Wednesday, November 24

কানাইঘাটে ‘মালচিং’ পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে সফল আশিক



মাহবুবুর রশিদ::


সিলেটের কানাইঘাটে ইউটিউব দেখে মালচিং পদ্ধতিতে ‘ব্ল্যাক সুইট তরমুজ’ চাষে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছেন আশিকুর রহমান নামের এক মাদরাসা শিক্ষার্থী। তরমুজ চাষে তাঁর এ সফলতার খবর এখন এলাকার মানুষের মুখে মুখে। কারণ মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষের খবর এর আগে কানাইঘাটে কোথাও শোনা যায়নি।

আশিকুর রহমান উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের বাউরবাগ পশ্চিম গ্রামের ইলিয়াস আলীর ছেলে। তিনি গাছবাড়ী জামিউল উলুম কামিল মাদরাসা ফাজিল প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছেন এই তরুণ। সম্প্রতি মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তরমুজ বাগানে পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন আশিকুর রহমান। মাত্র ১৪ শতক জমি বর্গা নিয়ে তরমুজ চাষ শুরু করেন। এখন তার জমিতে ছোট ছোট মাচায় ঝুলছে কালো রঙের তরমুজ। সাদা জালি ব্যাগ দিয়ে রশিতে বেঁধে রাখা রয়েছে প্রতিটি তরমুজ। তরমুজ বাগানের মাঝে মাঝে চাষ করেছেন শষাও। আর ক’দিন পর তরমুজগুলো বিক্রি শুরু করবেন । মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষের এ বাগান দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছুটে আসছেন লোকজন।  

তরমুজ চাষি শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়িতে বসে না থেকে বাবাকেও কৃষি কাজে সাহায্য করি। করোনাকালে হঠাৎ ইউটিউবে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষের ভিডিও দেখে আমি এ পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে আগ্রহী হই। অনেকটা শখের বসে তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন আশিক।

আশিকুর রহমান বলেন, মালচিং পেপারের দাম অনেক বেশি । তরমুজের বীজসহ সবমিলিয়ে তার খরচ পড়েছে ২৫ হাজার টাকা। ব্যাপক আকারে তরমুজের চাষাবাদ করতে তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা চান। নিজস্ব জমি থাকলে আরও বেশি জায়গা নিয়ে তরমুজ চাষ করতে পারতেন বলে  জানান আশিক।

আশিকের বাবা ইলিয়াস আলী বলেন,‘আমরা বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করি। নতুন পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে আমি খুবই খুশি।’

মালচিং পদ্ধতির সুবিধা সম্পর্কে আশিক বলেন, এ পদ্ধতিতে প্রথমে মালচিং পলিথিন দিয়ে বীজতলা নির্মাণ করা হয়। এরপর মালচিং পেপারে মুড়িয়ে বীজ জমিতে রোপণ করা হয়। এবার বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার পর মালচিং পেপার ছিদ্র করে দেওয়া হয়। যেহেতু বীজগুলো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো থাকে, তাই কোনো কীটপতঙ্গ আক্রমণ করতে পারে না। ফলে কীটনাশক ব্যবহারেরও প্রয়োজন হয় না। মালচিং পেপারে বীজতলায় সূর্যের তাপ কম লাগে,ফলে বীজতলার জায়গা ঠান্ডা থাকে। সাধারণ এ পদ্ধতিতে গাছ তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে,ফলনও ভালো হয়।

কানাইঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.এমদাদুল হক বলেন,‘আমরা মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে ওই শিক্ষার্থীর সফল হওয়ার খবরটি জেনেছি। এ পদ্ধতি আমাদের এখানে একেবারে নতুন একটি বিষয়। দুই একদিনের মধ্যে আমি বাগানটি পরিদর্শনে যাব। ওই শিক্ষার্থীকে যতটা সম্ভব সহযোগিতার চেষ্টা করব।




শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়