Wednesday, February 8

ক্যান্সারের জীবানু ধ্বংস করে ক্যাপসিকাম

ক্যান্সারের জীবানু ধ্বংস করে ক্যাপসিকাম

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: সালাদ হোক, বড়া, তরকারি বা চাইনিজ। সব কিছুতেই স্বাদ বাড়াতে ক্যাপসিকামের জুড়ি মেলা ভার। লাল, সবুজ, হলুদ, কমলা হরেক রঙের ক্যাপসিকাম দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। তবে অনেকেই নানা রঙের ক্যাপসিকাম শুধুই দেখতে সুন্দর বলেই কিনে ফেলেন। দেশিয় সবজি না হলেও চাহিদা মেটাতে এর চাষ বাড়ছে।

ক্যাপসিকামে রয়েছে সামান্য পরিমাণ ভিটামিন-ই, ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি৬, থায়ামিন, লেবোফ্লেবিস ও ফলিক এসিড, জিংক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও ফ্লোরাইড সামান্য পরিমাণে পাওয়া যায়। ক্যাপসিকাম লাল, হলুদ, কমলা ও সবুজ বর্ণে পাওয়া যায়। জানেন কি কোন রঙের ক্যাপসিকামের কী গুণ?

সবুজ ক্যাপসিকাম:
পুরোপুরি পাকার আগেই এই ক্যাপসিকাম তুলে ফেলা হয়। সেই কারণে অন্যান্য রঙের ক্যাপসিকামের মতো সবুজ ক্যাপসিকামের স্বাদ অত মিষ্টি হয় না। তবে সবুজ ক্যাপসিকামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম যা পেশির সংকোচন-প্রসারণে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ভিটামিন-সি থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সংক্রমণ রোধ করে, ক্যানসার রুখতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন-এ ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, দৃষ্টিশক্তি সজাগ রাখতে সাহায্য করে।

লাল ক্যাপসিকাম:
এই ক্যাপসিকাম পুরোপুরি পাকার পর তোলা হয়। সেই কারণে লাল ক্যাপসিকামের স্বাদ মিষ্টি ও অনেকটা ফলের মতো হয়। এর উপাদান সবুজ ক্যাপসিকামের মতো হলেও পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। সেই সঙ্গেই রয়েছে লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পিগমেন্ট যা স্তন ও প্রস্টেটের ক্যানসার রুখতে সাহায্য করে। লাল ক্যাপসিকামে থাকা জেক্সানথিন ও লুটেনের সাহাযেযে ছানি ও পেশির ক্ষয় রুখতে সাহায্য করে লাল ক্যাপসিকাম। সবুজ ক্যাপসিকামের তুলনায় এতে ১১ গুণ বেশি বিটা ক্যারোটিন, দেড় গুণ বেশি ভিটামিন-সি ও ১০ গুণ বেশি ভিটামিন-এ রয়েছে।

হলুদ বা কমলা ক্যাপসিকাম:
কাঁচা ও পাকার মাঝামাঝি সময় এই ক্যাপসিকাম তুলে ফেলা হয়। যে কারণে সবুজ ক্যাপসিকামের কড়া স্বাদ না থাকলেও এটা লাল ক্যাপসিকামের মতো মিষ্টি স্বাদের নয়। একই ভাবে এর পুষ্টিগুণ সবুজ ক্যাপসিকামের থেকে বেশি হলেও লাল ক্যাপসিকামের থেকে কম। সবুজ ক্যাপসিকামের তুলনায় এর মধ্য দ্বিগুণ ভিটামিন-সি রয়েছে। তবে বিটা ক্যারোটিন বা ভিটামিন এ-র পরিমাণ সবুজ ক্যাপসিকামের এক তৃতীয়াং‌শ। হলুদ ক্যাপসিকামে আছে প্রচুর লটিন ও জ্যানথিন, লাল ক্যাপসিকামে জ্যানথিন ও লাইকোপিন, কমলায় আছে প্রচুর আলফা, বিটা ও গামা ক্যারোটিন।

ক্যাপসিকামের গুণাগুণ:
ক্যাপসিকাম আমাদের দেহের নানা ধরনের উপকার সাধন করে থাকে। আসুন জেনে নেয়া যাক, সুদৃশ্য ক্যাপসিকামের গুণ সম্পর্কে।

* ক্যাপসিকামের ক্যাপসাইসিনস নামক উপাদান ডিএনএর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী জীবানুকে ধ্বংস করে।

* চামড়া পরিষ্কার রাখতে ক্যাপসিকাম বেশ উপকারি, এটি চামড়ার র্যাশ হওয়া ও ব্রণ প্রতিরোধ করে।

* ক্যাপসিকাম যেকোনো ব্যথা যেমন- মাইগ্রেন, সাইনাস, ইনফেকশন, দাঁতে ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ইত্যাদি ব্যথা দূর করতে কাজ করে।

* ক্যাপসিকাম দেহের বাড়তি ক্যালরি পূরণে কাজ করে। ফলে উচ্চ চর্বি থেকে যে ওজন বৃদ্ধি পায়, তা হ্রাস করে।

* সি সিকনেস (সমুদ্রে যাওয়ার কারণে তৈরি অসুস্থতা), ম্যালেরিয়া, জ্বর ইত্যাদি রোধে ক্যাপসিকাম বেশ কার্যকর।

* ক্যাপসিকামে থাকা অ্যালকালোয়েড, ফ্লেবোনয়েড, ক্যানিন ইত্যাদি পাওয়া যায়। অ্যালকালোয়েড অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ক্যানিন আন্ত্রিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

* এতে থাকা ভিটামিন-সি মস্তিষ্কের টিস্যুকে পুনরুজ্জীবিত করে; দেহের হাড়কে সুগঠিত করে। এটি বার্ধক্যজনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে।

* লাইকোপিন প্রোস্টেট ক্যানসার, সার্ভিক্যাল ক্যানসার ও ওভারিয়ান ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়