কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী
নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী কামরুন নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদের
জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ফেনীর একটি আদালত।
নুসরাত হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, ‘আজ
বুধবার দুপুরে এই মামলার আসামি কামরুন নাহারকে জেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে
হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে বিচারক শরাফ উদ্দিন
পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
কামরুন নাহারকে গত সোমবার দিবাগত রাতে ফেনী
শহর থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। নুসরাত জাহান রাফি এবার সোনাগাজী ইসলামিয়া
ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা থেকে আলিম (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি
সোনাগাজীর উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মাওলানা এস এম মুসার মেয়ে। তিন ভাই ও
এক বোনের মধ্যে নুসরাত তৃতীয়।
গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার
দিকে মাদ্রাসা ভবনের ছাদে দুর্বৃত্তরা তাঁর গায়ে আগুন দেয়। তাঁকে আশঙ্কাজনক
অবস্থায় ফেনী সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন
ইউনিটে পাঠানো হয়। পরে এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল বুধবার রাতে
তিনি মারা যান।
এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ
দৌলা গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহানের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। নুসরাত বিষয়টি
বাসায় জানালে তাঁদের মা সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ওই মামলার
পরিপ্রেক্ষিতে সোনাগাজী থানা পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে।
নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায়
অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত
আরো চার-পাঁচজনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই নোমান মামলা করেন।
আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার
করেছে পুলিশ ও পিবিআই। তাঁরা হলেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার
অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত
সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল
ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল
ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন,
নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার ও জান্নাতুল আফরোজ।
এদিকে রোববার রাতে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক
হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি
দেন মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। সেদিন বিকেল
২টা ৫৫ মিনিট থেকে দিবাগত রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত প্রায় ১০ ঘণ্টা জবানবন্দি
দেন তাঁরা। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে তাঁরা নুসরাতের
গায়ে আগুন দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
এদিকে নুসরাত হত্যা মামলায় পিবিআইর হাতে আটক
মো. শামীমকে রিমান্ড শুনানির সময় আদালতে আনার কথা রয়েছে। এ মামলায়
পিবিআইর হাতে তিন নারীসহ ১৬ জন আটক রয়েছে। তার মধ্যে ১২ জনের রিমান্ড
মঞ্জুর করেছেন আদালত।
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়