কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
আপনার শিশু মোবাইল ফোন ট্যাবলেট বা কম্পিউটারের সামনে কত সময় কাটাচ্ছে। অনেকে শিশুদের এই দুটি বিষয়ের দিকে বেশি নজর রাখেন। আসলেই কি শিশুদের জন্য টিভি দেখা ও মোবাইল ব্যবহার কী ক্ষতিকর। এ নিয়ে চিন্তার শেষ নেই অভিভাবকদের। বেশি সময় মোবাইল বা টিভির স্ক্রিন শিশুদের ওপর কতটা কুপ্রভাব বিস্তার করে, সে সম্পর্কে কমবেশি সবাই সচেতন।
তবে এব্যাপারে অন্য তথ্য জানালেন দ্য রয়্যাল কলেজ অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চাইল্ড হেলথের (আরসিপিসিএইচ) গবেষকরা। তাদের মতে, মোবাইল বা টিভির স্ক্রিন নিয়ে এত ভয় অমূলক। শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য ‘বিষাক্ত’-ও নয় এসব।
সম্প্রতি আমেরিকার বিএমজে মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এমনই দাবি করেছেন চিকিৎসক-গবেষকরা। ৬-১৪ বছর বয়সী কয়েকশ শিশুর জীবনযাত্রার ওপর এ গবেষণা চলে।
গবেষণার প্রধান রাসেল ভিনার জানিয়েছেন, কয়েকজন শিশুকে নিয়ে এই পরীক্ষা করে আমরা দেখেছি শরীরের পক্ষে ঠিক কতখানি স্ক্রিন-সময় ক্ষতিকারক, বা আদৌ তা ক্ষতিকর কি না তার তেমন কোনও প্রমাণই নেই। মোবাইল বা টিভির বিষয়ে অভিভাবকরা না জেনেই বড় বেশি ভয় পেয়ে থাকেন।
এই দলেরই অন্যতম সদস্য ম্যাক্স ডেভির মতে, মোবাইল বা কম্পিউটার বরং জ্ঞানের পরিসর বাড়ায়। সারা বিশ্বে কত কী ঘটে চলেছে, সে সম্পর্কে শিশুরা জানতেও পারে মোবাইল ও কম্পিউটার থেকে।
যদিও তাদের এই রিপোর্ট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত চিকিৎসা মহল। আরসিপিসিএইচ-এরই আর এক দল চিকিৎসকের মতে, এর আগেও শিশুদের শরীর ও মন নিয়ে গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, স্ক্রিনিং টাইমের বাড়াবাড়ির কারণেই মানসিক অবসাদ, ওবেসিটি, অন্যমনস্ক স্বভাব এমনকি, খিটখিটে হয়ে যাওয়া, কম ঘুমানো— এসব নেতিবাচক স্বভাবের শিকার হচ্ছে শিশুরা। সুতরাং সচেতনতার কারণ নেই, এমনটা বললে বিষয়টিকে লঘু করে দেখা হবে।
গবেষকদের মতে, ঘুমানোর আগে বা পড়াশোনা ও শরীরচর্চার সময় শিশুর হাতে মোবাইল না দেওয়া, দিনের মধ্যে অনেকটা সময় টিভি দেখা— এসব শিশুর মোবাইল ও টিভির অপব্যবহার শেখায় ও তাদের নেশাগ্রস্ত করে তোলে। এমনকি খাওয়ার সময় টিভি না দেখার দিকে ভোট তাদেরও। তাই এক দিকে মোবাইল বা টিভি থেকে শতহস্ত দূরে না থাকার পরামর্শ দিলেও অন্য দিকে এই সাবাধানতাগুলো অবলম্বন করতে বলছেন তারা।
আর এখানেই অপর এক চিকিৎসক গোষ্ঠীর দাবি, ক্ষতি করে বলেই এসব নিষেধাজ্ঞার কথা হালকাভাবে জানিয়ে রেখেছেন তারাও। এমনই এক জন, লন্ডনের পেডিয়াট্রিক সার্জন শ্রাবণী চক্রবর্তী। তার মতে, এই গবেষণা কিন্তু বিদেশের মাটিতে হয়েছে। এখানে মোবাইল বা টিভি সেটের শব্দ, আলো সবই অনেকটা স্বাস্থ্যকর যুক্তি মেনে রাখা হয়।
কী করা উচিত?
একটানা র্দীঘ সময় মোবাইল ব্যবহার নয়
মোবাইল একটানা র্দীঘক্ষণ ব্যবহারে করতে দেয়ার দরকার নেই। বরং দিনের মধ্যে এক ঘণ্টা মোবাইল থেকে পড়াশোনা করলে ক্ষতি নেই। কিন্তু তা যেন কখনোই একটানা না হয়।
প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ২০ সেকেন্ড
স্ক্রিন টাইমের মধ্যেই মাঝে মাঝে উঠে চোখে জল দেওয়ান, প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ২০ সেকেন্ডের জন্য চোখ দূরের কোনও জিনিসে রাখুন।
খাওয়া পড়াশোনা শরীরচর্চা
খাওয়ার সময়, পড়াশোনার সময় বা শরীরচর্চার সময় কোনোভাবেই মোবাইল নয়। শিশু কান্না করলেই তাকে মোবাইল বা কার্টুন দিয়ে ভোলাবেন না। বরং অন্য কিছুতে আগ্রহী করে তুলুন।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়