মাহবুবুর রশিদ ::
মনটা ভীষণ খারাপ। গত দুদিন সারারাত ঘুমোতে পারিনি। ডুকরে ডুকরে কেঁদেছি। নুসরাতের চলে যাওয়ার খবর শুনে নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে। কিছুই করতে পারলামনা নুসরাতের জন্য।
ক্ষমা করিস নুসরাত, আমরা লজ্জিত, তোকে বাঁচাতে পারিনি বলে।
নুসরাত বোন আমার, এই কয়েকদিন দগ্ধ শরীর নিয়ে অনেক কষ্ট হইছিল তোর। হয়তো বেঁচে থাকলে আরো কষ্ট পেতে তুই। সারাজীবন দগ্ধতার চিহ্ন ও মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে তােকে বাঁচতে হত। যৌন নিপীড়নের বিচারের আশায় পোড়া মুখ নিয়ে মানুষের দ্ধারে দ্ধারে ঘুরতে হত তোকে। সমাজের পোড়া মানুষগুলো তোর গায়ে কলঙ্কের তকমা লাগিয়ে হাসি ঠাট্টা করত। তুই বরং মরে গিয়ে বেঁচে গেছিস। যেখানে তোর ধর্ষককে বাঁচাতে প্রতিবাদ চলছিলো, সেখানে তোর বেঁচে থেকে কী লাভ। চলে যাওয়াই ভালো।
নুসরাত বোন আমার, তুই কারও যৌন লালসার কাছে নত না হয়ে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করছিলে, লড়তে চেয়েছিলে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আগুনে ঝলসে যাওয়ার আগে দুই সহপাঠীকে লেখা এক চিঠিতে তুই নিজের অবস্থান তুলে ধরে বলেছিলে, 'আমি লড়ব শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমি তাকে(অধ্যক্ষ সিরাজকে) এমন শাস্তি দেবো যে তাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নেবে।
স্যালুট বোন, তুই তোর কথা রাখছিস, আর দশটা মেয়ের মত মুখ বুজে না থেকে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছিস। কিভাবে প্রতিবাদ করতে হয় তা জরাজীর্ণ সমাজকে দেখিয়ে দিয়েছিস।
শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে নুসরাত চলে গেছে। এবার আমাদের প্রতিবাদ করার পালা।
আসুন আমরা প্রতিবাদের ঝড় তুলি ,সেই শিক্ষক নামধারী সিরাজসহ অপরাধীদের এমন কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক,যাতে করে দেশে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সঠিক বিচারের মাধ্যমে অন্তত নুসরাতের আত্নাটা শান্তি পাক।
লেখক:-মাহবুবুর রশিদ, সভাপতি, কানাইঘাট লেখক ফোরাম।
খবর বিভাগঃ
মতামত
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়