নিজস্ব প্রতিবেদক:
কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) লুসিকান্ত হাজং এর বিরুদ্ধে কতিপয় লোকজন কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মানহানিকর মিথ্যা অপপ্রচারের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এতে করে কানাইঘাটবাসীর সুনাম নষ্ট ও প্রশাসনের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন। যেসব ফেসবুক আইডি থেকে নির্বাহী ও ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে এসব ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গত সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে হাজারো উৎসুক জনতা কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল জানতে নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার তানিয়া সুলতানার কার্যালয়ের সামনে সমবেত হন। একপর্যায়ে রাত ১০টার দিকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কন্ট্রোল রুমের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে উৎসুক জনতার উপর বিজিবি লাঠিচার্জ করে। এতে যুক্তরাজ্য শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সারওয়ার কবির সহ আরো বেশ কয়েকজন আহত হন।
এ নিয়ে ঐ দিন রাতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলে নৌকা মার্কার অনেক নেতাকর্মী ইউএনও তানিয়া সুলতানা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) লুসিকান্ত হাজং এর বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদের রাস্তার সামনে বিক্ষোভ করেন।
একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মুমিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানার সাথে সাক্ষাত করে নির্বাচনের ফলাফলের তালিকা নিয়া আসেন এবং ফলাফল ঘোষণা কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনা নিয়ে যাতে করে প্রশাসনের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করে কোন মহল ফায়দা হাসিল করতে না পারে এজন্য কর্মী সমর্থকদের শান্ত করেন তিনি। বিজিবি’র লাটিচার্জে অনেকে আহতের ঘটনার প্রশাসনিক তদন্তের জন্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান আব্দুল মুমিন চৌধুরী।
এ ঘটনার পর থেকে নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) লুসিকান্ত হাজংকে দায়ী করে একাধিক ফেসবুক আইডি থেকে তাদের ছবি দিয়ে মিথ্যা বানোয়াট কাল্পনিক পোস্ট করা হয়। এমনকি তারা পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মস্তাক আহমদ পলাশের কোটি টাকার উৎকোচ খেয়ে এ দুই কর্মকর্তা নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করে। জঘন্যতম ভাষায় এসব কুরুচিপূর্ণ অপপ্রচার করায় এতে করে সর্ব মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
কানাইঘাটের সকল মহল জানিয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) লুসিকান্ত হাজং কানাইঘাটে যোগদান করার পর থেকে অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নূন্যতম কোন অভিযোগ নেই। উপজেলা প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে ইতিমধ্যে তারা নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। সৎ কর্মকর্তা হিসাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানার সুনাম রয়েছে প্রশাসন সহ সর্বমহলে।
সচেতন মহল জানান- তানিয়া সুলতানার পাশাপাশি কানাইঘাট ভূমি অফিস কে দুর্নীতিমুক্ত করেছেন ভূমি কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং। তিনি যোগদানের পর থেকে ভূমি অফিস থেকে সব ধরনের সেবা পাচ্ছেন সবাই। সরকারি খাস জমি প্রভাবশালীদের কবল থেকে উদ্ধার করতে তার ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। একজন সৎ কর্মকর্তা হিসাবে তিনি সকল মহলের সুনাম কুড়িয়েছেন। কিন্তু গত ২ দিন থেকে এ দুই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কতিপয় ব্যক্তিরা ফেসবুকে দুর্নীতির নানা অপবাদ দিয়ে মিথ্যা কুরুচীপূর্ণ অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। এতে করে কানাইঘাটবাসীর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী মুমিন চৌধুরীর দৃষ্টি গোচর হলে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য তারা সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লুসিকান্ত হাজং জানিয়েছেন- ‘আমাদের কর্মের মূল্যায়ন করবে এখানকার সরকারি সেবাপ্রাপ্ত জনগণ। সব সময় সৎ থাকার চেষ্টা করছি, এ পথ থেকে কেউ আমাকে বিচ্যুত করতে পারবে না। যারা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা স্যার সহ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে তা না জেনে করছেন। আশা করি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে গত সোমবার রাতে যে ঘটনাটি ঘটেছে এজন্য প্রশাসন কে দোষারূপ করা ঠিক নয়। এ সময় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে আইন শৃংখলা বাহিনী সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। এ নিয়ে কাউকে দোষারূপ করা ঠিক নয়। আমরা প্রশাসনের লোকজন কারো প্রতিপক্ষ নয়।’
জানা গেছে সোমবার রাতের অপ্রীতিকর ঘটনার প্রশাসনিক তদন্ত ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
কানাইঘাট নিউজ ডটকম/২০ মার্চ ২০১৯ ইং
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়