Tuesday, March 12

রজব থেকেই রমজানের প্রস্তুতি

গাজী মো. রুম্মান ওয়াহেদ

রজব মাসে বিশেষ দিন বা বিশেষ পদ্ধতির নির্ধারিত রোজা ও নামাজসহ কোনো আমল নেই।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে পাকে হারাম মাসের (রজব) আমল সম্পর্কে বলেন, ‘হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখো এবং রোজা ভাঙ্গও।’ (আবু দাউদ)
আরবি সাল গননায় সপ্তম মাস রজব। মুমিন মুসলমানের অন্তরে পূণ্যের বীজ বুনে দেয় এ মাস।
কেননা এ মাস থেকেই রমজান পাওয়ার আবদার করার কথা বলেছেন প্রিয়নবী (সা.)। রমজানের রহমত বরকত ও মাগফেরাত কামনায় এ মাস থেকেই প্রস্তুতি নেয় মুসলিম উম্মাহ।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার ঘোষণায় হারাম মাসের অন্তর্ভূক্ত ‘রজব মাস’। ইসলামে এ মাসের গুরুত্ব এ কারণে বেশি যে, এ মাসে সব ধরণের অন্যায় ও রক্তপাত থেকে মুক্ত থাকার নিদের্শ এসেছে পবিত্র কোরআনে। 
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, 
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَات وَالأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلاَ تَظْلِمُواْ فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ وَقَاتِلُواْ الْمُشْرِكِينَ كَآفَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَآفَّةً وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
‘নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সঙ্গে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সূরা: তাওবা, আয়াত: ৩৬)
তাছাড়া রজব মাস প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রশান্তি লাভের মাস। এ মাস উম্মতে মুহাম্মাদির শ্রেষ্ঠ উপহার ‘নামাজ’ লাভের মাস।
রজব মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি: রমজানের সিয়াম-সাধনায় নিজেদেরকে শারীরিক আত্মিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুতির জন্য দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। রজব মাস আসলেই প্রিয়নবী (সা.) নিজেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। ইবাদত-বন্দেগিসহ সব কাজেই পরিবর্তন পরিলক্ষিত হতো।
রজব মাস আসলেই প্রিয়নবী নিজে দোয়া করতে অন্যদেরকেও এ দোয়া করতে বলতেন-

اَللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য বরকত দান করুন আর রমজান পর্যন্ত আমাদের জীবিত রাখুন।’ (বায়হাকি, মুসনাদে আহমদ)

হাদিসে বর্ণিত এ দোয়ার ব্যাখ্যায় আল্লামা মোল্লা আলী কারি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার বিখ্যাত গ্রন্থ মেরকাতে উল্লেখ করেন-
‘হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসে আমাদের ইবাদত-বন্দেগিতে বরকত দান করুন এবং রমজানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সিয়াম-কিয়াম তথা রোজা ও নামাজ (তারাবিহ/তাহাজ্জুদ) যথাযথ আদায়ের তাওফিক দান করুন।‘মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে রজব মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়