প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এ হুমকির গুরুত্ব অনুধাবন করে বিশ্ব সম্প্রদায়কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাাচ্ছি।
সোমবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও ভারতের অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) যৌথভাবে এ ডায়ালগের আয়োজন করেছে। ‘প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও ইন্দো-প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হওয়া এ ডায়লগে বিভিন্ন দেশের ১৫০ জনেরও বেশি আলোচক অংশ নেবেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে বর্তমান শতাব্দীকে ‘এশিয়ার শতাব্দী’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু এ অঞ্চলের সমৃদ্ধির জন্য অবশ্যই শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।
দারিদ্র্যকে এ অঞ্চলের দেশগুলোর সাধারণ শত্রু উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সব কার্যক্রম দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে জনগণকে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন নিশ্চিতের লক্ষ্যে পরিচালিত হওয়া উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী একটি দেশ। বিভিন্ন কারণে এ মহাসাগরটির বিশাল তাৎপর্য রয়েছে। ভারত মহাসাগর এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে এমন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুট নিয়ে গঠিত।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী কনটেইনার চালানের অর্ধেক এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানির ৮০ শতাংশ বাণিজ্য হয় ভারত মহাসাগর দিয়ে। সেই সাথে বিশ্বব্যাপী সংরক্ষিত তেলের ১৬.৮ শতাংশ এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ২৭.৯ শতাংশ এই মহাসাগরে অবস্থিত। আবার বিশ্বের ২৮ শতাংশ মৎস্য এই ভারত মহাসাগর থেকেই সংগ্রহ করা হয়। ভারত মহাসাগর অপরিসীম সম্পদের উৎস এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথের অংশ হওয়ায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হেসেবে বিবেচিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে বঙ্গোপসাগর বা ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সমুদ্রসীমা ও সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে শক্ত প্রতিযোগিতা বা একে অন্যের সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত থাকা সুনীল অর্থনীতি বা সমুদ্র অর্থনীতির বিকাশে সহায়ক হবে না বরং এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থীতিশীলতার জন্য হুমকি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আরো মনে করি যে সুনীল অর্থনীতির টেকসই বিকাশের পাশাপাশি সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে উপকূলীয় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা, সৌহার্দ্যপূর্ণ, মর্যাদাপূর্ণ এবং ন্যায়সঙ্গত সম্পর্ক থাকা দরকার।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং ওআরএফ প্রেসিডেন্ট সমির সরণ। তার আগে বিআইআইএসএস মহাপরিচালক একেএম আব্দুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন।
সূত্র:
ডেইলি বাংলাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়