নেও সুধীর বাবুর কান্না মনে দাগ কেটেছিলো অনেকেরই।
সুধীর বাবুর মতো এমন আরো একটি ঘটনা চোখে পড়ল কানাইঘাটে।
সোমবার (১ নভেম্বর) প্রিয় শিক্ষক শরিফ উদ্দিনের শেষ বিদায়ে জানাজার পেছনে বসে অঝোরে কাঁদছিলো ছাত্র বিজিত কুমার। তার উপস্থিতি ও কান্না দেখে জানাজায় আগত মুসল্লিদের মনে দাগ কাটে। অনেকেই আবেগে কেঁদে ফেলেন।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার (৩১) অক্টোবর এক মর্মান্তিক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন ঐতিহ্যবাহী কানাইঘাট ছোটদেশ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শরিফ উদ্দিন। তিনি মোটরসাইকেল যোগে দিঘীরপার ইউনিয়নের এক আত্মীয়ের বাড়ীতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে এ দূর্ঘটনার শিকার হন। শরীফ স্যারের আকষ্কিক মৃত্যু সংবাদ শুনে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসে। শোকে স্তব্দ হয়ে যান স্যারের স্বজন, সহকর্মী এবং শিক্ষার্থীরা। কারণ শরীফ স্যার ছিলেন একজন আদর্শবান শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধু সুলভ আচরণে তিনি সকলের কাছে যেন অতি আপন হয়ে উঠেছিলেন। হঠাৎ তার চলে যাওয়াকে কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছেন না কেউ ই!
সোমবার (১ নভেম্বর) আছরের নামাজের পর ছোটদেশ চটিগ্রাম দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার মাঠে শিক্ষক শরীফ উদ্দিনের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজে কানাইঘাটের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক মহল, সূধীজনসহ নানা শ্রেণি পেশার কয়েক হাজার মানুষ শরীক হন। তাঁর লাশ একনজর দেখার জন্য মাদ্রাসা মাঠে ভীড় জমান সবাই। অনেকে লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গ পড়েন। তেমনি শিক্ষক শরীফ উদ্দিনের প্রিয় এক ছাত্র বিজিত কুমার। হিন্দু ধর্মের হওয়ায় জানাজায় অংশগ্রহণ করতে না পারলেও জানাজা চলাকালীন পেছনে বসে কাঁদছিলো সে। তার কান্না দেখে জানাজায় আগত মুসল্লিদের মনে দাগ কাটে।
বিজিত কুমার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, “শরীফ স্যার একজন দায়িত্বশীল মানুষ ছিলেন। শিক্ষার্থীদের সাথে তিনি বন্ধু সুলভ আচরণ করতেন। স্যারের মৃত্যুতে ছোটদেশ উচ্চ বিদ্যালয়ের যে অপূরনীয় ক্ষতি, শূন্যতা হয়েছে তা কখনো পূরণ হবে না।”
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়