ফিচার ডেস্ক:
ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি জিনিসের ওপর।
তার মধ্যে অন্যতম হলো রমজানের রোজা। সুস্থ, সামর্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্ক সব
নারী-পুরুষের জন্য রমজানের রোজা রাখা ফরজ। স্বেচ্ছায়, অবহেলায় বা
উদাসীনতাবশে কিছুতেই এ ফরজ বিধান পরিত্যাগ করা যাবে না। রোজার শেষ দিকে এসে
যেন কোনো গাফিলতি না এসে যায় আমাদের কারও মাঝে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক
হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো মুসলমান
সফর বা এ জাতীয় কোনো শরয়ী সুযোগ ছাড়া কিংবা অসুস্থতার অপারগতা ছাড়া যদি
রমজানের কোনো একটা রোজা ছেড়ে দেয়, তা হলে সে তার পরিবর্তে সারাজীবন ধরেও
রোজা রাখলেও যা সে হারিয়েছে তার ঘাটতি পূরণ হবে না।
এ হাদিসে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, শরয়ী কোনো
প্রয়োজন বা সুযোগ ছাড়া জেনেশুনে রমজানের একটি রোজা না রাখলেও রমজান মাসের
যে বরকত এবং আল্লাহতায়ালার যে রহমত থেকে বঞ্চিত হতে হয়, জীবনভর নফল রোজা
রাখলেও ওই ক্ষতির সম্পূর্ণ হয় না। আইনত একটি রোজা না রাখলে পরিবর্তে কাজা
হিসেবে একটি রোজাই রাখতে হয়, কিন্তু রমজানের হারানো বরকত তাতে সামান্যও লাভ
হয় না।
যারা নির্দ্বিধায় দিনের পর দিন অবহেলা
বা উদাসীনতায় রমজানের রোজা পরিত্যাগ করে থাকেন, তাদের একটু ভেবে দেখা
দরকার-কী অসামান্য বরকত আর কতবড় পুরস্কার থেকে তারা মাহরুম থেকে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে যদি কোনো ব্যক্তি রোজা রাখার পর তা ভেঙে ফেলে, তা হলে একটি রোজার
পরিবর্তে একাধারে ৬০ দিন রোজা রাখলেই কেবল তার ফরজ জিম্মা আদায় হবে। অবশ্য
রমজান মোবারকের বরকত ও ফজিলত তারও লাভ হবে না।
এ তো গেল তাদের কথা-যারা কাজা বা কাফফারা
আদায় করে। কিন্তু যারা আদৌ রোজা রাখেই না কিংবা কখনো কাজা কাফফারা আদায় করে
না, তাদের পরিণতির কথা আর কী বলার আছে? নশ্বর এ দুনিয়ার সুখ-শান্তি ও
ভোগবিলাস একদিন শেষ হয়েই যাবে। এ পৃথিবীতে কেউ চিরদিন স্থায়ী হওয়ার নয়।
মৃত্যুর হাত থেকে কারও পরিত্রাণ নেই। আল্লাহর ইবাদত, আনুগত্য ও মহব্বতই
একজন মানুষের সবচেয়ে বড় পাথেয়। খেয়াল রাখতে হবে, ক্ষণভঙ্গুর এই দেহটাকে
পুষতে গিয়ে এ পাথেয় যেন হেলায় হারিয়ে না যায়।
কিছু মানুষ তো নিজেরা রোজা রাখে না,
আবার কিছু মানুষ আছে যারা রোজা অবজ্ঞা করে এবং তা নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে।
রোজাদারদের নানা কটূকথা বলে। যাদের ঘরে খাবার নেই রোজা হলো তাদের জন্য
কিংবা আমাদের না খাইয়ে রেখে আল্লাহর কী লাভ? এ ধরনের বাজে কথাও নির্দ্বিধায়
অনেকে বলে বেড়ায়। সবারই খুব ভালো করে মনে রাখা দরকার, কেউ যদি সারাজীবন
কোনো ফরজ বিধান পালন নাও করে, কিন্তু সেগুলো সে স্বীকার করে, তা হলে ফরজ
তরক করার গোনাহ হলেও তার ইমান ঠিক থাকবে।
কিন্তু দ্বীনের ছোট থেকে ছোট বিষয় নিয়েও কেউ
উপহাস করলে কিংবা কোনো ফরজ বিধানকে অস্বীকার করলে তার আর ইমানই থাকবে না।
রোজাসংক্রান্ত মাসআলা অনিচ্ছাকৃত বমি হলে, যদি মুখ ভরেও হয়, তা হলে রোজা
ভাঙবে না। তেমনি বমি মুখে এসে অনিচ্ছায় ভেতরে চলে গেলেও রোজা ভাঙবে না।
হাদিসে আছে, অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো ব্যক্তির বমি হলে তার রোজা কাজা করতে হবে
না। (জামে তিরমিজি)।
খবর বিভাগঃ
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়