Wednesday, December 14

যুদ্ধ-শেষ-হলেও-আলেপ্পো-ছাড়ছে-না-বিদ্রোহীরা

যুদ্ধ শেষ হলেও আলেপ্পো ছাড়ছে না বিদ্রোহীরা

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: সিরিয়ার আলেপ্পোয় যুদ্ধের সম্পাতি ঘোষণা করা হয়েছে। আলেপ্পো ত্যাগ করার সুযোগ নিয়ে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিদ্রোহীগোষ্ঠী।

তবে আজ বুধবার আলেপ্পো ছাড়ার কথা থাকলেও এখনো বিদোহী বা সাধারণ নাগরিক কেউই শহরটি ত্যাগ করেনি বলে মানবধিকার কর্মীরা জানিয়েছে।

সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী, আজ বুধবার সকাল থেকে আলেপ্পো ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু কোন কারণ না জানিয়ে তারা দেরি করছে বলে আলজাজিরার খবরে বলা হয়। গত সপ্তাহে শহটিতে ভয়াবহ যুদ্ধ হওয়ার পর সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়।

জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভিতালি চুরকিন বলেছেন, আলেপ্পোয় সামরিক অভিযান শেষ হয়েছে। সেখানে বিদ্রোহীদের শেষ অবস্থানেও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সরকারি বাহিনী।

তিনি আরো জানিয়েছেন, বিদ্রোহীরা যাতে আলেপ্পো ছেড়ে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্রোহীরা এ চুক্তির বিষয়ে নিশ্চিত করেছে। কিন্তু তারা দাবি করেছে, বেসামরিক লোকদেরও আলেপ্পো ছেড়ে যেতে দিতে হবে।

সিরিয়ার একজন বিদ্রোহী কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানায়, সরকারপন্থী শিয়া মিলিশিয়ারা শহর ছাড়তে বাধা দিচ্ছে।

আলেপ্পোর একজন সাংবাদিক বিলম্বে কথা নিশ্চিত করে জানান, আজ সকাল তেকে রাস্তা পুরো ফাঁকা। বিদ্রহীরা এখনো শহর না ছাড়ায় লোকজন খুবই হতাশ। এমনি গতকার রাতে কেউই ঘুমাতে পারেনি।

তিনি আরো বলেন, সাধারণ নাগরিক খুবই ভয়ে আছে। বিদোহীরা যদি আলেপ্পো না ছাড়ে এই দুশ্চিন্তা সবার মনে।

রাশিয়ান সরকার জানায়, কমপক্ষে ৬ হাজার সাধারণ নাগরিককে পূর্ব আলেপ্পো থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে এবং ৩৬৬ বিদ্রহী তাদের অস্ত্র জমা দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পন করেছে।

সবশেষ খবর অনুযায়ী, শেষ কয়েক ঘণ্টায় আলেপ্পোয় কোনো বোমা বিস্ফোরণ বা যুদ্ধ হয়নি। পূর্ব আলেপ্পোর ছোট একটি এলাকায় কোনঠাঁসা অবস্থায় থেকে শেষ দিনগুলোতে যুদ্ধ চালিয়েছে বিদ্রোহীরা। রাশিয়ার বিমান হামলার সহযোগিতায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের অবস্থানগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।

আলেপ্পো ছেড়ে যাওয়ায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হলেও জাতিসংঘ উল্লেখ করেছে, সেখানে সরকারি বাহিনী ‘গুচ্ছহত্যা’ চালিয়েছে। জাতিসংঘ দাবি করেছে, তাদের কাছে তথ্য আছে, চারটি এলাকায় ৮২ জনকে হত্যা করেছে সরকারি বাহিনী। আরো অনেকে নিহত হয়ে থাকতে পারেন।

জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ার করেছে, আলেপ্পোয় যেকোনো নৃশংসতার জন্য সিরিয়া ও তাদের মিত্র রাশিয়া এবং ইরান দায়ী। রাশিয়া জানিয়েছে, অভিযোগ সত্য নয়।

চুরকিন আরো বলেন, ‘বেসামরিক লোকেরা চাইলে থাকতে পারে, যেতেও পারে, নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নিতে চলে যেতে পারে, মানবিক সাহায্যের সুযোগ নিতে পারে। বেসামরিক লোকদের ক্ষতি করবে না কেউ।’

২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর আলেপ্পো ছিল যুদ্ধমুখর। তবে গত চার বছর দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন এ শহর দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। অপেক্ষাকৃত পশ্চিম আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ ছিল প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত সেনাবাহিনীর হাতে আর পূর্ব আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ ছিল বিদ্রোহীগোষ্ঠীর হাতে। এ সময় দুই পক্ষের যুদ্ধে হাজার হাজার সামরিক-বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়