নিজস্ব প্রতিবেদক:
কানাইঘাট উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকরা শিক্ষক রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে পড়েছেন। অধিকাংশ স্কুলে যথা সময়ে উপস্থিত না হয়ে পাঠদান ফাঁকি দিয়ে উপজেলা প্রশাসন চত্ত্বরে দল বেধে আড্ডা দেন উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিধা বিভক্ত ৩টি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। যার কারণে অভিভাবক ও সচেতন মহল শিক্ষকদের একাংশের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু শিক্ষকরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের দিকে নজর না দিয়ে শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। খোদ নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহসিনা বেগম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশাসন পাড়ায় ঘোরাফেরা না করে যথা সময়ে স্কুলে উপস্থিত হয়ে পাঠদানে মনোযোগী হওয়ার জন্য শিক্ষদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। শিক্ষকরা পাঠ দানের সময় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা চত্ত্বরে অযথা ঘোরাফেরা না করেন এজন্য নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা তাহসিনা বেগম উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিন মাহবুবকে বুধবার তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা তাহসিনা বেগম কানাইঘাটে যোগদান করার পর সাক্ষাত করে উপজেলা দ্বিধা বিভক্ত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ নিজেদের বৈধ সংগঠন দাবী করে এক সংগঠন অন্য সংগঠনের বিরুদ্ধে নালিশ দেওয়ায় নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষকদের উপর নাকোশ বলে জানা গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষা অফিসারকে সাবধান করে বলেন, স্কুল চলাকালীন সময়ে যেন কোন শিক্ষককে অফিস পাড়ায় না দেখা যায়। একজন কোমলমতি শিক্ষার্থীর বেড়ে উঠার একমাত্র স্থান প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেজন্য স্কুল টাইমের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক যেন পাঠদান ফাঁকি দিয়ে অফিস পাড়ায় না আসে এ বিষয়ে চিঠি ইস্যু করে শিক্ষকদের সাবধান করতে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিন মাহবুব কানাইঘাট উপজেলাকে ৫টি ক্লাষ্টারে ভাগ করে চিঠি ইস্যু করেছেন। চিঠি ইস্যু থেকে জানা যায় ১নং লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপি ও ২নং লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির একটি অংশ প্রতি রবিবার, পৌরসভা ও ৪নং সাতবাঁক ইউপি প্রতি সোমবার, ৬নং সদর ইউপি ও ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপি প্রতি মঙ্গলবার, ৮নং ঝিংঙ্গাবাড়ি ও ৯নং রাজাগঞ্জ ইউপি প্রতি বুধবার, ৫নং বড়চতুল ও ২নং লক্ষীপ্রসাদ ইউপির অপর অংশ প্রতি বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৫ টার মধ্যে অফিসিয়েল কাজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছেড়ে নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। প্রসঙ্গত কানাইঘাট উপজেলায় সরকারী প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ সরকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি নামে ৩টি সংগঠন রয়েছে। এসব শিক্ষক সংগঠনের সাথে জড়িত শিক্ষকরা অধিকাংশ সময় স্কুল ফাঁকি দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও প্রশাসনপাড়ায় আড্ডা দিতে দেখা যায়। একটি সংগঠন অন্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে দূরত্ব রয়েছে। শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে গাইড ও নোট বই বাণিজ্য এবং প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নিয়ন্ত্রন, শিক্ষক বদলী ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে।
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়