কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
বুধবার (২৫ মার্চ) জাতির উদ্দেশে দেওয়া
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অতি প্রয়োজন না হলে আপনারা ঘরের
বাহিরে যাবেন না। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ঘরেই নামাজ আদায় করুন। এ সময়
তিনি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদেরও ঘরে বসে প্রার্থনা করার অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই
মুহূর্তে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার মানুষকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা। 'আপনার পরিবার, পাড়া প্রতিবেশি, এলাকাবাসী এবং
সর্বোপরি দেশের মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এসব নির্দেশনা মেনে চলা
প্রয়োজন।'
তিনি বলেন, গত জানুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে
চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছিল। এটি এখন বিশ্বের
১৯৫টির মধ্যে ১৬৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল পর্যন্ত ৪ লাখ ২২ হাজার ৮ শোরও
বেশি মানুষ এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এবং ১৮ হাজার ৯০৭ জন মানুষ
মারা গেছেন। ১ লাখ ৯ হাজার ১০২ জন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সময়ে করমর্দন বা
কোলাকুলি করা থেকে বিরত থাকুন। আপনারা এক ধরনের আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তার মধ্যে
দিন কাটাচ্ছেন। যাদের আত্মীয়স্বজন বিদেশে আছেন, তারাও নিকটজনদের জন্য
উদ্বিগ্ন। সবার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছি। কিন্তু এই সংকটময় সময়ে আমাদের
ধৈর্য ও সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।’
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের
উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা করোনা ভাইরাস-আক্রান্ত দেশ থেকে
স্বদেশে ফিরেছেন, সেসব প্রবাসী ভাই-বোনদের কাছে অনুরোধ - আপনাদের হোম
কোয়ারেন্টিন বা বাড়িতে সঙ্গ-নিরোধসহ যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেগুলো
অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলুন।’
‘মাত্র ১৪ দিন আলাদা থাকুন। আপনার পরিবার,
পাড়া-প্রতিবেশী, এলাকাবাসী এবং সর্বোপরি দেশের মানুষের জীবন বাঁচানোর
জন্য এসব নির্দেশনা মেনে চলুন।
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার তাগিদ
দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা ভাইরাস
প্রতিরোধ সহজ হবে। ঘনঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশি দিতে হলে
রুমাল বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিবেন। যেখানে-সেখানে কফ-থুথু
ফেলবেন না।’
আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন ও সর্তক
হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আতঙ্কিত হবেন না। আতঙ্ক মানুষের
যৌক্তিক চিন্তাভাবনার বিলোপ ঘটায়।’
তিনি বলেন, ‘সব সময় খেয়াল রাখুন আপনি,
আপনার পরিবারের সদস্য এবং আপনার প্রতিবেশীরা যেন সংক্রমিত না হন। আপনার
সচেতনতা আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং সর্বোপরি দেশের মানুষকে সুরক্ষিত
রাখবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে
অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। আমাদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমাদের শিল্প
উৎপাদন এবং রপ্তানি বাণিজ্যে আঘাত আসতে পারে। এই আঘাত মোকাবেলায় আমরা কিছু
আপৎকালীন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্প
প্রতিষ্ঠানের জন্য আমি ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা
করছি। এ তহবিলের অর্থ দ্বারা কেবল শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা
যাবে।’
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়