Thursday, October 3

নদীর বালি তুলে সোনা খোঁজেন তারা

ফিচার ডেস্ক 

নদীর পানির সঙ্গে বেয়ে চলে সোনা! অবাক কাণ্ড! সত্যিই কি এমন নদী রয়েছে? আপনার প্রশ্নের উত্তরটি কিন্তু হ্যাঁ। নদীর সঙ্গে মানব সভ্যতার গাঢ় সম্পর্ক। পানীয় জল, বিদ্যুৎ উৎপাদন, কলকারখানা, নগর গড়ে ওঠা, সবটাই নদীর উপর নির্ভরশীল। কিন্তু জানেন কি এই বিশ্বে এমন কিছু নদী রয়েছে যেখান থেকে সোনা পাওয়া যায়! তেমনই কিছু সোনার নদীর সন্ধান রইল।

ঝাড়খণ্ডের সুবর্ণরেখা নদী: এই নদীর নামের মধ্যেই সোনা লুকিয়ে রয়েছে। এই নদী দিয়ে নাকি পানির সঙ্গে সোনাও বয়ে চলে। এমনটাই কথিত রয়েছে। সুবর্ণরেখা নদীর উৎপত্তি রাঁচীর পিসকা গ্রাম থেকে। শোনা যায়, এক সময় নাকি এই পিসকা গ্রামে সোনার খনি ছিল। সেই জন্যই এই নদীর নাম সুবর্ণরেখা। আর সেই খনি থেকেই সোনা নদীতে মিশে যায়। বর্ষার পর সুবর্ণরেখায় পানি কমে গেলে তীরে নাকি সোনার টুকরো পড়ে থাকে। আজও দেখা যায় স্থানীয় মানুষেরা বালি থেকে সোনা খুঁজছেন।
সূবর্ণরেখা নদী
সূবর্ণরেখা নদী
খারকাই নদী: সুবর্ণরেখার উপনদী হল খারকাই। জামশেদপুরের আদিত্যপুরের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে এই নদী। এই নদীর দৈর্ঘ্য মাত্র ৩৭ কিলোমিটার। এই নদীতেও নাকি সোনা পাওয়া যায়। সুবর্ণরেখা নদীর সঙ্গে যোগসূত্রের কারণে এই খারকাইয়েও সোনা ভেসে আসে। এখানেও স্থানীয় মানুষদের সোনার সন্ধান করতে দেখা যায়। তাদের মতে, সারাদিন খোজার পর চালের থেকেও ছোট আকারের সোনার টুকরো মেলে।
ক্লনডাইক নদী: কানাডার ডসন শহরের ইওকন নদীর উপনদী হল ক্লনডাইক। ওজিলভিয়ে পর্বত থেকে সৃষ্টি হয়েছে নদীটি। এই নদীর আশেপাশে সোনা খুঁজে পেতে পারেন আপনিও। ১৮৯৬ সালে ১৬ অগস্ট প্রথম এই নদীতে সোনার সন্ধান মেলে। মার্কিন খনিজ সন্ধানকারী জর্জ কারম্যাক প্রথম এর সন্ধান দেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ১৮৯৬ সাল থেকে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত রীতিমতো গোল্ড রাশ হয় ডসন শহরের ক্লনডাইক নদীতে। 
ক্লনডাইক নদী
ক্লনডাইক নদী
লক্ষাধিক খনিজ সন্ধানকারী বেরিয়ে পড়েন ক্লনডাইকের উদ্দেশে। জানা যায়, তাদের অনেকে সোনা উত্তোলন করে প্রচুর ধনী হয়ে গিয়েছিলেন। আবার অনেকে কিছুই করে উঠতে পারেননি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব আলাক্সার চিলকুটের মধ্যে দিয়ে বরফে ঘেরা অনেকটা রাস্তা পাড়ি দিয়ে তারা পৌঁছায় ডসন শহরে। ১৮৯৬ সালের আগে পর্যন্ত এই শহরের জনসংখ্যা ছিল ৫০০। 
১৮৯৬ থেকে ১৮৯৯ সালের মধ্যে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ৩০ হাজার। অস্থায়ী বাড়ি বানিয়ে তারা বসবাস করতে শুরু করেন এই দুর্গম শহরে। এই নদীতে খনন শুরু করেন অনেকে। সেখানে নদীর পাড়ে বরফ হয়ে যাওয়া বালি তুলে, বরফ গলিয়ে সোনা উদ্ধার করা হয়। এখানে সোনা উত্তোলনে কোনো আইনি বাধা নিষেধ নেই। চাইলে যেকোনো ব্যক্তি সোনা খুঁজতে পারেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়