নিজস্ব প্রতিবেদক:
কানাইঘাট উপজেলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা হলেও জন্ম সনদ জালজালিয়াতির মাধ্যমে বাল্য বিবাহ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বাল্য বিবাহের পিছনে জনপ্রতিনিধিদের ইন্ধন রয়েছে। অভিভাবকরা তাদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন থেকে বয়স বাড়িয়ে জন্ম সনদ নিয়ে এসে মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছেন। গত শুক্রবার একটি বাল্য বিবাহের পিছনে একজন ইউপি সদস্যের ইন্ধনে রয়েছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, গত শুক্রবার কানাইঘাট সাতবাঁক ইউপির চরিপাড়া পূর্ব ঠাকুরেরমাটি গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের মেয়ে স্থানীয় চরিপাড়া স্কুল এন্ড কলেজের সদ্য লেখাপড়া বাদ স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুলতানা বেগম (১৪) এর সাথে একই ইউপির মুশাহিদ আলীর পুত্র দুবাই প্রবাসী কবির আহমদের সহিত ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করা হয়। উক্ত বাল্য বিবাহের খবর পেয়ে সাতবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ বাল্য বিবাহটি বন্ধ করে দেন এবং স্থানীয় কাজীকে নিকাহ রেজিষ্ট্রার না করতে নিষেধ দেন। স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ইউপি চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ বাল্য বিবাহটি বন্ধ করার নিষেধ দিলেও যথারীতি বিয়ের সব আয়োজন হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য সায়িকুর রহমান এ বাল্য বিবাহটি সম্পাদনের দায়িত্বে ছিলেন। যথারীতি কিশোরী সুলতানা বেগমকে শুক্রবার রাতেই তার স্বামীর বাড়ীতে পাঠানো হয়। ইউপি চেয়ারম্যান বাল্য বিবাহটি পন্ড করার নির্দেশ দিলেও বিয়েটির পিছনে ইউপি সদস্য সায়িকুর রহমানের হাত থাকায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার ইউনিয়নের সুলতানার বাল্য বিবাহের ঘটনাটি জেনে বিয়েটি পন্ড করে দেন তিনি। স্থানীয় কাজীকেও বিয়ে রেজিষ্ট্রারী না করার অনুরোধ করেন। তারপরও কিভাবে বাল্য বিবাহটি সম্পাদন হল এব্যাপারে এড়িয়ে যান তিনি। ইউপি সদস্য সায়িকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি একেক সময় একেক কথা বলেন। প্রথমে বলেন, মেয়েটির বয়স ১৭ বছর, তাই একটু বয়স কম বিয়ে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সকলের অনুমতি রয়েছে। আবার তিনি বলেন, বাল্য বিবাহটি তিনি পন্ড করেছেন। আবার বলেন, কোর্ট থেকে বিয়ের অনুমতি নিয়ে এসেছেন তাই বিয়ে হচ্ছে। বাল্য বিবাহের পিছনে তার ইন্ধনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক মোঃ জয়নাল আবেদীন সম্প্রতি কানাইঘাট উপজেলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত ঘোষণা করলেও এর প্রতিফলন হচ্ছে না। নানা ভাবে অভিভাবকরা তাদের অপ্রাপ্ত মেয়েদের জন্ম সনদ জালজালিয়াতির মাধ্যমে বিয়ে দিচ্ছেন।
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়