Sunday, March 17

জন্ডিস রোগীর পথ্য

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:

জন্ডিস এমনই একটি রোগের নাম যা শুনলে রোগীর থেকেও পরিবার বেশি চিন্তিত হয়ে থাকে! কারণ রোগীর কীভাবে যত্ন নেয়া উচিত বা তাকে কী খাওয়াবে আর কোন জিনিসগুলো খাওয়ানো যাবে না? এ ধরণের নানা রকম চিন্তাভাবনা পরিবার করে থাকে। আসলে জন্ডিস কোনো রোগ না। জন্ডিস হলো রোগের লক্ষণ মাত্র। শরীরের রক্তে যখন বিলুরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায় তখন ত্বক, চোখের সাদা অংশ এবং অন্যান্য মিউকাস ঝিল্লিগুলো হলুদ হয়ে যায়। তাই জন্ডিস হলে চামড়া ও মুখের সাদা অংশ হলদে হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের রক্তের লোহিত কণিকা একটা সময় ভেঙে গিয়ে বিলুরুবিন তৈরি করে। সেই বিলুরুবিন লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে পিত্ত রসের সঙ্গে মিশে পরিপাক তন্ত্রে প্রবেশ করে। এ প্রক্রিয়া কোনোভাবে ব্যহত হলেই জন্ডিস দেখা দেয়। জন্ডিস সাধারণত লিভারের একটা রোগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, হেপাটাইটিসের কারণেই জন্ডিস হয়ে থাকে। জন্ডিস হলে প্রসাবও হলুদ হয়ে যায়, দুর্বল লাগে, বমি বমি ভাব হয়, ক্ষুদামন্দাভাব দেখা দেয়, হালকা জ্বর হতে পারে। জন্ডিস থেকে মুক্তি লাভের উপায়গুলো সম্পর্কে জেনে নিন-

জন্ডিস আক্রন্ত রোগীরা চা খেতে চাইলে হারবাল চা খাওয়াতে পারেন। কিন্তু অনেক সময় আগে তৈরি করে রাখা চা না খাওয়ানোই ভালো। চা বানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস করে পানি খেতে হবে। সেইসঙ্গে এনজাইম সমৃদ্ধ ফল খাওয়াতে হবে। প্রতিদিন দুই বাটি ফল ও দুই বাটি সবজি খাওয়াতে হবে। উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন: ওট মিল্ক খাওয়াতে পারেন। এছাড়াও প্রতিদিন চার লিটার পানি খাওয়াতে হবে আর পানি খাওয়ার দিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। পরিমাণমতো পানি খেলে শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের হয়ে যাবে। আর লিভারের কর্মক্ষমতাও ঠিক থাকবে। সেই সঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 
জন্ডিস আক্রান্ত রোগীরা কফি বা কোক জাতীয় কোনো খাবার খেতে পারবেনা। দুধ বা দুগ্ধ জাতীয় খাবারও খাওয়ানো ঠিক নয়। জন্ডিস আক্রন্ত রোগীকে এমন সব খাবার খাওয়াতে হবে যেগুলো খুব সহজেই হজম হয়ে যাবে। যেমন: মধু, কমলা লেবু, আনারস, পেঁপে ও আম। এছাড়াও প্রচুর ফাইবার সমৃদ্ধ শাক সবজিও খাওয়াতে পারেন। জন্ডিস রোগীরা বাদাম, আমন্ড, ওট মিল্ক, শস্যদানা ও ব্রাউন রাইস খেতে পারে। এছাড়াও অনেকেই রাস্তার ধারের ফল বা আখের রস খেয়ে থাকেন। জন্ডিস আক্রন্ত রোগীর এসব খাবার খাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত আয়রনও লিভারের জন্য ক্ষতিকারক। তাই খাবারের পরিমাণ সীমিত রাখতে হবে। অল্প পরিমাণে খেতে হবে, খুব বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যাবে না। মাছ মাংস খেতে হলে ছোট ছোট মাছ খেতে হবে। আর মাংস খেতে হলে মুরগীর মাংস খেতে হবে। 
জন্ডিস কমে গেলে আমরা মনে করে থাকি, এখন আমরা সব ধরণের খাবার খেতে পারে। এ ধারণা একদমই ঠিক নয়। একবার জন্ডিস হলে সব সময়ই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। জন্ডিস আক্রন্ত রোগীর ল্যাক্টোস জাতীয় খাবার কম খাওয়াই ভালো। তবে লিভার ভালো থাকবে। জন্ডিসের সম্ভাবনা আর থাকবেনা। অ্যালকোহল একেবারেই ছেড়ে দিতে হবে। সেইসঙ্গে কাঁচা লবণ যতটা সম্ভব কম খেতে হবে। আর প্রতিদিন খাবারের তালিকায় লেবু রাখতে হবে। তারপর একেক জন মানুষের এক এক ধরণের জন্ডিস হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাদ্য তালিকা তৈরি করে নেয়াই ভালো।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়