ফিচার ডেস্ক:
দুনিয়াতে খিদার যন্ত্রণা সহ্য করার ক্ষমতা কারোই নেই। না খেয়ে মারা যাওয়া যে কি কষ্টের তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। খিদার তাড়নায় অনেকেই এমন কিছু খান যা খাবারের তালিকায় পড়ে না। তারপরও বাধ্য হয়ে এমন সব অখাদ্যই খান পৃথিবীর কিছু বাধ্য হয়ে যাওয়া মানুষ।
পরিবারে বাবা এমন একজন ব্যক্তি যে অন্য সব সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দেন। এর জন্য নিজে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সন্তানদের খুশি রাখেন। নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যও বিসর্জন দেন তিনি। তেমনই একজন বাবাকে নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের প্রতিবেদন। যিনি শুধু বাবা হয়েই নয়, ভাই হয়েও পরিবারের অন্য ভাই-বোনদের মুখে খাবার তুলে দিয়ে নিজে কাদা খেয়ে পেট ভরিয়েছেন।ভারতের ২৮তম প্রদেশ ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা কারু পাসওয়ান। যার বয়স একশ। ১৯১৯ সালে জন্ম হয় তার। ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, ঝাড়খণ্ডের এই বৃদ্ধ প্রতিদিন নিয়ম করে কাদা খান। এক কেজি করে কাদা না খেলে ঘুম আসে না তার। বৃদ্ধের এই কাদা খাওয়া দেখতে দূরদূরান্তের মানুষের ঢল নামে তার বাড়িতে।
কারু পাসওয়ান জানান, তার এগারো বছর বয়স থেকেই এই কাদা খাওয়ার অভ্যাস হয়েছে। এতদিনে সেই অভ্যাস পরিণত হয়েছে নেশায়। কাদা খাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই খিদের জ্বালায় পেট ভরাতে কাদা খেতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। তার শৈশব কেটেছে খাবারের খোঁজ করতে করতে।
খাবার না পেয়ে কাদা খেয়ে পেট ভরাতে হত তাকে। অভাবের সংসারে খাওয়ার মুখ থাকে অনেক। তাই এক টুকরো রুটি ভাই-বোনের মুখে তুলে দিতেন এগারো বছরের কারু। আর নিজের পেট ভরাতেন কাদা খেয়ে।
কারুর বড় ছেলে সিয়া রাম পাসওয়ান জানিয়েছেন, পরিবারের লোকেরা তাকে অনেকবার এর থেকে বিরত করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেননি। যে ভাবেই হোক মাঠ ঘাটে ঘুরে কাদা তুলে খেয়ে ফেলেন তিনি।
২০১৫ সালে বিহারের সবর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এই বিরল খাদ্যাভ্যাসের জন্য তাকে বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করেছেন। এই নিয়ে অবশ্য মোটেও গর্বিত নন তিনি। কারণ এই স্বভাব এই নেশার কারণ মনে করিয়ে দেয় তার বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা।
খবর বিভাগঃ
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়