আলিফা মাঝে মাঝে বলতো, আব্বু আজকে তোমার জন্য আল্লাহ কাছে দোয়া করেছি। আল্লাহ তোমাকে অনেক টাকার মালিক করে দিবে। আমার একটা বোন আসবে। আমরা দুইজনই তোমাকে আব্বু বলে ডাকবো। তুমি আমাদের দুইজনকে আদর করবে।
আলিফা আরো বলতো, আমি বড় হয়ে ডাক্তার হবো। আমি তোমাকে ও মাকে চিকিৎসা দেবো। ডাক্তার হয়ে অনেকের অনেক রোগ ভাল করবো।
কিন্তু আর ডাক্তার হতে পারলো না আলিফা। আমার স্ত্রী ও মেয়েকে গলা কেটে ও
কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমাকে আব্বু বলার আর কেউ রইলো না, কেউ ডাক্তার হবে
না। আলিফা আর কোনদিন সমাজের মানুষের সেবা করা স্বপ্ন দেখবে না। কান্নাজড়িত
কণ্ঠে এসব কথা বলছিলেন টাঙ্গাইলের ভাল্লুককান্দি এলাকার মো. আলামিন।
আলামিন বলেন, প্রতিদিনের মতো দোকান শেষে আমি রাতে বাড়ি ফিরছি। বাড়ি গেট
খোলা দেখেই সন্দেহ হয়। গেটের সামনেই আমার চার বছরের মেয়ে আলিফার রক্তাক্ত
দেহ পড়ে থাকতে দেখে পাশের বাড়ির খালু ফরহাদ মিয়াকে ডেকে এনে মেয়েকে ধরে
কাদতে ছিলাম। আমার স্ত্রী লাকিকে একাধিকবার ডাকার পর কোনো সাড়া শব্দ না
পেয়ে সামনের দিকে তাকাতেই আমার স্ত্রীরও গলাকাটা মরদেহ দেখতে পাই। ততোক্ষণে
আশপাশের মানুষ চলে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশও চলে আসে। মো. আল আমিন আরো বলেন, আমাদের কোনো শত্রু ছিলো না। কে আমার এতো বড় ক্ষতি করলো। আমি তো করো কোন ক্ষতি করি না। তাহলে মানুষ কেন আমাকে সর্বহারা করে দিলো। আমার চার বছরের আলিফাকে তারা মেরে ফেললো!
লাকির মা শেফালি বলেন, আমার নাতনি আলিফার ডাক শুনলে আমার প্রাণ জুড়িয়ে যেতো। এখন থেকে তার ডাক আমার শুনতে পারবো না। আমার মেয়েও কোন দিন আমাকে আর মা বলবে না। মেয়ের বাড়ি গেলে আলিফা বলতো আমি বড় হয়ে মানুষের সেবা করবো। আমি আমার মেয়ে-নাতি হত্যার বিচার চাই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে পায়ে ধরে বলি আমার নাতনি ও মেয়েকে যারা প্রাণে মারছে তাদের ফাঁসি দাবি করছি।
ওসি মীর মোশাররফ হোসেন জানান, কে বা কারা তাদের বাড়িতে ঢুকে তাদেরকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে, কেন, কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা এখনো পরিস্কার নয়। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ বার্তা
জাতীয়
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়