নিজস্ব প্রতিবেদক :
দলের পদবী নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী সুরাইঘাট এলাকায় বেপরোয়া চোরাচালান সহ মদ, ইয়াবা, জাল টাকার ব্যবসা, জমি দখল সহ নানা অপকর্মের ঘটনার সাথে জড়িত সর্বশেষ সাংবাদিকদের উপর হামলা ও লাঞ্চিতকারী তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে সৌচ্ছার হয়ে উঠেছেন কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলা আওয়ামীলীগের তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। স্থানীয় সাংবাদিকরা তোতা মিয়া কর্তৃক সরকার ও আওয়ামীলীগের নাম ভাংগিয়ে নানা অপকর্মের বিষয়টি লিখিত ভাবে সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এডঃ নাসির উদ্দিন খান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে জানানোর পর তার এসব দলবিরোধী কর্মকান্ড খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। গত শনিবার কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আয়োজিত ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ সভায় জেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পৌর মেয়র লুৎফুর রহমান তাদের বক্তব্যে বলেন, আওয়ামীলীগের পদ পদবী ব্যবহার করে কেউ অপকর্ম করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তোতা মিয়া কর্তৃক সাংবাদিকদের উপর হামলা তার বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের অভিযোগ ও সম্প্রতি সময়ে পত্রপত্রিকায় তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তা শীঘ্রই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তোতা মিয়া বর্তমানে জেল হাজতে থাকায় তার নানা অপকর্মের ঘটনা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। চোরাকারবারী ও কয়েকটি মাদক, ইয়াবা মামলার আসামী তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন তাহার হাতে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা হামলার শিকার অনেকে। স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৪ সালে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী দীর্ঘদিন থেকে সুরাইঘাট সীমান্ত এলাকায় চোরা চালানের সাথে জড়িত তোতা মিয়া সর্বশেষ ২০১৯ সালে হাতেনাতে ইয়াবা সহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। এছাড়া স্থানীয় বিজিবি’র দায়েরকৃত মামলা তার বিরুদ্ধে রয়েছে। সে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ার পর একজন মাদক, ইয়াবা ব্যবসায়ী, চোরাকারবারীকে আওয়ামীলীগের সভাপতি করায় তার পদ বাতিল করার জন্য সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে অনেক প্রতিবাদ করেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন দলে অনুপ্রবেশকারী তোতা মিয়া আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন সভাপতি হওয়ার পর থেকে দলের পদটি তার ব্যক্তি স্বার্থে সম্পূর্ণ ভাবে ব্যবহার করে এলাকায় আওয়ামীলীগের নাম ভাংগিয়ে বেপরোয়ারা হয়ে উঠে। সে ও তার ভাই জাকারিয়া আপতাব সহ পরিবারের অনেক সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা চোরাচালানের সাথে জড়িয়ে পড়ে এক চেটিয়া সরকারের নীতি পরিপন্থি মাদক ইয়াবা, জাল টাকার ব্যবসা সহ অনেকের জমি দখল, সোনাতনপুঞ্জি গ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার স্বরুপ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘর নির্মানে স্থানীয় প্রশাসনকে বাধা প্রদান, অর্ধ শতাধিক ঘরের দরজা জানালা ও বেশ কয়েকটি পানির মটর চুরি করায় তোতা মিয়া। দলের সম্পূর্ণ আদর্শ পরিপন্থি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীনদের ঘর নির্মানে বাধার সামিল। তোতা মিয়া সভাপতি পদটি ব্যবহার করে অল্প দিনে সে সহ তার ভাই জাকারিয়া কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া সহ এলাকায় তার নিজস্ব একটি বাহিনী গড়ে তোলে অনেকের জমি দখল, সালিশ বিচারের নামে মোটা অংকের টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়া নিরীহ লোকজনদের মদ ও ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধ জেমসলিও ফারগুশন নানকা’র উপর হামলার চেষ্টা, সংখ্যালঘু একটি পরিবারের ১০ বিঘা জমি জোর পূর্বক ভাবে দখল করা সহ ইউপি চেয়ারম্যান নানকা, লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি আওয়ামীলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও উপজেলা কমিটির সদস্য আব্দুল খালিক মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক ইউপি সদস্য কাউছার আহমদ সহ সংখ্যালঘু পরিবারের অনেক সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে তোতা মিয়া। দলের আদর্শ বিরোধী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তোতা মিয়ার এসব বেপরোয়া অপরাধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় অনেক ত্যাগী আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের হয়রানী ও এলাকায় কোনঠাসা করে রেখেছে তোতা মিয়া ও তার সহযোগিরা। দল ও সরকারের ভাবমুর্তি মারাত্মক ভাবে ক্ষুন্ন করে তোতা মিয়া আওয়ামীলীগের ইউপি সভাপতির পদটি ব্যবহার করে এলাকায় এক ধরনের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম, সাধারন লোকজনকে হয়রানী সহ রাষ্ট্র ও সমাজ বিরোধী চোরাচালান ব্যবসা, বাদশা বাজারে মদ, জুয়ার আসর বসানো এলাকায় নর্তকীদের এনে অশ্লীল গানের আসর শুরু করে এমন কোন অপরাধ নেই তোতা মিয়া দলের নাম ভাংগিয়ে করছে না বলে দলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের কাছে নালিশ দেওয়ার পরও তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে কোন ধরনের সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন না করায় সে বেপরোয়া হয়ে যা ইচ্ছা তা এলাকায় করে যাচ্ছে। সর্বশেষ স্থানীয় সাংবাদিকরা তার ভাই আপতাব উদ্দিন জাল টাকা নিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতারের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় তোতা মিয়া সাংবাদিকদের উপর হামলা, শারীরিক নির্যাতন ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে সাংবাদিক সমাজকে তুলে ধরে বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করলে এলাকায় জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সাংবাদিকদের দায়েরকৃত মামলায় বর্তমানে তোতা মিয়া জেল হাজতে থাকায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ তার বেপরোয়া অপরাধ কর্মকান্ডের মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তোতা মিয়াকে দল থেকে বহিস্কার করার জন্য ইতিমধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করে তোতা মিয়ার দল ও সরকার বিরোধী কর্মকান্ড অবহিত করেছেন।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়