মুফতী শহীদুল ইসলাম::
প্রত্যেক মানুষের কাজের প্রতিদান তার নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে,
انما الاعمال بالنيات وانما لامرئ ما نوي-
অর্থাৎ, প্রত্যেক কাজের প্রতিদান নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। নিশ্চয় মানুষের জন্য তাই রয়েছে, যা সে নিয়ত করে (সহিহ বুখারী, হাদিস নম্বর -১)।
এ জন্য প্রত্যেক কাজের প্রতিদানের জন্য নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। নামাজ, রোজাসহ অন্যান্য সব ইবাদত সঠিকভাবে পালন করার জন্যে এটা জরুরি। আমরা যেহেতু পবিত্র রমজান পালন করছি। আর এই সময়ে রোজার যে বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত থাকি তা হচ্ছে, রোজার নিয়ত কি, তা কিভাবে করতে হবে, আরবিতে নাকি বাংলায়, মুখে উচ্চারণ করে নাকি মনে মনে ইত্যাদি? তাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নেয়া জরুরি।
নিয়তের পরিচয় :
প্রথম বিষয় হচ্ছে, নিয়ত কি জিনিস তা জানা। নিয়ত হলো অন্তরে কোনো কাজের দৃঢ় সংকল্প করা। যেহেতু নিয়ত করার বিষয়টি অন্তরের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাই সেহরি খাওয়ার পর সুবহে সাদিকের পূর্বে মনে মনে এভাবে বলা যে, আমি আগামীকাল রোজা রাখবো। মনে মনে এ সংকল্পের দ্বারাই তার নিয়ত হয়ে যাবে। মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জরুরি নয়। যারা মনে করেন যে, মুখে উচ্চারণ করে রোজার নিয়ত করা জরুরি তাদের কথা সঠিক নয়। তবে কেউ যদি মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করে। তার নিয়তও হয়ে যাবে। তবে সেটাকে আবশ্যক মনে করা যাবে না। (রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩৯৩)
আরবিতে নিয়তের বিধান :
আর কেউ প্রচলিত আরবি নিয়ত পড়ে রোজা রাখার নিয়ত করলে তার নিয়তও হয়ে যাবে। তবে এটা মনে রাখতে হবে যে, আরবিতে নিয়ত করাও কোনো জরুরি নয়। এবং এর জন্য আলাদা কোনো সওয়াবও হবে না।
রমজানের রোজার নিয়তের সময় :
রমজানের রোজার নিয়তের সময় :
রমজানের ফরজ রোজা, নির্দিষ্ট মানতের রোজা ও নফল রোজার নিয়ত সুবহে সাদিকের পূর্বে করতে না পারলে দ্বি-প্রহরের পূর্ব পর্যন্ত নিয়ত করার অবকাশ আছে। তবে দ্বি-প্রহরের পরে নিয়ত ধর্তব্য হবে না। অর্থাৎ দ্বি-প্রহরের পর নিয়ত করলে রোজা আদায় হবে না। (রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩৯৩)।
সেহরি খাওয়াও নিয়তের জন্য যথেষ্ঠ :
কেউ রোজা রাখার নিয়তে সেহরি খেলে, সেহরি খাওয়ার দ্বারাও তার নিয়ত হয়ে যাবে। তার জন্য আলাদাভাবে নিয়ত করা জরুরি নয়। (রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩৯৩)।
খবর বিভাগঃ
ইসলাম
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়