কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
সম্প্রতিক সময়ে স্কুলপর্যায়ে সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থার মান এতটাই
উন্নতি করেছে যে, এখন তাদের অনুসরণ করছে পশ্চিমা দেশগুলোও। বিশ্বে মাধ্যমিক
এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক পরীক্ষায় সবচেয়ে
ভাল ফলাফল করছে সিঙ্গাপুরের শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে
এসেছে।
কিভাবে তারা এতটা সফলভাবে তাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে গড়ে তুললো? স্কুলটির বিজ্ঞানের শ্রেণীকক্ষটি দেখলে যতটা না স্কুলের ক্লাস মনে হবে, তার চেয়ে বেশি মনে হবে এটি বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণাগার। স্কুলকক্ষটি ঘুরল দেখা যাবে কিশোর-কিশোরীরা এখানে নানা ইলেক্ট্রনিক্স জিনিস বানাচ্ছেন, যার মধ্যে ইলেক্ট্রিক কিবোর্ড থেকে শুরু করে বাগানে পানি দেয়ার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা সবই রয়েছে।
এছাড়াও সন্তানদের শিক্ষার পেছনে সময় এবং অর্থ ব্যয়ে তারা যথেষ্ট আগ্রহী এবং এই কারণটিই সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে একটি বড় ভূমিকা রাখছে। যার ফলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তাদের দেশের অর্থনীতিও দিন দিন আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে।
সেখানে স্কুলগুলোর চেষ্টা হচ্ছে আরো বেশি ব্যবহারিক শিক্ষা দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। স্কুলের একটি কক্ষকে তারা নাম দিয়েছে প্রস্তুতকারকদের গবেষণাগার। শিশুরা এখানে যা তৈরি করবে, বানানো শেষে তারা চাইলে সেটি নিজেদের সাথে বাসায় নিয়ে যেতে পারবে।
রুপি টাম্পিলুন নামে একজন শিক্ষক এই ব্যবস্থার পেছনের চিন্তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলছিলেন "আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান যতটা সম্ভব অকৃত্রিম রাখতে চাই। বাস্তব পৃথিবীর সাথে পাঠদানের যোগসূত্র থাকতে হবে।"
"শিক্ষার্থীরা যদি আসল এবং বাস্তব জিনিস নিয়ে কাজ করে তখন তারা তাদের প্রতিদিনকার জীবনের সাথে সেটা মেলাতে পারবে। এটা শুধু বিজ্ঞানে নয়, সবক্ষেত্রেই তাদের শেখার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে"।
সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা বরাবরই র্যাঙ্কিংয়ে খুব ভালো করে এসেছে। এক্ষেত্রে দেশটির একটি বড় সুবিধা হলো, দেশটি খুবই ছোট এবং এখানকার সকল শিক্ষক জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
সিঙ্গাপুরে জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট বেশ প্রভাবশালী। সংস্থাটির পরিচালক, অধ্যাপক টান উন সাং বলছিলেন, তারা শুধুমাত্র সেরা শিক্ষার্থীদেরই নিয়ে থাকেন। কারণ, ক্লাসরুমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের একটি মজবুত ভিত গড়ে দেয়া।
"কোন শিশুকে যদি সুশিক্ষিত করতে হয়, তবে তাকে প্রথমেই ভাষার মৌলিক বিষয়গুলো শেখাতে হবে। সে বিভিন্ন বিষয় যাতে বুঝতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য তাকে সেই বিষয়ের ব্যাকরণ শেখাতে হবে। এমনভাবে শেখাতে হবে যেন সে সেই ভাষাটি পড়তে পারে এবং বুঝতে পারে"।
ক্লাসরুমে ১০ বছর বয়সী এক শিশু তার কাজ ব্যাখ্যা করছিলো। এটি সিঙ্গাপুর স্টাইলে অংকের ক্লাস। প্রত্যেকটি ধাপ সম্পূর্ণ আত্মস্থ করার পরই ক্লাসের সবাই পরবর্তী পাঠে যেতে পারবে। ক্লাস শেষে কিছু শিক্ষার্থী সংবাদদাতাকে তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থা বোঝানোর জন্য থেকে গেল। মাত্র ১০ বছর বয়সেই তারা খুব সাবলীলভাবে ইংরেজী বলতে পারে।
একটি শিশু বলছিল যে, কোন অংক করার সময় সেটা কিভাবে করতে হবে, কেন করতে হবে এবং আসল সমস্যার সাথে এর যোগসূত্র সবকিছু ভাবতে হবে।
আরেকটি শিশু বলছিল, কোনকিছু কেনাকাটা করতে গেলে কত টাকা খরচ করতে হবে সেটি বুদ্ধি করে ব্যবহার করতে হবে। তাদের কথায় স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল, তারা অংক করা বেশ মজার কাজ বলেই মনে করে।
অংক নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উৎসাহ এবং তার প্রতি আগ্রহ সেটি খুবই প্রশংসনীয়। স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোও এখন এই পদ্ধতি অনুসরণ করছে। সিঙ্গাপুর যে শিক্ষার ওপর দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করছে, বিশ্বব্যাপী তা ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে।
শিক্ষাবিষয়ক গবেষণা সংস্থা হেড এডুকেশনের পরিচালক অধ্যাপক সারাভানন গোপীনাথন বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে কোন ব্যবস্থাগুলো কাজ করে তার অনেক উদাহরণ আছে এবং তারাও একসময় পশ্চিমা দেশগুলো থেকেই অনেক ধারণা নিয়েছেন। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়াও সিঙ্গাপুরের অভিভাবকরাও সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে খুবই সতর্ক।
"সিঙ্গাপুর যদি শিক্ষাব্যবস্থার একটি শক্তিশালী ভিত্তি দাঁড় করাতে না পারতো তাহলে আজ আমরা এই অবস্থায় আসতে পারতাম না। কোন কিছু যদি কাজ না করে তাহলে আমরা সেটাতে কিছু পরিবর্তন আনার চিন্তা করি। প্রতি ৫ বছর বা ১০ বছর পর আমরা বলি না যে, আমাদের পুরনো নীতি ভুল ছিল এবং এখন পুরো ব্যবস্থায় বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে হবে"। সূত্র: বিবিসি।
কিভাবে তারা এতটা সফলভাবে তাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে গড়ে তুললো? স্কুলটির বিজ্ঞানের শ্রেণীকক্ষটি দেখলে যতটা না স্কুলের ক্লাস মনে হবে, তার চেয়ে বেশি মনে হবে এটি বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণাগার। স্কুলকক্ষটি ঘুরল দেখা যাবে কিশোর-কিশোরীরা এখানে নানা ইলেক্ট্রনিক্স জিনিস বানাচ্ছেন, যার মধ্যে ইলেক্ট্রিক কিবোর্ড থেকে শুরু করে বাগানে পানি দেয়ার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা সবই রয়েছে।
এছাড়াও সন্তানদের শিক্ষার পেছনে সময় এবং অর্থ ব্যয়ে তারা যথেষ্ট আগ্রহী এবং এই কারণটিই সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে একটি বড় ভূমিকা রাখছে। যার ফলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তাদের দেশের অর্থনীতিও দিন দিন আরো সমৃদ্ধ হচ্ছে।
সেখানে স্কুলগুলোর চেষ্টা হচ্ছে আরো বেশি ব্যবহারিক শিক্ষা দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। স্কুলের একটি কক্ষকে তারা নাম দিয়েছে প্রস্তুতকারকদের গবেষণাগার। শিশুরা এখানে যা তৈরি করবে, বানানো শেষে তারা চাইলে সেটি নিজেদের সাথে বাসায় নিয়ে যেতে পারবে।
রুপি টাম্পিলুন নামে একজন শিক্ষক এই ব্যবস্থার পেছনের চিন্তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলছিলেন "আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান যতটা সম্ভব অকৃত্রিম রাখতে চাই। বাস্তব পৃথিবীর সাথে পাঠদানের যোগসূত্র থাকতে হবে।"
"শিক্ষার্থীরা যদি আসল এবং বাস্তব জিনিস নিয়ে কাজ করে তখন তারা তাদের প্রতিদিনকার জীবনের সাথে সেটা মেলাতে পারবে। এটা শুধু বিজ্ঞানে নয়, সবক্ষেত্রেই তাদের শেখার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে"।
সিঙ্গাপুরের শিক্ষাব্যবস্থা বরাবরই র্যাঙ্কিংয়ে খুব ভালো করে এসেছে। এক্ষেত্রে দেশটির একটি বড় সুবিধা হলো, দেশটি খুবই ছোট এবং এখানকার সকল শিক্ষক জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
সিঙ্গাপুরে জাতীয় শিক্ষা ইনস্টিটিউট বেশ প্রভাবশালী। সংস্থাটির পরিচালক, অধ্যাপক টান উন সাং বলছিলেন, তারা শুধুমাত্র সেরা শিক্ষার্থীদেরই নিয়ে থাকেন। কারণ, ক্লাসরুমের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের একটি মজবুত ভিত গড়ে দেয়া।
"কোন শিশুকে যদি সুশিক্ষিত করতে হয়, তবে তাকে প্রথমেই ভাষার মৌলিক বিষয়গুলো শেখাতে হবে। সে বিভিন্ন বিষয় যাতে বুঝতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য তাকে সেই বিষয়ের ব্যাকরণ শেখাতে হবে। এমনভাবে শেখাতে হবে যেন সে সেই ভাষাটি পড়তে পারে এবং বুঝতে পারে"।
ক্লাসরুমে ১০ বছর বয়সী এক শিশু তার কাজ ব্যাখ্যা করছিলো। এটি সিঙ্গাপুর স্টাইলে অংকের ক্লাস। প্রত্যেকটি ধাপ সম্পূর্ণ আত্মস্থ করার পরই ক্লাসের সবাই পরবর্তী পাঠে যেতে পারবে। ক্লাস শেষে কিছু শিক্ষার্থী সংবাদদাতাকে তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থা বোঝানোর জন্য থেকে গেল। মাত্র ১০ বছর বয়সেই তারা খুব সাবলীলভাবে ইংরেজী বলতে পারে।
একটি শিশু বলছিল যে, কোন অংক করার সময় সেটা কিভাবে করতে হবে, কেন করতে হবে এবং আসল সমস্যার সাথে এর যোগসূত্র সবকিছু ভাবতে হবে।
আরেকটি শিশু বলছিল, কোনকিছু কেনাকাটা করতে গেলে কত টাকা খরচ করতে হবে সেটি বুদ্ধি করে ব্যবহার করতে হবে। তাদের কথায় স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল, তারা অংক করা বেশ মজার কাজ বলেই মনে করে।
অংক নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উৎসাহ এবং তার প্রতি আগ্রহ সেটি খুবই প্রশংসনীয়। স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোও এখন এই পদ্ধতি অনুসরণ করছে। সিঙ্গাপুর যে শিক্ষার ওপর দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করছে, বিশ্বব্যাপী তা ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে।
শিক্ষাবিষয়ক গবেষণা সংস্থা হেড এডুকেশনের পরিচালক অধ্যাপক সারাভানন গোপীনাথন বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে কোন ব্যবস্থাগুলো কাজ করে তার অনেক উদাহরণ আছে এবং তারাও একসময় পশ্চিমা দেশগুলো থেকেই অনেক ধারণা নিয়েছেন। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা ছাড়াও সিঙ্গাপুরের অভিভাবকরাও সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে খুবই সতর্ক।
"সিঙ্গাপুর যদি শিক্ষাব্যবস্থার একটি শক্তিশালী ভিত্তি দাঁড় করাতে না পারতো তাহলে আজ আমরা এই অবস্থায় আসতে পারতাম না। কোন কিছু যদি কাজ না করে তাহলে আমরা সেটাতে কিছু পরিবর্তন আনার চিন্তা করি। প্রতি ৫ বছর বা ১০ বছর পর আমরা বলি না যে, আমাদের পুরনো নীতি ভুল ছিল এবং এখন পুরো ব্যবস্থায় বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে হবে"। সূত্র: বিবিসি।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়