Sunday, January 22

আইএসের হাত থেকে বাঁচতে বোরখা পরে ঘুরতেন পুলিশ কর্মকর্তারা

আইএসের হাত থেকে বাঁচতে বোরখা পরে ঘুরতেন পুলিশ কর্মকর্তারা
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ইরাকের মসুলের কাছে একটি শহর যখন ইসলামিক স্টেট জঙ্গিগোষ্ঠী দখল করে নিল এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা করা শুরু করলো তখন সেখানকার কিছু মানুষ বেঁচে থাকার জন্য অস্বাভাবিক কিছু পদ্ধতি বেছে নিয়েছিলেন। আর সেই পদ্ধতিতে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বোরখা পরে নিয়েছিলেন।

আর এই বোরখা পরার কারণে বেঁচে গিয়েছিলেন যেমনটা পুলিশ কর্মকর্তা আবু আলাউয়ি। প্রায় আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে এই বোরখার সাহায্যে নিজেদের লুকাতে পেরেছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তারা। আইএস জঙ্গিরা যখন একের পর এক পুলিশদের হত্যা করছিল সেই সময় এই বোরখাই কিছু পুলিশ কর্মকর্তাদের বাঁচিয়ে ছিল।

২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে হাম্মাম-আল-আলিল শহরে আইএস জঙ্গিগোষ্ঠী প্রবেশ করে। যেহেতু সেসময় নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে ইরাকজুড়ে অভিযান চালাচ্ছিল।

আইএস, তাই তাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা। তারা শহর দখল করেই দ্রুত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে। তবে তারা শর্তও দিচ্ছিল যদি বাগদাদ সরকারকে ত্যাগ করে ইসলামিক স্টেটের নিয়মবিধি অনুযায়ী তাদের অধীনে থাকে তাহলে তাদের হত্যা করা হবে না।

এই অবস্থায় নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আবু আলাউয়ি। প্রথমে তিনি তার বাড়িতেই ছিলেন, বাগানে গর্ত খুঁড়ে সেখানে আত্মগোপন করে ছিলেন। কিন্তু বারবার আইএস সদস্যরা পুলিশ বা সেনা কর্মকর্তাদের খোঁজ করতে থাকলে আবু আলাউয়ি বেঁচে থাকার অন্য পন্থা বের করলেন। আলাউয়ি সিদ্ধান্ত নিলেন ‘বোরখা’ পরার, তার মনে হয়েছিল এটাই হতে পারে একমাত্র সমাধান। তার এক বন্ধু তাকে পরামর্শ দিয়েছিল। নিকাব পরিহিত একজন মহিলা সেজে ঘোরাঘুরি করতেন আবু আলাউয়ি, অনেকটা নিরাপদেই থাকতেন তিনি।

বেঁচে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘এটার মধ্যে একধরনের উত্তেজনা ছিল, রোমাঞ্চও কাজ করত। তবে জঙ্গিদের একদম কাছাকাছি যাওয়ার বিষয়টা মোটেও আনন্দদায়ক নয়। তার ভয়ও লাগতো, কারণ পুলিশের যে বন্ধুরা মহিলা সেজে ঘুরছিলেন তাদের অনেককে দেখে সন্দেহ হয়েছিল জঙ্গিদের। মহিলা সেজেও শেষ পর্যন্ত নিজেদের বাঁচাতে পারেননি কয়েকজন, তাদের গ্রেফতার করেছিল আইএস।

আবু আলাউয়ি জানিয়েছেন, “জঙ্গিরা আমার একদম সামনে দিয়ে যাচ্ছে এমন ঘটনা অনেকবার ঘটেছে। এবং আমি তখন অনেক ভয়ও পেয়েছি। সবসময় মনে হয়েছে এই বুঝি আমাকে ধরে তল্লাশি করা হবে। এমনকি, ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সেটা না হওয়াতে আজও জীবিত রয়েছেন তিনি।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়