কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: সাত
খুন মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেনের ‘জলসাঘর’ এখনও অক্ষত। জলাশয়ের
ওপর বাঁশ আর টিন দিয়ে তৈরি জলসাঘরটিতে ‘সুরের মূর্চ্ছনা’ নেই অবশ্য। বরং
এখন বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। পাশেই বালুর মাঠের এক কোণে অযত্নে পড়ে আছে
‘এবিএস’ পরিবহনের অনেকগুলো বাস। দেখভালের কেউ নেই।
অথচ বছর তিনেক আগেও এই মাঠ ছিল জমজমাট। জলাশয়ের ওপরে নির্মিত বাড়িটি সারাক্ষণ পাহারা দিতো নূর হোসেনের লোকজন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম দিকে শিমরাইল মোড় থেকে একটি সড়ক উত্তর দিকে ডেমরার দিকে গেছে। ওই রাস্তা ঘরে কয়েক মিনিট এগোলে পূর্ব দিকে চোখে পড়ে খেজুর গাছ দিয়ে ঘেরা নূর হোসেনের বাড়ি। বাড়িটির শ’খানেক গজ দূরে একটি বিশাল জলাশয়ে এক সময়ে মাছ চাষ করা হতো। ওই জলাশয়ের ওপরে একটা বেশ বড় ঘরকে স্থানীয়রা বলতো ‘জলসাঘর’।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘরটি এখনও অক্ষত। টিনের নীল রঙয়ের ঔজ্জ্বল্য তেমন কমেনি। ঘরের ছবি তুলতে গেলে এগিয়ে আসেন এক যুবক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘জলসাঘরে যাওয়ার জন্য কয়েকটি নৌকা রাখা থাকতো। সন্ধ্যার পরেই নৌকায় চড়ে নূর হোসেন ও তার সহযোগীরা যেতো ঘরটিতে। রাতভর চলতো উল্লাস আর আমোদ-প্রমোদ। মদ-জুয়ার আসরও বসতো সেখানে। কোনও বিশেষ অতিথির সঙ্গে এ ঘরে বসেই কথা বলতো নূর হোসেন।’
৩০/৩৫ বছর বয়সী যুবকটি আরও বলেন, ‘যখন ঘরটিতে আসর বসতো, তখন আমরা এলাকার অনেকে প্রায়ই দিনের বেলায় পুকুরে গোসল করার নামে কাছে যেতাম। উপরে না উঠলেও ঘরের চারদিক থেকে, পানির নিচ থেকে দেশি-বিদেশি অনেক বোতল কুড়াতাম। পরে সেগুলো বিক্রি করে দিতাম। বোতলগুলো অনেক দামী, বোধহয় মদ কিংবা এ জাতীয় কিছু থাকতো।’
নূর হোসেনের মালিকানাধীন বাসগুলোর বেহাল অবস্থা
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাত খুনের পর পালিয়ে যায় নূর হোসেন। এরপর ঘরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ঘরে থাকা আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। সাংবাদিক আর প্রশাসনের লোকজন নিয়মিত আসতেন অবশ্য। নূর হোসেনের সহযোগীরা সরে পড়ার পর ধীরে-ধীরে স্থানীয় মানুষজন আসতে শুরু করে।
ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলার সময়ে এগিয়ে আসেন আরো কয়েকজন। তাদের মধ্যে একজনের নাম সালাউদ্দিন। সিদ্ধিরগঞ্জের আটি এলাকায় থাকলেও শিমরাইল টেকপাড়ায় নূর হোসেনের বাড়ির পাশেই একটি টঙ দোকানে সিগারেট আর পান বিক্রি করেন তিনি।
সালাউদ্দিন জানান, যখন জলসাঘরটি ছিলো, তখন তাদের বিক্রিও ভালো হতো। কারণ তখন প্রচুর গাড়ি আসতো এ সড়কে। দামী গাড়িতে থাকা লোকজন কিনতো সিগারেট। নানা ধরনের লোকজন দেখা করতে আসতো নূর হোসেনের সঙ্গে। জমজমাট থাকতো এলাকা। কিন্তু সাত খুনের পর পুরো এলাকা এখন থমথমে।
জলসাঘরের পাশেই দত্ত বাবুর মালিকানাধীন বিশাল বালুর মাঠের পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে দেখা গেছে, নূর হোসেনের এবিএস পরিবহনের অন্তত ২০-২২টি বাস খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। বেহাল বাসগুলোর কোনওটার সিট নেই, নেই অনেক যন্ত্রাংশও।
২০১৪ সালের শুরুর দিকে শিমরাইল রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ রুটে এবিএস পরিবহন নামে একটি বাস সার্ভিস চালু করেছিলো নূর হোসেন। রুটটি দখলের জন্য প্রভাব খাটিয়ে কমল ও নসিব পরিবহন নামে দুটি বাস সার্ভিসকে কোণঠাসাও করে সে। নূর হোসেনের ক্যাডার বাহিনী নসিব পরিবহনের ১ নম্বর কাউন্টার দখল করে নেয়। তখন বন্ধ হয়ে যায় নসিব পরিবহন। তবে সাত খুনের পর ২০১৪ সালের ২ মে থেকে এবিএস পরিবহনও বন্ধ। আর নসিব পরিবহন নাম পরিবর্তন করে হয়েছে বন্ধু পরিবহন। নূর হোসেনের অনুপস্থিতিতে এবিএস পরিবহনের বাসগুলো কেউ আর চালানোর উদ্যোগ নেয়নি। সাত খুনের পর এসব বাস থেকে উদ্ধার করা হয়েছিলো অস্ত্র ও মাদক। সে কারণে নূর হোসেনের সহযোগী ও পরিবারের লোকজন এসব বাসের দিকে আর নজর দেয়নি।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
অথচ বছর তিনেক আগেও এই মাঠ ছিল জমজমাট। জলাশয়ের ওপরে নির্মিত বাড়িটি সারাক্ষণ পাহারা দিতো নূর হোসেনের লোকজন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম দিকে শিমরাইল মোড় থেকে একটি সড়ক উত্তর দিকে ডেমরার দিকে গেছে। ওই রাস্তা ঘরে কয়েক মিনিট এগোলে পূর্ব দিকে চোখে পড়ে খেজুর গাছ দিয়ে ঘেরা নূর হোসেনের বাড়ি। বাড়িটির শ’খানেক গজ দূরে একটি বিশাল জলাশয়ে এক সময়ে মাছ চাষ করা হতো। ওই জলাশয়ের ওপরে একটা বেশ বড় ঘরকে স্থানীয়রা বলতো ‘জলসাঘর’।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘরটি এখনও অক্ষত। টিনের নীল রঙয়ের ঔজ্জ্বল্য তেমন কমেনি। ঘরের ছবি তুলতে গেলে এগিয়ে আসেন এক যুবক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘জলসাঘরে যাওয়ার জন্য কয়েকটি নৌকা রাখা থাকতো। সন্ধ্যার পরেই নৌকায় চড়ে নূর হোসেন ও তার সহযোগীরা যেতো ঘরটিতে। রাতভর চলতো উল্লাস আর আমোদ-প্রমোদ। মদ-জুয়ার আসরও বসতো সেখানে। কোনও বিশেষ অতিথির সঙ্গে এ ঘরে বসেই কথা বলতো নূর হোসেন।’
৩০/৩৫ বছর বয়সী যুবকটি আরও বলেন, ‘যখন ঘরটিতে আসর বসতো, তখন আমরা এলাকার অনেকে প্রায়ই দিনের বেলায় পুকুরে গোসল করার নামে কাছে যেতাম। উপরে না উঠলেও ঘরের চারদিক থেকে, পানির নিচ থেকে দেশি-বিদেশি অনেক বোতল কুড়াতাম। পরে সেগুলো বিক্রি করে দিতাম। বোতলগুলো অনেক দামী, বোধহয় মদ কিংবা এ জাতীয় কিছু থাকতো।’
নূর হোসেনের মালিকানাধীন বাসগুলোর বেহাল অবস্থা
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাত খুনের পর পালিয়ে যায় নূর হোসেন। এরপর ঘরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ঘরে থাকা আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। সাংবাদিক আর প্রশাসনের লোকজন নিয়মিত আসতেন অবশ্য। নূর হোসেনের সহযোগীরা সরে পড়ার পর ধীরে-ধীরে স্থানীয় মানুষজন আসতে শুরু করে।
ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলার সময়ে এগিয়ে আসেন আরো কয়েকজন। তাদের মধ্যে একজনের নাম সালাউদ্দিন। সিদ্ধিরগঞ্জের আটি এলাকায় থাকলেও শিমরাইল টেকপাড়ায় নূর হোসেনের বাড়ির পাশেই একটি টঙ দোকানে সিগারেট আর পান বিক্রি করেন তিনি।
সালাউদ্দিন জানান, যখন জলসাঘরটি ছিলো, তখন তাদের বিক্রিও ভালো হতো। কারণ তখন প্রচুর গাড়ি আসতো এ সড়কে। দামী গাড়িতে থাকা লোকজন কিনতো সিগারেট। নানা ধরনের লোকজন দেখা করতে আসতো নূর হোসেনের সঙ্গে। জমজমাট থাকতো এলাকা। কিন্তু সাত খুনের পর পুরো এলাকা এখন থমথমে।
জলসাঘরের পাশেই দত্ত বাবুর মালিকানাধীন বিশাল বালুর মাঠের পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে দেখা গেছে, নূর হোসেনের এবিএস পরিবহনের অন্তত ২০-২২টি বাস খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। বেহাল বাসগুলোর কোনওটার সিট নেই, নেই অনেক যন্ত্রাংশও।
২০১৪ সালের শুরুর দিকে শিমরাইল রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ রুটে এবিএস পরিবহন নামে একটি বাস সার্ভিস চালু করেছিলো নূর হোসেন। রুটটি দখলের জন্য প্রভাব খাটিয়ে কমল ও নসিব পরিবহন নামে দুটি বাস সার্ভিসকে কোণঠাসাও করে সে। নূর হোসেনের ক্যাডার বাহিনী নসিব পরিবহনের ১ নম্বর কাউন্টার দখল করে নেয়। তখন বন্ধ হয়ে যায় নসিব পরিবহন। তবে সাত খুনের পর ২০১৪ সালের ২ মে থেকে এবিএস পরিবহনও বন্ধ। আর নসিব পরিবহন নাম পরিবর্তন করে হয়েছে বন্ধু পরিবহন। নূর হোসেনের অনুপস্থিতিতে এবিএস পরিবহনের বাসগুলো কেউ আর চালানোর উদ্যোগ নেয়নি। সাত খুনের পর এসব বাস থেকে উদ্ধার করা হয়েছিলো অস্ত্র ও মাদক। সে কারণে নূর হোসেনের সহযোগী ও পরিবারের লোকজন এসব বাসের দিকে আর নজর দেয়নি।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়