হাফিজ মাওলানা আবদুল্লা::
সদাকায়ে ফিতর সম্পর্কিত হাদীসগুলো পর্যালোচনা করলে এ বিষয়ে
মোট পাঁচ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়: যব, খেজুর, পনির, কিসমিস ও
গম। এ পাঁচ প্রকারের মধ্যে যব, খেজুর, পনির ও কিসমিস দ্বারা সদকা ফিতর
আদায় করতে চাইলে প্রত্যেকের জন্য এক সা’ দিতে হবে। আর গম দ্বারা আদায়
করতে চাইলে আধা ‘সা’ দিতে হবে।
বিঃদ্র, অর্ধ সা'পরিমাণ বর্তমানে ১কেজি ৬০৫০গ্রাম আর এক সা'পরিমাণ ৩কেজি ৩০০গ্রাম।
বর্তমানে অর্ধ সা 'গমের মূল্য ৭০ টাকা।
বর্তমানে এক সা'খেজুরের মূল্য ১৬৫০টাকা।
কিসমিস এক সা'র মূল্য ১৩২০ টাকা।
পনির এক সা'র মূল্য ১৯৮০ টাকা।
যব এক সা'র মূল্য ৫০০ টাকা।
বর্তমানে এক সা'খেজুরের মূল্য ১৬৫০টাকা।
কিসমিস এক সা'র মূল্য ১৩২০ টাকা।
পনির এক সা'র মূল্য ১৯৮০ টাকা।
যব এক সা'র মূল্য ৫০০ টাকা।
উল্লেখ্য, গম দিয়ে দিলে ১কেজি ৬৫০ গ্রাম বা তার সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে।
আর বাকী চারটি থেকে কোন একটি দিয়ে দিলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা তার সমপরিমাণ মূল্য দিতে হবে।
আর বাকী চারটি থেকে কোন একটি দিয়ে দিলে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা তার সমপরিমাণ মূল্য দিতে হবে।
হাদীসে এ ৫টি দ্রব্যের যে কোনোটি দ্বারা ফিতরা আদায়ের সুযোগ
দেওয়া হয়েছে যেন মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ্য ও সুবিধা অনুযায়ী এর যেকোনো
১টি দ্বারা তা আদায় করতে পারে। এখন লক্ষণীয় বিষয় হল, সকল শ্রেণীর লোক
যদি সবচেয়ে নিম্ন মূল্য-মানের দ্রব্য দিয়েই নিয়মিত সদকা ফিতর আদায় করে
তবে হাদীসে বর্ণিত অন্য চারটি দ্রব্যের হিসেবে ফিতরা আদায়ের উপর আমল করবে
কে? আসলে এক্ষেত্রে হওয়া উচিত ছিল এমন যে, যে ব্যক্তি উন্নতমানের আজওয়া
খেজুরের হিসাবে সদকা ফিতর আদায় করার সামর্থ্য রাখে সে তা দিয়েই আদায়
করবে। যার সাধ্য পনিরের হিসাবে দেওয়ার সে তাই দিবে। এর চেয়ে কম আয়ের
লোকেরা খেজুর বা কিসমিসের হিসাব গ্রহণ করতে পারে। আর যার জন্য এগুলোর
হিসাবে দেওয়া কঠিন সে আদায় করবে গম দ্বারা। এটিই্ উত্তম নিয়ম। এ নিয়মই
ছিল নবী, সাহাবা-তাবেঈন ও তাবে তাবেঈনের স্বর্ণযুগে। এ পর্যন্ত কোথাও
দুর্বল সূত্রে একটি প্রমাণ মেলেনি যে, স্বর্ণযুগের কোনো সময়ে সব শ্রেণীর
সম্পদশালী সর্বনিম্ন মূল্যের দ্রব্য দ্বারা সদকা ফিতর আদায় করেছেন।
বড়ই আশ্চর্য! পুরো দেশের সব শ্রেণীর লোক বছর বছর ধরে
সর্বনিম্ন মূল্যের হিসেবে ফিতরা আদায় করে আসছে। মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত
সকলেই ফিতরা দিচ্ছে একই হিসাবে জনপ্রতি ৭০/ ৭৫ টাকা করে। মনে হয় সকলে
ভুলেই গেছে যে, গম হচ্ছে ফিতরার ৫টি দ্রব্যের একটি (যা বর্তমানে সর্বনিম্ন
মূল্যের)। সুতরাং আমরা এদেশের ফিতরা আদায়কারী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি
আহবান জানাচ্ছি তারা যেন যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী হাদীসে বর্ণিত
দ্রব্যগুলোর মধ্যে তুলনামূলক উচ্চমূল্যের দ্রব্যটির হিসাবে ফিতরা আদায়
করেন। পনির, কিসমিস, খেজুর কোনোটির হিসাব যেন বাদ না পড়ে। ধনীশ্রেণীর
মুসলিম ভাইদের জন্য পনির বা কিসমিসের হিসাবে ফিতরা আদায় করা কোনো সমস্যাই
নয়। যেখানে রমযানে ইফতার পার্টির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়, ঈদ
শপিং করা হয় অঢেল টাকার, সেখানে কয়েক হাজার টাকার ফিতরা তো কোনো হিসাবেই
পড়ে না। যদি এমনটি করা হয় তবে যেমনিভাবে পুরো হাদীসের উপর মুসলমানদের আমল
প্রতিষ্ঠিত হবে এবং একটি হারিয়ে যাওয়া সুন্নত যিন্দা করা হবে, তেমনি এ
পদ্ধতি দারিদ্র্যবিমোচনে অনেক অবদান রাখবে। গরীব-দুঃখীগণের মুখেও হাসি ফুটে
উঠবে ঈদের পবিত্র দিনে।
খবর বিভাগঃ
ইসলাম
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়