ফিচার ডেস্ক :
আপনি জেনে অবাক হবেন, পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে এমনিতেই কিন্তু বহুভাষাভাষী জনগণের আবাস। এখানে ১৬টি আলাদা জাতিগোষ্ঠী বাস করেন, যাদের সবারই আলাদা ভাষা ও সংস্কৃতি আছে। এই দেশে ‘ক্রিও’ নামক ভাষা কথ্য ভাষা হিসেবে বেশি প্রচলিত।
তা স্বত্তেও দাফতরিক ভাষা হিসেবে ইংরেজি স্বীকৃত। এমন একটি বহুভাষা-সংস্কৃতির দেশ শুধু বাংলাদেশিদের প্রতি ভালবাসা কিংবা কৃতজ্ঞতা থেকে বাংলা ভাষাকে তাদের রাষ্ট্রে সম্মানসূচক রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিয়েছে। এমন স্বীকৃতি বাংলা ভাষাভাষী জাতি হিসেবে আমাদের জন্যে নিঃসন্দেহে সম্মানের, গর্বের।যোগাযোগের ভাষা হিসেবে শান্তিরক্ষী বাহিনী ইংরেজির সঙ্গে বাংলাও ব্যবহার করতেন। স্বভাবতই বাংলা বুঝতে পারতেন না স্থানীয়রা। সৈন্যরা তাই মাঝে মধ্যে টুকটাক বাংলাও শেখাতে শুরু করেন তাদের। মজার ব্যাপার হলো, স্থানীয়রা বাংলাকে আগ্রহের সঙ্গে গ্রহণ করতে শুরু করে, শিখতে শুরু করে।
সিয়েরা লিওনের যেখানে বাঙ্গালি সেনারা অবস্থান করতেন, ওইখানেই স্থানীয় তরুণদের কাউকে কাউকে দেখা যেত বাংলায় কথা বলতে। বাঙ্গালি সংস্কৃতির সঙ্গেও সিয়েরা লিওনের মানুষেরা পরিচিত হতে শুরু করেছিলেন সেই সময়টায়। সভা বা কোনো অনুষ্ঠানে বাংলা গান নাচ হতো মাঝে মধ্যে।
সিয়েরা লিওনে শান্তিপ্রতিষ্ঠায় আর দেশ গঠনে বাঙ্গালি সেনাদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপই ২০০২ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট আহমদ তেজান কাব্বাহ বাংলা ভাষাকে সিয়েরা লিওনের অন্যতম সরকারি ভাষার (সম্মানসূচক) স্বীকৃতি ঘোষণা দেন।
সেই সময়ে দেশটিতে শান্তিরক্ষা মিশনে যান বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনী। জাতিসংঘের মিশনগুলোতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মিশনের বেশ সুনাম আছে। সিয়েরা লিওনেও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনী দেশটিতে শান্তি ফেরানোর পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশি সেনাবাহিনী দেশটিতে গৃহযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশ পুনঃগঠন এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণেও অবদান রাখে। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবদান সম্পর্কে সিয়েরা লিওনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আহমদ তেজান কাব্বাহ বলেছিলেন, এখন থেকে সিয়েরা লিওনে বাংলাও অফিসিয়ালি সম্মানসূচক রাষ্ট্রভাষা। উল্লেখ্য, ২০০২ ছিল ভাষা আন্দোলনের ৫০ বছর পূর্তির বছর। সেই মুহুর্তে ইংরেজির পর সিয়েরা লিওনে সম্মানসূচক ‘অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ’ হিসেবে বাংলা দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃত।
খবর বিভাগঃ
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়