তিন লাখ টাকা পেয়েও ফিরিয়ে দিয়ে উদারতার পরিচয় দেয়া রিকশাচালক সাজ্জাদ
হোসেনের প্রশংসায় এখন পঞ্চমুখ পুরো নওগাঁবাসী। নওগাঁ শহরের রিকশাচালকদের
মুখে মুখে এখন শুধুই তার নাম।
সততার পরিচয় দেয়া এ রিকশাচালক প্রমান করেছেন যে সৎ মানুষ এখনও আছে বলেই এ সমাজটি টিকে আছে।
জানা যায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে শিক্ষক আবদুল হাকিম সপরিবারে
রাজশাহী যাওয়ার উদেশে শহরের মুক্তির মোড় থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় শহরের
বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ড যান। রাজশাহীর বাসে উঠে বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু দূরে
গিয়ে মনে হয়, তার সঙ্গে থাকা কম্পিউটার ব্যাগের মধ্যে তিন লাখ টাকা ও
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ রিকশায় ছাড়া পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বাস থেকে নেমে
বাসস্ট্যান্ডে এসে রিকশাটি খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সদর থানায় একটি অভিযোগ
করেন।
অভিযোগ পেয়ে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহিম হোসেন শহরের ভেতর
দিয়ে যাওয়া প্রধান সড়কের পাশে অবস্থিত ‘সদর থানা, সুন্দরবন কুরিয়া সার্ভিস,
ইসলামিয়া ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল লিমিটেড ও নেক্সাস শোরুমসহ কয়েকটি
স্থানের সিসি টিভি ক্যামেরা থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করে ওই রিকশাচালককে শনাক্ত
করে।
তার নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করে গত ৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে পুলিশ ও
টাকার মালিকসহ ওই রিকশাচালকের বাড়ি থেকে অক্ষত অবস্থায় তিন লাখ টাকা উদ্ধার
করে।
এদিকে রিকশাচালক টাকার ব্যাগ নিয়ে তিন দিন মুক্তির মোড়ে ঘুরেও মালিককে
না পেয়ে বাড়িতে রেখে দেন। পুলিশ তার বাড়িতে গেলে তিনি টাকার ব্যাগটি ফিরিয়ে
দেন।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ওই দিন তারা রিকশা থেকে নেমে যান। পরে দেখি রিকশায়
একটি ব্যাগ। এরপর ব্যাগটি বাড়িতে নিয়ে এসে দেখি অনেক টাকা। টাকাগুলো নিয়ে
দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। গরিব মানুষ, টিনের বেড়ার ঘর। টাকাগুলো হারিয়ে গেলে
হয়তো বিপদ হবে। এ জন্য তিন দিন মুক্তির মোড়ে ঘুরেও টাকার মালিককে পাওয়া
যায়নি। টাকাগুলো ফিরিয়ে দিয়ে এখন হালকা মনে হচ্ছে’।
এ সময় পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, ‘আপনারা যারা সম্পদ বহন করবেন
সাবধানে বহন করবেন। আমরা ইতিমধ্যে মানি স্কট ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত
নিয়েছি। ১০ লাখ টাকা যদি কেউ পরিবহন করতে চান, তাদের পুলিশি পাহারায় পৌঁছে
দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো খরচ পুলিশকে দিতে হবে না। মানে বিনা খরচে জনগণ
সেবা পাবেন’।
উল্লেখ্য, টাকা হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
(প্রশাসন) মুহাম্মদ রাশিদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) লিমন
রায়, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সোহরাওয়ার্দী হোসেন, ফয়সাল বিন আহসান, এসআই
ইব্রাহিম হোসেন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইলিয়াস তুহিন রেজা ও টাকার
মালিক আবদুল হাকিম।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়