স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক
কোরবানি ঈদ মানেই মাংস খাওয়ার পাল্লা! ঈদ ঘিরে পরিকল্পনার অনেকটা জুড়েই থাকে বাহারি সব খাবারের আয়োজন। রেড মিট পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার। তবে হৃদরোগী, কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের সতর্ক থাকতে হবে।
দৈনিক কী পরিমাণ রেড মিট খেতে পারবেন
একজন সুস্থ মানুষ দৈনিক ৮৫ গ্রাম মাংস খেতে
পারবেন। একটা তাসের বান্ডিলের সমপরিমাণ মাংস নিলেই তা প্রায় ৮৫ গ্রাম হয়ে
যায়। সাধারণত পশুর পেছনের পাশের ওপরের অংশের মাংসের ফালি, সিনার মাংস,
দাবনার মাংসে কম ফ্যাট থাকে। রেড মিট খাওয়ার সময় এমন মাংস বেছে নিন।
রান্নার নিয়ম
মাংস তেল-চর্বি ছাড়িয়ে নিয়ে ছোট ছোট টুকরা
করে কেটে নিতে হবে। তারপর কিছুক্ষণ সেদ্ধ করে পানি ফেলে দিয়ে রান্না করতে
হবে। রান্নায় অবশ্যই কম তেল ও মসলা ব্যবহার করতে হবে। ঘি বা বাটার ব্যবহার
করা যাবে না। সবজি বা ডাল যেমন শালগম, বাঁধাকপি, ব্রকলি, বটবটি, শিম পেঁপে,
কচুর ছড়ি, মটরশুঁটি, বুটের ডাল, ক্যাপসিকাম দিয়ে রান্না করে খেলে চর্বির
পরিমাণ অনেকটাই কমানো যায় এবং তা স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারি। ভুনা মাংস না
খেয়ে বেক, গ্রিল বা ঝোল করে রান্না করে গোটা মাংস খাওয়াই ভালো। তাতে কম
ক্যালরি গ্রহণ করা হয়। রেড মিট খাওয়ার পর সালাদ, টক দই খেতে পারেন। এগুলো
শরীরে চর্বি শোষণে বাধা দেয়।
উপকারিতা
১. রেড মিট প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। পেশির
গঠন, হাড়ের বৃদ্ধি এবং ওজন বৃদ্ধির জন্য রেড মিট খাওয়া উপকারি। বিশেষ করে
শিশুদের বৃদ্ধির জন্য দরকার।
২. রেড মিট আয়রনের চমৎকার উৎস। গর্ভবতী নারী, কিশোরী, বয়স্ক লোক ও শিশুদের হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য রেড মিট দরকার।
৩. ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভালো উৎস রেড মিট
হওয়ায় তা স্নায়ুতন্ত্র ও চোখের উন্নতি সাধন, হজমে সাহায্য, চুল, ত্বক ও
নখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও বি কমপ্লেক্সের অভাবজনিত রোগ দূর করতে সাহায্য
করে।
৪. জিংকের ভালো উৎস হওয়ায় শরীরের জন্য রেড
মিট উপকারি। জিংক দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, রুচি বাড়াতে, ক্ষত
শুকাতে, দেহের বৃদ্ধি এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
অপকারিতা
১. রেড মিটে প্রচুর এলডিএল কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড থাকায় তা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
২. স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকায় রক্তনালিতে ব্লক সৃষ্টি করে, যার কারণে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হয়।
৩. টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
৪. অতিরিক্ত রেড মিট খেলে পেটে বদহজম হয়, গ্যাস্ট্রিক এবং আলসারের সমস্যা বেড়ে যায়।
৫. বৃহদন্ত্র, ক্ষুদ্রান্ত্র, পাকস্থলী, প্রোস্টেট, কোলন ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে অতিরিক্ত রেড মিট গ্রহণ করলে।
৬. আর্থ্রাইটিস ও কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায়।
সতর্কতা
১. হৃদরোগীদের রেড মিট না খাওয়াই ভালো। ৫০ গ্রাম পর্যন্ত চর্বি ছাড়া মাংস খেতে পারবেন।
২. কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী এবং যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক বেশি, তাদের রেড মিট যতটা সম্ভব কম খাওয়া উচিত।
৩. কোষ্ঠকাঠিন্য বা পাইলস থাকলে খুব সামান্য পরিমাণে রেড মিট গ্রহণ করতে হবে। প্রচুর পানি, শরবত, ইসবগুলের ভুসি খেতে হবে।
৪. রেড মিটে অ্যালার্জি থাকলে এড়িয়ে যেতে হবে।
খবর বিভাগঃ
স্বাস্থ্য
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়