কানাইঘাট প্রতিনিধি : সিলেটের কানাইঘাটে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসবমূখর পরিবেশে নানা অনুষ্টানের মধ্যেদিয়ে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্টানমালা ও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে কানাইঘাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও প্রশাসন চত্ত্বরে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জির উপস্থিতিতে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড, উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, কানাইঘাট প্রেসক্লাব, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, কানাইঘাট পৌরসভা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মানুষ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদত বরণকারী শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তপক অর্পন করেন।
সকাল ৮টায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ কুচওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি ও কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম পিপিএম।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ও কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় কুচকাওয়াজ পরবর্তী বিভিন্ন প্রতিষ্টানের কর্মকর্তাদের মাঝে সম্মাননা পুরষ্কার প্রধান করা হয়। সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীরমুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জির সভাপতিত্বে ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন, কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি আব্দুল করিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খাদিজা বেগম, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি আবিদা সুলতানা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ অভিজিৎ শর্মা, থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম পিপিএম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন, বাণীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ, দিঘীরপাড় পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন কাজল, উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজমুল হক, নুরুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার আফতাব উদ্দিন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম হারুন, রিংকু চক্রবর্তী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান আব্দুল হেকিম শামিম।
অনুষ্ঠান শেষে বীরমুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা উপকরন বিতরণ করা হয়। বাদ যোহর কানাইঘাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়।
এছাড়াও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবি সংগঠন ও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিনব্যাপী নানা ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় ৫০তম জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে।
স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর দ্বিতীয় দিন ২৭ মার্চ বাংলাদেশের এক অনন্য অর্জন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরনে দেশব্যাপী উৎযাপন অনুষ্টানের অংশ হিসাবে উপজেলা সদরে বর্নায়িত র্যালি এবং প্রশাসণ চত্ত্বরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়ন ও সেবার পরিধি তুলে ধরে দুই দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। প্রশাসনসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশকে ধারণ করে। সর্বক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধের চেতনা লালনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে সবাইকে দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
কানাইঘাট প্রেসক্লাবের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে ঐতিহ্যবাহী কানাইঘাট প্রেসক্লাব। স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে কানাইঘাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তপক অর্পন করেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ। এরপর সকাল ৮টায় প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আনুষ্টানিক ভাবে জাতীয় ও প্রেসক্লাবের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়া প্রেসক্লাব কার্যালয় আলোক সজ্জা করণ করা হয়।
স্বাধীনতা দিবসে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনুষ্টানে যোগদান পরবর্তী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন চৌধুরী, নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি ও থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম পিপিএমের হাত থেকে উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া সম্মাননা বিজয় স্মারক গ্রহণ করেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ। বিকেল ৩টায় ক্লাব কার্যালয়ে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ক্লাব সভাপতি রোটারিয়ান শাহজাহান সেলিম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ৫০ বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন অগ্রগতি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আব্দুন নুর, সহ-সম্পাদক মাহবুবুর রশিদ, দপ্তর সম্পাদক মুমিন রশিদ, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহীন আহমদ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সহযোগি সদস্য মাহফুজ সিদ্দিকি, সাংবাদিক জয়নাল আজাদ, সংবাদকর্মী আব্দুল কাহির।
আলোচনা সভায় প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে সাংবাদিকদের গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। তৎকালীন পাকিস্থান শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ধমিয়ে রাখার জন্য সংবাদপত্রের উপর অঘোষিত ভাবে সেন্সরশীপ আরোপ করেছিল। কিন্তু সাংবাদিকরা পাকিস্থানী শাসক গোষ্ঠীর নির্যাতন-নিপীড়ন, গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জনমত তৈরি করেছিলেন, বিধায় ৯মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে স্বাধীন করতে পেরেছিলাম। দেশ যখন সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে টিক সেই সময় আমরা স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে আরো এগিয়ে নিতে এবং মানুষের অধিকার আদায়ে সাংবাদিকদের দেশপ্রেমে উদ্বোদ্ধ হয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের আহবান জানান প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়