Wednesday, September 11

মৃত্যুর আগে ফিলিস্তিনি কারাবন্দির লেখা আবেগঘন চিঠি

নিজ ভূখণ্ডের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসায় দখলদার ইসরায়েলিদের সঙ্গে ফিলিস্তিন মানুষের নিরন্তর সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে। তাদের একজন ৪৭ বছর বয়সী বাসসাম আল-সায়েশ। যিনি সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনীর অত্যাচারে মারা গেছেন। 

দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর হাতে বন্দি স্ত্রীকে দেখতে এসে কারারুদ্ধ হয়েছিলেন বাসসাম আল-সায়েশ। আর কারাগারেই মৃত্যুবরণ করেন ৪৭ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি। 
ইসরায়েলের কারাগার থেকে দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এ মুসলিম বন্দি মৃত্যুর আগে লিখেছেন এক আবেগঘন চিঠি। যাতে রয়েছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার মতো বাণী।
‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
হয়তো তোমাদের বলা এই আমার শেষ কথা, আমি জীবনের শেষ দিনগুলোর একেবারেই শেষ মুহূর্তে, শ্বাস-প্রশ্বাসের অন্তিমকালে। আমার প্রথম কথা- ‘আমি তোমাদের সবাইকে ভালবাসি’।
আমার মাতৃভূমি, আমার দেশের প্রতি শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক। নাবলুসের উপর নাজিল হোক আল্লাহর রহমত। আমার সেসব স্মৃতিসমূহ অমলিন থাকুক যেগুলো মাতৃভূমির সঙ্গে আমার ভালোবাসাকে দৃঢ় করেছে। আমার পরিবার-প্রতিবেশীকে সালাম। আমার মসজিদ-মিহরাব, জামিয়া ও বন্ধুদের উপর প্রশান্তির বৃষ্টি ঝরুক।
যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আমাকে দুর্দিনে সাহায্য করেনি তাদের কথা বাদই দিলাম, তবে তোমাদের কাছে আমার শেষ ওসিয়ত ও উপদেশ-
‘ইসরায়েলের কারাগারে আমার অসুস্থ বন্দি ভাইদের জুলুম-অত্যাচার ও সীমাহীন ব্যথা-বেদনার অন্ধকার ওই কারাপ্রকোষ্ঠে ফেলে রাখতে দিও না। তোমাদের কাছে আমার আকুল আবেদন- ইসরায়েলের কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্ত করে আমার প্রতি রহম করো তোমরা।’
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের এক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর থেকে বাসসাম আল-সায়েশ-এর স্ত্রীকে আটক করা হয়। আর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসে তিনি গ্রেফতার হন।
বহুদিন কারাভোগের পর গেল রোববার কারাগারে অত্যাচার, নির্যাতনে ও বিনাচিকিৎসায় মারা গেছেন বাসসাম আল-সায়েশ। কারাগারে নানা শারীরিক সমস্যায় ভোগেও এ ফিলিস্তিনি পাননি কোনো চিকিৎসা।
বাসসাম আল-সায়েশ এর চিঠির ভাষাই বলে দেয়, ইসরায়েলের অন্ধকার কারাপ্রকোষ্ঠে অত্যাচার-নির্যাতনে মৃত্যুর অপেক্ষায় আছে অসংখ্য বন্দি ফিলিস্তিনি। যাদের ভাগ্যে তার মতোই করুণ মৃত্যু অপেক্ষা করছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়