নিজাম উদ্দিন :
কানাইঘাট উপজেলার করোনার ঝুঁকিতে রয়েছে এ নিয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বার বার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে আসছেন।
কিন্তু তারপরও জনসাধারণের মধ্যে সচেতনার অভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা কানাইঘাটে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
গত শুক্রবার কানাইঘাট উপজেলায় সর্বোচ্চ ৭ জন করোনায় আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের মধ্যে উপজেলার পশ্চিম সর্দারমাটি গ্রামের রমজান আলীর পুত্র ফরহাদ (২৮), দর্জিমাটি গ্রামের জামাল উদ্দিনের পুত্র মিজান (২০), ব্রাহ্মণগ্রাম গ্রামের আব্দুল মালিকের পুত্র জাকির আহমদ (২৫) গাজীপুরে গার্মেন্টসে চাকুরী করতেন। এ ৩ জন সহ মোট ১৪ গত ১৪ মে একটি প্রাইভেট গাড়ী যোগে গাজীপুর থেকে কানাইঘাট উপজেলায় তাদের নিজ নিজ বাড়িতে আসেন।
গাজীপুর ফেরত ১৪ জনের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ফরহাদ, মিজান ও জাকির সহ কয়েকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দেন। গাজীপুর ফেরত অর্ধেক এখনও নমুনা দেন নি বলে জানা গেছে।
একই দিনে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসা পৌরসভার রায়গড় গ্রামের জ্যেতির ভূষন চৌধুরীর পুত্র ও মা-মণি ডায়গনস্টিক সেন্টারের ল্যাবে টেকনেশিয়ান দ্বীপ চৌধুরী, আজাদ ডায়গনস্টিক সেন্টারের ল্যাব টেকনেশিয়ান পাবনার বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন, সদর ইউনিয়নের বীরদল পুরানফৌদ গ্রামের অনিল দাসের পুত্র হাসপাতালের অবস্থিত রাহুল ফার্মেসীর সত্ত্বাধিকারী অজিত দাস (৩০) ও লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির কুওরঘড়ি গ্রামের ফরিদ আহমদের পুত্র সুলতান আহমদ (২৫) আক্রান্ত হন। এ নিয়ে উপজেলায় মোট করোনা আক্রান্ত্রের সংখ্যা ১২ জন এবং সুস্থ ১ জন হয়েছেন।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- করোনার পজেটিভ রিপোর্ট আসা অনেকে হোম কোয়ারেন্টাইন সঠিকভাবে মানছেন না। তাদের পরিবারের সদস্যরা এলাকায় অবাধ বিচরণ করছেন বলে বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে বলছেন।
এছাড়া করোনার ডেঞ্জার জোন গাজীপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন কানাইঘাটে অবাধে আসছেন। ব্যবসা বাণিজ্য সচল থাকায় হাট-বাজারগুলোতে মানুষের ভীড় বেড়েছে। সর্বত্র অসচেতনতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। যদিও কানাইঘাট থানা পুলিশ মাঠ পর্যায়ে সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন ও করোনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে উপজেলা বাসীকে সচেতন করার জন্য থানা পুলিশ কাজ করে গেলেও পুলিশ যেখানে যায় সেখানে কিছুক্ষণের মধ্যে লোকজন সরে যান, আবার ভীড় করেন এই হচ্ছে কানাইঘাটের বর্তমান অবস্থায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডাঃ শেখ শরফুদ্দি নাহিদ জানিয়েছেন তার হাসপাতালে কর্মরত একজন ডাক্তার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সরা কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিদিন হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বেড়েই চলছে।
আজ শনিবার হাসপাতালে ৩৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে গাজীপুর সহ অন্যান্য এলাকা থেকে কানাইঘাটে ফেরত আসা। কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত পরিবারের সদস্য রয়েছেন। আমরা যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে এসে নমুনা দেওয়ার জন্য বলেছি। করোনায় আক্রান্ত অনেকে কোয়ারেন্টাইন মানছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলে বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান ও থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএমকে জানিয়েছি।
কারন আমরা চিকিৎসা দিব, করোনায় আক্রান্তদের পরিবারকে সেইফ রাখা অনেকটা প্রশাসন ও থানা পুলিশের কাজ। আজ রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কানাইঘাটে করোনায় কারো পজেটিভ রিপোর্ট আসেনি বলে তিনি জানান।
কানাইঘাট নিউজ ডটকম/২৪ মে ২০২০
খবর বিভাগঃ
coronavirus
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়