Saturday, January 28

'প্রধানমন্ত্রীকে ভ্যানে চড়িয়ে পেয়েছি ৫০০ টাকা'

'প্রধানমন্ত্রীকে ভ্যানে চড়িয়ে পেয়েছি ৫০০ টাকা'

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে যেন হারিয়ে যান শৈশবের মধুর স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোতে। একটি সাধারণ রিকশাভ্যানে করে সরকারপ্রধান ঘুরে বেড়ালেন কুয়াশামাখা গ্রামের পথে। 

এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে নিজের রিকশাভ্যানে চড়িয়ে দারুণ খুশি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ইমাম শেখ (১৭)। আপ্লুতও সে। কখনই ভাবতে পারেনি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তার রিকশাভ্যানে চড়ে বসবেন। সে কথাও বলেছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। ভ্যানে চড়ার জন্য টাকা নিতে না চাইলেও প্রধানমন্ত্রী জোর করেই ৫০০ টাকা দিয়েছেন ইমামকে।

বঙ্গবন্ধুকন্যার এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করা হয়। ছবিতে দেখা যায়, ভ্যানে প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছোট বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, তার বিদেশি স্ত্রী ও দুই সন্তানকে।

ভ্যানচালক ইমাম শেখ নিজের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে জানান, আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রায় প্রতিদিনের মতোই সে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি কমপ্লেক্সের এক নম্বর গেটে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় নিরাপত্তারক্ষীরা একটি ভ্যানের খোঁজ করেন। তারা সেখান থেকে একজন ভ্যানচালককে নিয়ে যান। কিন্তু পছন্দ না হওয়ায় তিনি ফিরে আসেন।

ইমাম বলেন, ‘পরে নিরাপত্তারক্ষীরা আমার ভ্যানটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, এটা দিয়ে হবে। তখন সবাই আমার রিকশাভ্যানে চড়েন।’

যাওয়ার সময় পথে প্রধানমন্ত্রী ইমামকে জিজ্ঞাস করেন, ‘তুমি কি ভ্যান চালাও?’ ইমাম বলে, ‘জ্বি আপা, আমি ভ্যান চালাই।’  
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তুমি তো আমার বিদ্যুতের ক্ষতি করছো।’

‘আমার ভ্যান তো ব্যাটারি দিয়ে চলে। তাই আপা এই কথা বলছে। শুনে আমি প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে হেসে দেই। তখন প্রধানমন্ত্রীও হেসে দেন। আর কোনো কথা হয়নি’, বলে ইমাম।    

গেট থেকে টুঙ্গিপাড়ায় নতুন বাসভবন পর্যন্ত ভ্যানে করে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি নেমে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ৫০০ টাকা দেন ভ্যানচালক ইমামকে দেওয়ার জন্য। ইমাম নিরাপত্তারক্ষীরে কাছ থেকে টাকা নিতে চায়নি। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টাকা জোর করেই ইমাম শেখের হাতে গুঁজে দেন। টাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসে ইমাম। সে পাটগাতি গ্রামের সরকারপাড়ার শেখ আবদুল লতিফের ছেলে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। দেড় বছর ধরে ভ্যান চালায় ইমাম।   

ছবিটির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বাসসকে বলেন, শেখ হাসিনা আজ বেলা ১১টার দিকে রিকশাভ্যানে চড়ে প্রায় ১৫ মিনিট গ্রামটি পরিদর্শন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিসৌধ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত যান।

‘রিকশাভ্যানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, তাঁর পত্নী পেপি সিদ্দিক, তাঁদের মেয়ে লিলা তুলি সিদ্দিক ও ছেলে কায়াস মুজিব সিদ্দিক। কায়াস মুজিবকে কোলে নিয়ে শেখ হাসিনা গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান থামিয়ে স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলেন ও তাদের কুশলাদির খোঁজখবর নেন। মানুষকে আরো অবাক করে দিয়ে তিনি ফেরার পথে এই এক কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে আসেন।’

প্রেস সচিব আরো জানান, প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে স্থানীয় মানুষ বিস্ময় ও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রাণ খুলে তার কাছে সুখ-দুঃখের কথা বলেন। এ সময় তারা তাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরলে শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিকভাবে এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়