কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশে তিনটি ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধ করা নিয়ে অনেক দিন ধরেই চলছে
নানা বিতর্ক। এই তিনটি চ্যানেল হল-স্টার প্লাস, স্টার জলসা ও জি বাংলা। এসব
চ্যানেলে প্রচারিত সিরিয়ালে আসক্ত হয়ে বেশ কয়েকজন প্রাণ হারানোর পর
চ্যানেলগুলো বন্ধ করতে অনেকে আন্দোলন শুরু করেন।
কিন্তু গতকাল রোববার ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধ করতে যে রিট আবেদন করা হয়েছিল সেটি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে বাংলাদেশে এ তিনটি ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রদর্শনে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন যাবত বিনোদন জগতের অনেকেই ভারতীয় কিছু চ্যানেল বন্ধ করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
কিন্তু নানা সময় জরিপে এ কথাও সামনে এসেছে যে ভারতীয় টেলিভিশনের চ্যানেলগুলোর বিশাল সংখ্যায় দর্শক রয়েছে বাংলাদেশে।
কিন্তু কেন বাংলাদেশি চ্যানেলগুলো ভারতের এই বাংলা চ্যানেলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছে না?
বছর খানেক আগে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের এক জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে নারীদের ৯০ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন, কিন্তু এদের ৬০ শতাংশই দেখেন স্টার জলসা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক শফিউল আলম ভুঁইয়া মনে করেন এর পেছনে একাধিক কারণ আছে।
তিনি বলছেন, "বাংলাদেশে চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপনের আধিক্য একটি কারণ। পরিমাণের দিক থেকে ভারতের চ্যানেলে বিজ্ঞাপন কম। আরেকটি কারণ হচ্ছে অবশ্যই অনুষ্ঠানের মান।"
"কোনও কোনও ক্ষেত্রে ভারতীয় অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, সেগুলোর বিষয়বস্তু, বিশেষ করে অভিনয়ের মান উন্নততর। আমাদের অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীর অভিনয় খুব ভাল হলেও আমাদের চ্যানেলের সংখ্যাও অনেক - তাই আমাদের কোয়ালিটির একটা অভাব পরিলক্ষিত হয়", বলছিলেন মি ভুঁইঞা।
যেখানে মান নিয়ে প্রশ্ন সেখানে জনপ্রিয়তার লড়াইয়ে কীভাবে লড়ছে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো? জবাবে মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আরিফুর রহমান কিছুটা হতাশারই চিত্র দিলেন। তিনি বলছেন, "এই দেশে যে সব নির্মাতা বা লেখক আছেন, যারা এই শিল্পের সাথে জড়িত তারা অনেক মেধাবী। কিন্তু সেই মেধা প্রকাশ করার জন্য যে পরিমাণ সুবিধা দরকার, যে পরিমাণ অর্থ দরকার বা কাঠামোগত সুবিধা দরকার সেই বিষয়গুলো আসলে আমরা করে উঠতে পারি না। আমাদের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে পুরো সিস্টেমটাতে আমরা গভীর মনোযোগ দিচ্ছি না।"
এই সীমাবদ্ধতার জায়গায় কীভাবে আটকে যাচ্ছেন নির্মাতারা, তার একটি ধারণা দিয়ে তিনি বলছিলেন, "আপনি যদি ভারতীয় কোন প্রোডাকশন দেখেন সেটার মধ্যে পরিচ্ছন্ন একটা বিষয় পাবেন। ধরেন ভারতে যেকোনো একটা প্রোডাকশনের জন্য একজন আর্ট ডিরেক্টর থাকে। একজন নির্মাতা শুধু প্রোডাকশন নিয়েই ভাবতে পারেন।"
"কিন্তু বাংলাদেশে একজন নির্মাতাকে প্রোডাকশনের সব কাজ করতে হয়। এমনকি আর্টিস্ট কল করা, গাড়ি ঠিক করা, আর্টিস্ট খাবার খেলো কিনা তাও দেখতে হয়। এতে তার মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে।"
ভারতে তো বাংলাদেশি চ্যানেল দেখা যায় না- এই পাল্টা যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে সম্প্রতি অনেক নির্মাতা-পরিচালকই দাবি করে আসছেন বাংলাদেশেরও উচিত ভারতীয় চ্যানেলগুলোর প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া।
এই আন্দোলনকারীদের একজন পরিচালক গাজি রাকায়েত মনে করেন "বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোকে গুছিয়ে ওঠার জন্য একটু সময় দিতে হবে। আর সেজন্য পুরোপুরি না হলেও কিছু সময়ের জন্য হলেও ভারতীয় চ্যানেলগুলো বন্ধ রাখা দরকার। আর সেই কাজে সরকারই একমাত্র সহায়তা করতে পারে।"
মানের বিষয়ে প্রশ্ন একেবারেই মানতে রাজি নন তিনি। বরং তিনি মনে করেন, "যদি আমাদের চ্যানেলগুলো ওদের ওখানে দেখানো যেত, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে, তাহলে আমার ধারণা যে পরিমাণ দর্শক পশ্চিমবঙ্গের চ্যানেল দেখছে সেই পরিমাণ দর্শক ওখানে বাংলাদেশের চ্যানেলও দেখতো।"
কিন্তু তারপরও এটা ঘটনা, বাংলাদেশে টিভি খুললেই ভারতীয় চ্যানেল। তার কারণ কি খুব জমকালো সাজপোশাক নাকি ওখানে অভিনেতা অভিনেত্রীরা বাংলাদেশের তুলনায় দেখতে বেশি গ্ল্যামারাস?
রাকায়েত বলছেন, "এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। আমাদের সংস্কৃতি তো পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটু আলাদা। আমরা উদার না। অথচ ওরা কিন্তু পরকীয়া সম্পর্কের মতো অনেক খোলামেলা জিনিস দেখাতে পছন্দ করে। কাজেই দর্শক যা বাংলাদেশে দেখতে পারে না সেগুলো অন্য জায়গায় দেখার জন্য একটা ঝোঁক থাকতে পারে।"
সেই ঝোঁক যে বিষয়গুলোতে, তাতে ক্ষতিকর কিছু আছে কিনা সেটি পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশ কেবল টেলিভিশন পরিচালনা আইন ২০০৬ অনুযায়ী একটি সেল গঠন করে সেটি পর্যবেক্ষণের ব্যাপারে এদিন মতামত দিয়েছে আদালত। সূত্র: বিবিসি
কিন্তু গতকাল রোববার ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধ করতে যে রিট আবেদন করা হয়েছিল সেটি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে বাংলাদেশে এ তিনটি ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রদর্শনে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন যাবত বিনোদন জগতের অনেকেই ভারতীয় কিছু চ্যানেল বন্ধ করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
কিন্তু নানা সময় জরিপে এ কথাও সামনে এসেছে যে ভারতীয় টেলিভিশনের চ্যানেলগুলোর বিশাল সংখ্যায় দর্শক রয়েছে বাংলাদেশে।
কিন্তু কেন বাংলাদেশি চ্যানেলগুলো ভারতের এই বাংলা চ্যানেলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছে না?
বছর খানেক আগে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের এক জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে নারীদের ৯০ শতাংশ টেলিভিশন দেখেন, কিন্তু এদের ৬০ শতাংশই দেখেন স্টার জলসা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক শফিউল আলম ভুঁইয়া মনে করেন এর পেছনে একাধিক কারণ আছে।
তিনি বলছেন, "বাংলাদেশে চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপনের আধিক্য একটি কারণ। পরিমাণের দিক থেকে ভারতের চ্যানেলে বিজ্ঞাপন কম। আরেকটি কারণ হচ্ছে অবশ্যই অনুষ্ঠানের মান।"
"কোনও কোনও ক্ষেত্রে ভারতীয় অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, সেগুলোর বিষয়বস্তু, বিশেষ করে অভিনয়ের মান উন্নততর। আমাদের অনেক অভিনেতা অভিনেত্রীর অভিনয় খুব ভাল হলেও আমাদের চ্যানেলের সংখ্যাও অনেক - তাই আমাদের কোয়ালিটির একটা অভাব পরিলক্ষিত হয়", বলছিলেন মি ভুঁইঞা।
যেখানে মান নিয়ে প্রশ্ন সেখানে জনপ্রিয়তার লড়াইয়ে কীভাবে লড়ছে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো? জবাবে মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আরিফুর রহমান কিছুটা হতাশারই চিত্র দিলেন। তিনি বলছেন, "এই দেশে যে সব নির্মাতা বা লেখক আছেন, যারা এই শিল্পের সাথে জড়িত তারা অনেক মেধাবী। কিন্তু সেই মেধা প্রকাশ করার জন্য যে পরিমাণ সুবিধা দরকার, যে পরিমাণ অর্থ দরকার বা কাঠামোগত সুবিধা দরকার সেই বিষয়গুলো আসলে আমরা করে উঠতে পারি না। আমাদের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে পুরো সিস্টেমটাতে আমরা গভীর মনোযোগ দিচ্ছি না।"
এই সীমাবদ্ধতার জায়গায় কীভাবে আটকে যাচ্ছেন নির্মাতারা, তার একটি ধারণা দিয়ে তিনি বলছিলেন, "আপনি যদি ভারতীয় কোন প্রোডাকশন দেখেন সেটার মধ্যে পরিচ্ছন্ন একটা বিষয় পাবেন। ধরেন ভারতে যেকোনো একটা প্রোডাকশনের জন্য একজন আর্ট ডিরেক্টর থাকে। একজন নির্মাতা শুধু প্রোডাকশন নিয়েই ভাবতে পারেন।"
"কিন্তু বাংলাদেশে একজন নির্মাতাকে প্রোডাকশনের সব কাজ করতে হয়। এমনকি আর্টিস্ট কল করা, গাড়ি ঠিক করা, আর্টিস্ট খাবার খেলো কিনা তাও দেখতে হয়। এতে তার মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে।"
ভারতে তো বাংলাদেশি চ্যানেল দেখা যায় না- এই পাল্টা যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে সম্প্রতি অনেক নির্মাতা-পরিচালকই দাবি করে আসছেন বাংলাদেশেরও উচিত ভারতীয় চ্যানেলগুলোর প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া।
এই আন্দোলনকারীদের একজন পরিচালক গাজি রাকায়েত মনে করেন "বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোকে গুছিয়ে ওঠার জন্য একটু সময় দিতে হবে। আর সেজন্য পুরোপুরি না হলেও কিছু সময়ের জন্য হলেও ভারতীয় চ্যানেলগুলো বন্ধ রাখা দরকার। আর সেই কাজে সরকারই একমাত্র সহায়তা করতে পারে।"
মানের বিষয়ে প্রশ্ন একেবারেই মানতে রাজি নন তিনি। বরং তিনি মনে করেন, "যদি আমাদের চ্যানেলগুলো ওদের ওখানে দেখানো যেত, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে, তাহলে আমার ধারণা যে পরিমাণ দর্শক পশ্চিমবঙ্গের চ্যানেল দেখছে সেই পরিমাণ দর্শক ওখানে বাংলাদেশের চ্যানেলও দেখতো।"
কিন্তু তারপরও এটা ঘটনা, বাংলাদেশে টিভি খুললেই ভারতীয় চ্যানেল। তার কারণ কি খুব জমকালো সাজপোশাক নাকি ওখানে অভিনেতা অভিনেত্রীরা বাংলাদেশের তুলনায় দেখতে বেশি গ্ল্যামারাস?
রাকায়েত বলছেন, "এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। আমাদের সংস্কৃতি তো পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটু আলাদা। আমরা উদার না। অথচ ওরা কিন্তু পরকীয়া সম্পর্কের মতো অনেক খোলামেলা জিনিস দেখাতে পছন্দ করে। কাজেই দর্শক যা বাংলাদেশে দেখতে পারে না সেগুলো অন্য জায়গায় দেখার জন্য একটা ঝোঁক থাকতে পারে।"
সেই ঝোঁক যে বিষয়গুলোতে, তাতে ক্ষতিকর কিছু আছে কিনা সেটি পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশ কেবল টেলিভিশন পরিচালনা আইন ২০০৬ অনুযায়ী একটি সেল গঠন করে সেটি পর্যবেক্ষণের ব্যাপারে এদিন মতামত দিয়েছে আদালত। সূত্র: বিবিসি
খবর বিভাগঃ
বিনোদন
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়