Thursday, June 8

শিশুর কান্না

শিশুর কান্না
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: জন্মের পর থেকেই শিশুর কান্না শুরু হয়। শিশুর কান্না থামাতে না পেরে মায়েরা তাদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মায়েদের ধারণা শিশুর পেট ভরছে না অথবা পেট ব্যথার কারণে শিশু কান্না করছে। পেট ব্যথা ছাড়াও শিশু কান্না করতে পারে।

শিশুর কান্নার কারণ:
শিশুর কান্নার যে কোনো কারণ থাকবে তার কোনো মানে নেই। জন্মের পর প্রথম তিন মাসে শিশু কোনো কারণ ছাড়াই ২৪ ঘণ্টায় ১-৩ ঘণ্টা কাঁদতে পারে। শিশুর বয়স তিন মাসের বেশি হলে আর কান্না বেশি সময় ধরে হলে তার কারণ খোঁজা প্রয়োজন।

শিশু যেকোনো অসুবিধার কারণে কাঁদতে পারে। যেমন খিদে পাওয়া, ন্যাপি/কাঁথা ভিজে যাওয়া, পেট ব্যথা, কান ব্যথা, সর্দিতে নাক বন্ধ, মুখের ঘা, শক্ত পায়খানা, পায়খানার রাস্তায় ঘা, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ইত্যাদি। এ ছাড়া শিশুর পরিবেশ পছন্দ না হলেও কান্নাকাটি করতে পারে।

ইনফ্যানটাইল কলিক:
জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইনফ্যানটাইল কলিক শুরু হয়। এটি শিশুর কান্নার একটি প্রধান কারণ। সাধারণত চার মাসের পর এটি আর হয় না। ৬-৮ সপ্তাহের সময়ই বেশি হয়। দুধ খাওয়ার পর পেটে গ্যাস জমে এটি হয়। এ জন্য খাওয়ানোর পর পিঠ চাপড়ে ঢেঁকুর তোলানো প্রয়োজন।

এ ক্ষেত্রে শিশু সাধারণত সন্ধ্যা বেলায় কোনো কারণ ছাড়াই কাঁদতে শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে লাল হয়ে যায়। কান্নার সময় হাঁটু ভাজ করে রাখে। শিশুকে পেটের ওপর শুইয়ে দিলে অথবা মাথার নিচে হাত দিয়ে দোল খাওয়ালে কান্না অনেক সময় কমে যায়।

কানে ব্যথা:
কানে ব্যথা অনেক সময় শিশুর কান্নার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যদি কান্নার সময় শিশু নিজের কানের কাছে হাত রাখে তাহলে কানের ব্যথাই কান্নার কারণ। কান থেকে পুঁজ পরলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

সর্দিতে নাক বন্ধ:
শিশুরা সাধারণত মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে পারে না। তাই নাক বন্ধ হয়ে গেলে শিশুর শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় ও শিশু কাঁদে।

মুখের ভেতর ঘা:
এ ক্ষেত্রে শিশু খাওয়ার সময় বেশি কাঁদে। মা অনেক সময় খেয়াল করে থাকেন যে শিশুর মুখের ভেতর সাদা হয়ে গেছে। একে ওরাল ব্রাশ বলে। চিকিৎসায় এটি ঠিক হয়।

শক্ত বা পাতলা পায়খানা:
খুব শক্ত পায়খানা হলে শিশুর পেটে ব্যথা হয়। পাতলা পায়খানা বা ইনফেকশনেও শিশু পেট ব্যথায় কাঁদে।

পায়খানার রাস্তায় ঘা:
শক্ত পায়খানা হওয়ার পরে শিশুর পায়খানার রাস্তায় ঘা হতে পারে। এতে শিশু পায়খানা করার আগে অথবা পায়খানা করার সময় কান্নাকাটি করে থাকে।

প্রস্রাবে ইনফেকশন:
প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে শিশু প্রস্রাব করার আগে অথবা প্রস্রাব করার সময় কাঁদবে। ঘন ঘন প্রস্রাব করতে পারে ও জ্বর থাকতে পারে।

ন্যাপি/কাঁথা ভিজে থাকা:
শিশু ভেজা ন্যাপি/কাঁথা পছন্দ করে না। তাই ভেজা ন্যাপি বদলে দিলে কান্না থেমে যায়।

পরিবেশগত কারণ:
খুব বেশি ভিড় বা জনসমাগমে শিশু কাঁদে। স্বাভাবিক পরিবেশের তুলনায় পরিবেশ ভিন্ন হলেই শিশু কাঁদে। অপরিচিতদের ভিড় তাকে ভীত করে তোলে।

দিনে ঘুমায় রাতে কাঁদে:
শিশু যখন মায়ের পেটে, দিনের বেলায় মা তখন জেগে থাকে, হাঁটাচলা করে, ফলে শিশুর দোলা লাগে এবং সে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু রাতে যখন মা ঘুমায় তখন সে জেগে থেকে খেলা করে। জন্মের বেশ কয়েক মাস পর্যন্ত শিশুর এই অভ্যাস থেকে যায়। সে সারা দিন ঘুমায় আর রাত হলে জেগে ওঠে। আর তাই মা ঘুমিয়ে পড়লে তার কান্না শুরু হয়।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়