নিজস্ব প্রতিবেদক:
কানাইঘাট বড়চতুল ইউপির লখাইরগ্রামের দরিদ্র নিরীহ মহিলা রিনা বেগম (৪০) এর বসত ঘরটি গত গত বুধবার রাতে পুড়িয়ে দেওয়ায় ঘরের মালামাল আসবাবপত্র নগদ টাকা পয়সা ও গৃহপালিত হাঁস মোরগ আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে যাওয়ায় এলাকা জুড়ে জনমনে দীক্ষার ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। দরিদ্র রিনা বেগম তার পিত্রালয় থেকে মানুষের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে দিন যাপন করতেন। কাজ করে যে টাকা পেতেন সেই টাকা দিয়ে ঘরের মালামাল ও হাঁস মোরগ লালন পালন করতেন। তার স্বামী হারিছ উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ভারতের মুম্বাই শহরে রয়েছেন। স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন স্বামীর অবর্তমানে গত কয়েক মাস থেকে একই গ্রামের মৃত হাজী তবারক আলীর পুত্র নারী নির্যাতন সহ একাধিক মামলার আসামী দুই স্ত্রীর স্বামী শরিফ উদ্দিন (৪৫) রিনা বেগমকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রিনা বেগমের স্বামী রয়েছেন, তার বৃদ্ধ মা আগবুনি বেগম ও আত্মীয় স্বজনরা শরিফ উদ্দিন কে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলেন। কিন্তু তার পরও শরিফ উদ্দিন সব সময় হুমকি ধমকি দিয়ে রিনা বেগমকে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। রিনা বেগমের পরিবার স্থানীয় এলাকার মুরব্বীদের কাছে সম্প্রতি শরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থী হলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। রিনা বেগমের বৃদ্ধ মাকে রাস্তায় পেয়ে বলে তর মেয়েকে আমি প্রয়োজনে জোরপূর্বক ভাবে বিয়ে করব। বিয়ে না দিলে তোদের সর্বনাশ করে ফেলব। সম্প্রতি রিনা বেগমকে শরিফ উদ্দিন নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিলে তার ভয়ে রিনা বেগম তার বৃদ্ধ মায়ের বসত ঘরে বসবাস করত। গত ৩০ বুধবার রাত অনুমান ১২টার দিকে রিনা বেগমের বাঁশ বেতের বসত ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে রিনা বেগমের বসত ঘর সম্পূর্ণ ভাবে পুড়ে গিয়ে ঘরের সমস্ত মালামাল, নগদ ২০,০০০/- টাকা, ২৫টির অধিক হাঁস মোরগ জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যায়। সরেজমিনে সোমবার রিনা বেগমের বাড়ীতে গিয়ে তার সত্যতা পাওয়া গেছে। লখাইরগ্রামের অধিকাংশ মুরব্বী ও রিনা বেগম ও তার বাড়ীর লোকজন ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ শরিফ উদ্দিনের বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় সে রিনা বেগমের বসত ঘরে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। আগুন ধরানোর পর শরীফ উদ্দিনকে ধান ক্ষেতের মাঠ দিয়ে পালিয়ে যেতে দেখেন বাউরভাগ ৩য় খন্ড গ্রামের আবুল আহমদ, রুবেল আহমদ, লখাইরগ্রামের বোরহান উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন এবং রহিমা বেগম। রিনা বেগমের বসত ঘরে আগুন ধরিয়ে সম্পুর্ণভাবে ভষ্মিভূত করায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আফতাব উদ্দিন ও মহিলা ইউপি সদস্যা ছায়ারুন নেছা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিবারের লোকজনদের শান্তনা দেন। এলাকার মুরব্বীরা এ ঘটনার জন্য শরিফ উদ্দিনকে দায়ী করে তার কাছে গেলে সে বলে আমি কোন বিচার কাছার মানিনা, ঘর পুড়ালে তারা মামলা দিক। আমার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে, কেউ কিছু করতে পারেনি বলে সামাজিক সালিশ বিচার প্রত্যাখান করে সে। সু-বিচার না পেয়ে দরিদ্র রিনা বেগম গত বৃহস্পতিবার থানায় শরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তার বসত ঘর পুড়িয়ে দেওয়ায় বাদী হয়ে অভিযোগ দিলে থানার এস.আই পিযুষ কান্তি দেবনাথ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও অদ্যবধি পর্যন্ত রিনা বেগমের অভিযোগটি রেকর্ড করা হয়নি থানায়। যার কারনে রিনা বেগম বর্তমানে বসত ঘর হারিয়ে বৃদ্ধ মায়ের কাছে নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন। রিনা বেগমের অভিযোগ শরীফ উদ্দিনই তার ঘর পুড়িয়েছে, সাক্ষী প্রমাণ আছে সে আমাকে প্রায়ই উত্যক্ত করে বিয়ের প্রস্তাব দিত, তা প্রত্যাখ্যান করায় আমার সর্বনাশ করেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আফতাব উদ্দিন ও মহিলা ইউপি সদস্যা ছায়ারুন নেছার সাথে কথা হলে তারা বলেন, অসহায় রিনা বেগমের বসত ঘর পুড়িয়ে দেয়ার জঘণ্য ঘটনার সাথে শরিফ উদ্দিন জড়িত থাকতে পারে, রিনা বেগম পূর্বে আমাদের কাছে শরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তাকে উত্যক্ত ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ায় বিচারপ্রার্থী হয়েছিল। কিন্তু শরিফ উদ্দিন সামাজিক বিচার মানে নাই। শরিফ উদ্দিনের বাড়ীতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি, তার পরিবারের লোকজন এব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। স্থানীয় এলাকাবাসী বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়