স্পোর্টস ডেস্ক ::
অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ৩০ মে পর্দা উঠছে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ও মর্যাদাপূর্ণ আসর ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপের। আজ লন্ডনের কেনিংটন ওভালে উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে এবারের অন্যতম ফেভারিট ইংল্যান্ড ও শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকা।
এবারের বিশ্বকাপের স্বাগতিক ইংল্যান্ডের
জন্য চিন্তার কারণ ছিল ইনজুরি সমস্যা। তবে তাদের ভাগ্য ভালোই বলতে হবে কারণ
দলের প্রায় সবাই এখন পুরো ফিট। বিশেষ করে অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যানের ইনজুরি
ছিল বড় দুশ্চিন্তা। কিন্তু সেটাও কাটিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে ফিরছেন তিনি। তার
অনুপস্থিতিতে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গিয়েছিল
র্যাংকিংয়ের এক নম্বর দলটি। কিন্তু আফগানদের ৬ উইকেটে হারিয়ে সেই ধাক্কা
কাটিয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে প্রোটিয়াদের বড় দুশ্চিন্তা দলের
মূল পেসার ডেল স্টেইনের ইনজুরি। যদিও শ্রীলঙ্কাকে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে ৮৭
রানে হারিয়ে প্রস্তুতিটা ভালো সেরে নিয়েছে তারা। তাছাড়া দলটির বড় স্বস্তি
ওপেনার হাশিম আমলার ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত। লঙ্কানদের বিপক্ষে ফিফটি পাওয়ার পর
উইন্ডিজের বিপক্ষে বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়া ম্যাচেও অপরাজিত ৫১ রান করেছিলেন
তিনি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক চিন্তা, এ ওভালের মাঠে ইংলিশদের তারা সেই
১৯৯৯ সালে হারানোর স্বাদ পেয়েছিল, তাও প্রয়াত হ্যান্সি ক্রনিয়ের নেতৃত্বে।
২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে গ্রুপ
পর্বের ম্যাচে বিধ্বস্ত হয়ে ফিরেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু এরপর ছাই থেকে যেন
নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে দলটি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে এখন সবচেয়ে বিধ্বংসী
ব্যাটিং লাইনআপ তাদের। বোলিংটাও বেশ গোছালো। এই দলটির কাছেই কিছুদিন আগে
৪-০ ব্যবধানে ধবল-ধোলাই হয়েছে পাকিস্তান। প্রায় আড়াই বছর ধরে ইংলিশরা
একাধিক ম্যাচের সিরিজ হারেনি।
দুই ইংলিশ ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও জেসব রয়’র
স্ট্রাইক রেট বর্তমান ক্রিকেটবিশ্বের যেকোনো ওপেনিং জুটির চেয়ে বেশি। জেসন
রয় তো বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যা, ফর্মে থাকা
জস বাটলার, অলরাউন্ডার বেন স্টোকস নামগুলো প্রতিপক্ষের বোলারদের রাতের ঘুম
কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ক্রিকেট ইতিহাসেই ১০০-এর বেশি স্ট্রাইক রেট নিয়ে
২৫ গড়ে রান করা ২০ জনের মধ্যে ৪ জনই ইংল্যান্ডের বর্তমান দলের-বাটলার, রয়,
বেয়ারস্টো এবং মঈন আলী।
ইংলিশদের বোলিং হয়তো অতো আহামরি নয়, তবে
জোফরা আর্চারের অন্তর্ভুক্তি দলটির পেস আক্রমণ অনেক বেশি ধারালো বানিয়ে
দিয়েছে। তবে অবাক করা বিষয় হলো দলটির ইতিহাসে এই প্রথম মূল বোলিং শক্তি
স্পিনাররা। আদিল রশিদ ২০১৫ সাল সালের বিশ্বকাপের পর যেকোনো স্পিনারের চেয়ে
বেশি উইকেট নিয়েছেন। মঈন আলীও কম নন। সবমিলিয়ে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল
ইংল্যান্ড।
আর দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের ঠিক আগে দলের
সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞ বোলার ডেল স্টেইনের ইনজুরিতে বিপাকে পড়ে গেছে। দলের
আরো দুই বোলিং শক্তি কাগিসো রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিডিও ইনজুরিতে পড়েছেন। তবে
শেষ দুজনের এই ম্যাচে খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
বিশ্বকাপে যতবার খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা তার
প্রতিবারই নকআউট পর্ব থেকে বিদায় নেয়ায় দলটির পাশে যুক্ত হয়েছে ‘চোকার’
অপবাদ। তবে ফাফ ডু প্লেসিসের নেতৃত্বে এবার ভিন্নরূপে দেখা যেতে পারে
প্রোটিয়াদের। দলের বোলিং শক্তি বিশ্বের অন্যতম সেরা। তবে ব্যাটিং লাইনআপে
অভিজ্ঞতার ঘাটতি আছে। বিশেষ করে এবি ডি ভিলিয়ার্সের বিদায় দলটির ব্যাটিং
শক্তি অনেক কমিয়ে দিয়েছে।
বোলিংয়ে এখন রাবাদাই এখন দক্ষিণ আফ্রিকার
মূল ভরসা। আর স্পিনার ইমরান তাহির থাকবেন পার্শ্ব-নায়কের ভূমিকায়। এখন এই
জুটি হিট হলেই হয়। আর ব্যাটিংয়ে অধিনায়ক ডু প্লেসিস মূল ভরসা। সঙ্গে
কুইন্টন ডি কক আর হাশিম আমলা ও জেপি ডুমিনি জ্বলে উঠলে প্রতিপক্ষের সর্বনাশ
হবে নিশ্চিত। নিজের প্রথম ৮ ম্যাচেই ৪ ফিফটির দেখা পাওয়া র্যাসি ভ্যান
ডের ডুসান, ২৪ বছর বয়সী এইডেন মার্করাম আর অলরাউন্ড সামর্থ্যের মালিক
আন্দিলে ফেহলুকাইয়ো দলে বাড়তি সুবিধা যোগ করবেন।
খবর বিভাগঃ
খেলাধুলা
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়