Thursday, January 26

প্রেমের টানে ব্রাজিল থেকে হবিগঞ্জে তিন সন্তানের জননী!


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:সম্প্রতি প্রেমের টানে মার্কিন মুল্লুক থেকে বাংলাদেশে আসা এক তরুণীর খবর ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে। সেই রেশ কাটতে না কাটতে ফের ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এবার সুদূর ব্রাজিল থেকে চলে এসেছেন এক নারী। তবে দুটো ঘটনার পার্থক্য গড়ে দিয়েছে বয়স। মার্কিন থেকে আসা তরুণী হলেও ব্রাজিল থেকে আসা নারী মাঝবয়সী। ৪৭ বছর বয়সী ওই নারীর নাম সেওমা বিজেরা। সব বাধা পেরিয়ে পা রেখেছেন হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হালিতলা বারৈইকান্দি গ্রামে। গ্রামের আসকান উদ্দিনের বড় ছেলে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের মার্স্টাস শেষ বর্ষের ছাত্র মো. আব্দুর রকিবের সাথে। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এ ধরনের ঘটনা ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। খবর পেয়ে আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে অসংখ্য লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন আব্দুর রকিবের বাড়িতে। ইতিমধ্যেই আব্দুর রকিব ও সেওমা বিয়েও সেরে ফেলেছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে বেশ আন্তরিকতার সাথেই সেওমা কথা বলেন সম্পর্ক নিয়ে। জানান শুরুর ঘটনা, প্রায় ৯ মাস পূর্বে রকিব ফেইসবুকে তার আইডিতে লাইক দেন। প্রতিউত্তরে তিনিও তাকে লাইক দেন। এভাবেই শুরু। এভাবে চলতে চলতে এক পর্যায়ে তাদের টেক্সট বিনিময় থেকে শুরু প্রায় প্রতিদিনই তাদের কথা হতো। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসের ১ম দিকে সেওমা ব্রাজিলে বাংলাদেশের দূতাবাসে গিয়ে ভিসা সংগ্রহ করেন। ৯ মাস পর অবশেষে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। বিমান বন্দরে তাকে স্বাগত জানান মো. আব্দুর রকিব। চলে আসেন নবীগঞ্জে। রকিবের পরিবারের আপত্তি না থাকায় গত ৩ জানুয়ারি হবিগঞ্জের রোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। পরে ইসলাম ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী ২ লাখ টাকার কাবিন রেজিস্ট্রি করেও বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। আব্দুর রকিব বলেন, ‘ফেসবুকের সূত্রেই আমাদের পরিচয় ও প্রেম। শেষ পর্যন্ত এখন আমরা সুখে-শান্তিতে সংসার করছি। সেওমা বাংলা বলতে শিখছে। রকিবের পরিবারের সকল সদস্য এখন খুবই খুশি।’ রকিব আরো জানান, সেওমা ব্রাজিলে পেশায় একজন শিক্ষক। বর্তমানে সেওমা আইন বিষয়ে লেখাপড়া করছেন। সেওমা কোনো কিছু রাখঢাক না করেই জানালেন, এর আগেও তার বিয়ে হয়েছে। ওই সংসারে ৩ সন্তানও রয়েছে। এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলের নাম ইদুওয়ারদু এবং মেয়ে দেবুরা ও ব্রুনা। তবে আগের স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে অনেক আগেই। ২৬ বছর বয়সী রকিবের কাছে প্রশ্ন ছিল- ৪৭ বয়সের ব্রাজিলিয়ান নারীর সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছেন, কোন উদ্দেশ্য আছে কি না। উত্তরে রকিব জানান, সত্য ভালবাসায় বয়স কোন ব্যাপারই না। আগামী ২৮ জানুয়ারি সেওমা নবীগঞ্জ থেকে তার নিজ বাড়ি ব্রাজিলের উদ্দেশ্যে ফেরত চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে তার স্বামীকে ব্রাজিল নেয়ার জন্য কাগজপত্র তৈরি করে রকিবের কাছে পাঠাবেন। নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রেমের টানে সুদূর ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশের ছোট্ট একটি গ্রামে এক মহিলার এভাবে ছুটে আসা সত্যিই বিরল একটি ঘটনা।’

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়